পঞ্চায়েত ভোটের গণনায় কারচুপির অভিযোগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছে নদিয়া জেলা বামফ্রন্টও। জেলা পরিষদের দু’টি আসনে গণনায় গোলমাল করে বামেদের হারিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগে মামলা করার পথে যেতে চায় তারা। নদিয়ার কালীগঞ্জে ওই দু’টি আসনের মধ্যে একটিতে সিপিএমের এবং অন্যটি বাম শরিক আরএসপি-র প্রার্থী ছিলেন। গণনায় কারচুপি নিয়ে মামলার হুমকি দিয়েছে বর্ধমান জেলা সিপিএম।
দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে নদিয়া জেলায় এ বার বামেদের ফল তুলনামূলক ভাবে ভাল। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে তারা শাসক দলকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলেছে, পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের চেয়ে বেশি আসনও পেয়েছে। জেলা পরিষদের মোট ৪৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ২৫, বামফ্রন্ট ২১। দু’টি আসনের ফল এ দিক-ও দিক হলেই জেলা পরিষদের সমীকরণ পাল্টে যেতে পারে, এই তথ্য মাথায় রেখেই মামলা করার পথে যেতে চাইছে বামেরা। সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের দাবি, “দু’টি আসনে গণনায় কারচুপি করে আমাদের হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই দু’টি আসন নিয়ে মামলা হবে। আরও একটি আসন নিয়ে সন্দেহ থাকায় খোঁজখবর নিচ্ছি।”
সার্বিক ভাবে বামেরা মনে করছে, তাদের জন্য উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ থাকলেও পঞ্চায়েতে তাদের ফলাফল এ বার একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে মোট আসন জয়ের শতাংশের বিচারে ২০০৮ সালে তৃণমূল যা ফল করেছিল, বামেরা এ বছর তার চেয়ে কিঞ্চিৎ ভালই করেছে। আবার পাঁচ বছর আগে শাসক বামফ্রন্ট গ্রাম পঞ্চায়েতে যত শতাংশ আসন জিতেছিল, এ বার শাসক তৃণমূল তার চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে। বাম শরিকেরা প্রায় সর্বত্রই নিজেদের ঘাঁটি আগলাতে ব্যর্থ। তার মধ্যেই সিপিআইয়ের আসন হারানোর ধাক্কা অন্য শরিকদের তুলনায় কিছুটা কম। গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় ৪৫০, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৪৮ এবং জেলা পরিষদে ৮টি আসন পেয়েছে তারা। পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিআই বরাবর বেশ কিছু ভোট পেত। এ বার ওই জেলায় বামেদের ফল সার্বিক ভাবেই খারাপ, সেখানে ধাক্কা খেয়েছে সিপিআই-ও। আবার দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ফলতায় তারা একটি জেলা পরিষদ আসন জিতেছে। ওই এলাকায় তিনটির মধ্যে দু’টি অঞ্চলেও জয় পেয়েছে তারা। |