গোল করা নিয়ে খেলার মাঠে তর্কাতর্কি ও পরে মারধরের ঘটনায় প্রাণ গেল এক ক্লাব সমর্থকের। জখম হলেন আরও একজন। আর এই ঘটনাকে ঘিরেই রাজনৈতিক রঙ লাগলো ওন্দার পুনিশোলে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত মাইমুর আলি খান (২৬) পুনিশোলের জিডরি পাড়ার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাথায় গুরুতর চোট নিয়ে তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মারধরে জখম হন তাঁর পড়শি রিজওয়ান আলি খান। তিনি ওই চিকিৎসাধীন। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ জিডরি পাড়ার বাসিন্দা তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের পুনিশোল লোকাল কমিটির সদস্য আব্দুল আজিজ খানকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে পুনিশোলের বনপাড়ার মাঠে স্থানীয় দু’টি দল কেশবপুর ও মুসলিমপাড়ার মধ্যে ফুটবল ম্যাচ হয়। একটি গোলকে কেন্দ্র করে বিতর্কের জেরে ম্যাচটি বন্ধ হয়ে যায়। বিতর্কের জের খেলার মাঠ ছেড়ে গড়ায় গ্রামের মধ্যেও। বাসিন্দারা জানান, মইমুর বা আনোয়ার কেউই খেলায় যোগ দেয়নি। তাঁরা ছিলেন মুসলিম পাড়ার সমর্থক। মাইমুরের দাদা আনোয়ার আলি খানের অভিযোগ, “সন্ধ্যায় কয়েকজনের সঙ্গে মইমুর পাড়ার মোড়ে চায়ের দোকানে গল্পগুজব করছিল। হঠাৎ কেশবপুরের ফুটবল দলের কয়েকজন সমর্থক ওদের ওপর হামলা চালায়। ভাইয়ের মাথায় লোহার ভারি জিনিস দিয়ে আঘাত করে। মারধর করা হয় রিজওয়ানুরকেও। ভাইকে বেঘোরে মরতে হল।”
এই ঘটনায় জুড়ে গিয়েছে রাজনীতি। দীর্ঘদিন ধরে বামেদের দখলে থাকা পুনিশোল গ্রাম পঞ্চায়েতটি এ বারেও বামেদেরই দখলে রয়েছে। নিহতের দাদা আনোয়ার আলির দাবি, “আমরা তৃণমূলের সমর্থক বলে ফরওয়ার্ড ব্লকের লোকেরা এলাকায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উপর ক’দিন ধরে হামলা চালাচ্ছিল। যাঁরা ভাইকে মেরেছে তারা ফরওয়ার্ড ব্লকের সমর্থক।’’ তৃণমূলের পুনিশোল অঞ্চলের সভাপতি রেজাউল হক মণ্ডলও দাবি করেন, “খেলা নিয়ে বিতর্ক একটা ছুতো। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এই হামলা করছে ফরওয়ার্ড ব্লক।” ফরওয়ার্ড ব্লকের ওন্দা জোনাল কমিটির সম্পাদক মানিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনাটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। ধৃতের বয়স ৭০ বছর। তিনি দু’পক্ষের ঝামেলা থামাতে গিয়েছিলেন। তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।” |