এ বার থেকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে জরায়ু-মুখের ক্যান্সার নির্ণয়ের পরীক্ষা করাতে পারবেন মহিলারা। এ ছাড়াও, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের জন্য আলাদা শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জরুরি বিভাগে রোগীদের পর্যবেক্ষণের জন্য ওই বিভাগটিও নতুন করে সাজা হয়েছে।
গত ২৬ জুলাই একটি নাতিদীর্ঘ অনুষ্ঠানে মহকুমা হাসপাতালটিতে এই সমস্ত পরিষেবার সূচনা করা হল। উপস্থিত ছিলেন জেলার এসিএমওএইচ সুস্মিতা দাশগুপ্ত, মহকুমাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত, বিধায়ক সুদীপ্ত রায় এবং হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ত্রিদিব মুস্তাফি প্রমুখ।
শ্রীরামপুর ওয়ালশ রাজ্যের দ্বিতীয় প্রাচীন হাসপাতাল। অথচ দিনের পর দিন ধরে চিকিৎসা পরিকাঠামো এবং পরিষেবা তলানিতে নেমে আসছে বলে অভিযোগ। রাজ্য সরকারের দাবি, মানুষের সেই সব অভিযোগ নিরসন করতে তারা বদ্ধপরিকর। জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওয়ালশের মানোন্নয়নের কথা ঘোষণা করেছেন একাধিকবার।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, কলকাতার চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের পরিচালনায় ৩০-৬০ বছরের মহিলাদের জরায়ু-মুখ ক্যান্সার নির্নয়ের পরীক্ষা করা হবে ওয়ালশে। চিত্তরঞ্জনের চিকিৎসকেরা এ জন্য নিয়মিত ওয়ালশ হাসপাতালে আসবেন। এ দিনও ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হুগলি জেলায় এই পরিষেবা এখানেই প্রথম চালু হল। চিকিৎসক ও শ্রীরামপুরের বিধায়ক সুদীপ্তবাবু বলেন, “কারও ক্যান্সার ধরা পড়লে এখানে যতটা সম্ভব চিকিৎসা হবে। প্রয়োজনে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হবে।” তিনি বলেন, “এখানে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট গড়া হবে। পিপিপি মডেলে সিটি স্ক্যান এবং এমআরআই করার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব আমরা।”
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের জন্য ৬টি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে অন্তর্বিভাগে। এ দিন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের হাতে খেলনা তুলে দেওয়া হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। হাসপাতাল সুপার জানান, প্রয়োজন অনুযায়ী এই রোগে আক্রান্তদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা করা হবে। প্রয়োজনীয় ওষুধ জোগানোরও চেষ্টা করা হবে। এ ছাড়া, জরুরি বিভাগে আহত বা অসুস্থদের পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। শল্য চিকিৎসার সুবিধার জন্য ল্যাপারোস্কপি মেশিন কেনা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, অসুস্থ নবজাতকদের চিকিৎসার জন্য নতুন বিভাগের কাজ শুরু হয়েছে। ন্যায্যমূল্যে ওষুধের দোকানের জন্য টেন্ডার হয়ে গিয়েছে।
পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটলেও চিকিৎসা পরিষেবা কতটা বদলায়, এখন সেটাই দেখার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করছেন, আগে মাসে অন্তত শ’দুয়েক রোগীকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হত। গত কয়েক মাসে সেই সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। |