বন্ধু-স্বজন-ডাক্তাররা তো বলেনই, এ বার বলবে সিগারেটের প্যাকেটও। ধূমপান যে ক্ষতিকর, তা বিধিবদ্ধ সতর্কীরণ হিসেবে লেখাই থাকে। ভারত-সহ কিছু দেশে তো, ক্যানসার আক্রান্ত ফুসফুস বা সেই জাতীয় ছবিও ছাপা হয় ধূমপায়ীদের বিরত করতে। ব্রিটেনের স্টার্লিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে চান ধূমপান-বিরোধী প্রচারকে। তাঁরা এক রকম প্যাকেট তৈরি করেছেন, যা খুললেই শুনতে হবে হুঁশিয়ারি। সিগারেট ছাড়তে এখনই যোগাযোগ করুন এই ফোন নম্বরে। কিংবা, জানেন তো সিগারেট আপনার মা হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়?
প্রথম পর্যায়ে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী বেশ ক’জন কিশোরী ও তরুণীর মধ্যে এর প্রভাব পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া লন্ডনের এক কিশোরী জানাচ্ছে, কথাগুলো ধাক্কা দেয়। বিশেষ করে মাতৃত্বের বিষয়টি। দমিয়ে দেয়। ভাবায়ও। অন্যরা বলেছেন, ব্যাপারটা এতই বিরক্তিকর যে, এমন প্যাকেটের কারণে সত্যিই ধূমপান ছেড়ে দিতে পারেন তাঁরা।
স্টার্লিংয়ের ওই গবেষকদের অন্যতম ক্রফোর্ড মুডি ও তাঁর সতীর্থরা জানাচ্ছেন, প্রযুক্তির দিক দিয়ে বিষয়টি জটিল কিছু নয়। আজকাল প্যাকেজিংকে আকর্ষণীয় করার জন্য অনেক কিছুই হচ্ছে। বাজনাদার গ্রিটিংস কার্ড তো অনেক দিন ধরেই পাওয়া যাচ্ছে। আমরা দেখতে চাইছি, তামাক-বিরোধী প্রচারে প্যাকেটের মধ্যে রেকর্ড করা বার্তা শোনানোর ব্যবস্থা কতটা কার্যকর হয়। এ বার সব বয়সের নারী-পুরুষের মধ্যেই এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখা হবে।
বাজারে এই ধরনের সিগারেট প্যাকেট ছাড়তে হলে তার জন্য আইন পাল্টাতে হবে। তবে ধূমপান-বিরোধী সমাজকর্মীরা ইতিমধ্যেই ব্যাপারটা নিয়ে খুব উৎসাহিত। স্কটল্যান্ডের এমনই একটি সংগঠন অ্যাকশন ফর স্মোকিং অ্যান্ড হেল্থ-এর শিলা ডাফির মন্তব্য, “তামাক শিল্প তাদের বাজার বাড়াতে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মারাত্মক এই নেশা ছড়াতে প্রচুর সংখ্যায় সৃষ্টিশীল মানুষকে কাজে লাগায়। প্যাকেজিংয়ের এই অভিনব ভাবনাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি, কারণ এটা নেশামুক্তির কথা বলে। সুস্বাস্থ্যের কথা বলে। আমরা চাই তামাকজাত পণ্য তৈরির সংস্থাগুলিও সত্যি কথাগুলো আরও আকর্ষণীয় ভাবে তুলে ধরবে।” |