পঞ্চায়েত ভোটে সাংগঠনিক ক্রুটি বিচ্যুতি শুধুরে নিয়ে আগামী লোকসভা ভোটের প্রস্তুতিতে দলের সকলের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে শুক্রবার জলপাইগুড়িতে জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। পাশাপাশি, দলের সংগঠন-সহ নানা বিষয় ক্ষোভের কথা শুনতে দলের দুই প্রবীণ নেতাকে কলকাতায় ডেকে পাঠালেন মুকুলবাবু। রাজ্যে একমাত্র জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদেই বামফ্রন্ট দখল করেছে। পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের পরে জেলার নেতাদের কলকাতায় ডেকে বৈঠকর করার কথা থাকলেও এদিন শিলিগুড়িতে আসেন মুকুলবাবু। তার পরে তিনি নিজেই জলপাইগুড়িতে সাংগঠনিক বৈঠক করতে আসেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলার ডাবরগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও। কদমতলায় দলের জেলা কার্যালয়ে কর্মীদের উদ্দেশ্যে মিনিট দশেকের ভাষণের পরে মুকুলবাবু সার্কিট হাউসে যান। দলীয় সূত্রের খবর, সেখানে দলের দুই প্রবীণ নেতা তথা প্রাক্তন জেলা সভাপতি কল্যাণ চক্রবর্তী এবং কৃষ্ণকুমার কল্যাণী দল পরিচালনা নিয়ে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানান মুকুলবাবুকে। দুই নেতাকেই বিস্তারিত আলোচনার জন্য কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছেন মুকুলবাবু। এদিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত মুকুলবাবুর সঙ্গে দলের বিভিন্ন নেতানেত্রীরা দেখা করেছেন। দলের জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক-সহ অন্য নেতাদের নিয়ে সার্কিট হাউসে বৈঠকও করেছেন তিনি।
মুকুলবাবু বলেন, “প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র রয়েছে দলে। তাকে অনেকেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ বলে ভুল করে। পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্ব শেষ হয়েছে। দলের সংগঠনের যদি কোনও খামতি থাকে তবে সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
তৃণমূলের অন্দরে খবর, নেতাদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় ভোটের ফল প্রত্যাশিত হয়নি বলে মুকুলবাবু জানিয়েছেন। যদিও এদিন দলের জেলা কার্যালয়ে সাধারণ কর্মীদের উদ্দেশ্যে ভাষণে ২০০৮ সালের নিরিখে জলপাইগুড়ি জেলায় পঞ্চায়েতের ভোটের ফল তুলনামূলক ভাল হয়েছে বলেই মুকুলবাবু জানিয়েছেন। তবে দলীয় কার্যালয়ের থেকে সার্কিট হাউসে এসে জেলার বিভিন্ন ব্লকের কর্মীরা নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুকুলবাবুর কাছে। দলের রাজগঞ্জ ব্লকের কিছু কর্মী রাজগঞ্জের ফল আরও ভাল হতে পারত বলে মুকুলবাবুর কাছে জানিয়ে দলের কিছু নেতার বিশৃঙ্খল আচরণের নালিশ জানিয়েছেন। ক্ষোভ জানিয়েছেন দলের ধূপগুড়ি এবং সদর এলাকার নেতারা। কালচিনির বিধায়ক উইলসন চম্প্রামারিও সার্কিট হাউসে মুকিলবাবুর সঙ্গে দেখা করেছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলার চা বলয়ে নতুন করে সংগঠন গড়ে তুলতে দলীয় স্তরে বেশ কিছু রদবদলের কথা জানিয়েছেন মুকুলবাবু। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুকুলবাবু বলেন, “২০০৮ সালের পঞ্চায়েত বা ২০১১ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এবাবের পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় দলের ফল যথেষ্ট ভাল হয়েছে। সিপিএম জেলা পরিষদ পেলেও, গ্রামস্তরে সিপিএমকে অনেকটাই পেছনে ফেলেছে তৃণমূল। আগামী লোকসভা নির্বাচনে ফল আরও ভাল হবে। সাগঠনিক ক্ষেত্রে কিছু ছোট ক্রুটি বিচ্যুতি হয়েছে হয়ত। সেগুলি শুধরে নেওয়া হবে।” |