|
|
|
|
শিকেয় যাত্রী নিরাপত্তা |
অনুমতি না নিয়েই দাপিয়ে চলছে ট্রেকার
দেবমাল্য বাগচি • হলদিয়া |
অনুমতি ছাড়াই হলদিয়া জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ট্রেকার। রাস্তায় বাস কম থাকায় ঝুঁকি নিয়ে তাতেই চেপে বসছেন যাত্রীরা। ১২-১৪ জনের জায়গায় বসছেন ২১-২৫ জন। দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রায়শই। সব জেনেও উদাসীন প্রশাসন।
বস্তুত, হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় সড়ক, হলদিয়া-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক, বালুঘাটা-কুকড়াহাটি সড়ক ছাড়া অন্যত্র বাসের সংখ্যা খুবই কম। তাই নিত্যযাত্রীদের একমাত্র ভরসা ট্রেকার পরিষেবা। যদিও ম্যাজিক ভ্যান ও ট্রেকারগুলির অধিকাংশের কাছেই নেই বৈধ অনুমতি। যাত্রী নিরাপত্তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একটি ট্রেকারে জনা পঁচিশেক লোক উঠছে। ফলে যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। সমস্যা সবচেয়ে বেশি হলদিয়ার মঞ্জুশ্রী থেকে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল লিঙ্করোড ধরে বালুঘাটা রুটে। এই রুটে মাত্র একটি বাস চলাচল করে। তাই যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে কয়েকটি ট্রেকারকে যাত্রী পরিবহণের পারমিট দেওয়া হয়েছিল। পরে অনুমতি ছাড়াই প্রচুর ট্রেকার নেমে গিয়েছে। এখন কুড়িটিরও বেশি ট্রেকার চলছে, যার পঞ্চাশ শতাংশেরই পারমিট নেই। ট্রেকারের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে ম্যাজিক ভ্যানও। ওই গাড়িগুলিতে দশ জনের জায়গায় তোলা হচ্ছে ১৫-১৬ জন যাত্রী। ট্রেকার চালক গুরুপদ প্রামাণিক বলেন, “পেট্রোলের যা দাম বাড়ছে, তাতে ট্রেকার চালিয়ে সংসার চালানো মুশকিল। তাই কিছু বাড়তি রোজগারের জন্য অতিরিক্ত যাত্রী নিতে হচ্ছে।”
|
ঝুঁকির যাত্রা। চৈতন্যপুরে নিজস্ব চিত্র। |
যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতায় ট্রেকার ও ম্যাজিক ভ্যানের একে অপরকে টেক্কা দিতে গিয়ে প্রায়শই দুর্ঘটনাও ঘটছে। ট্রেকার ও ম্যাজিক ভ্যানে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের নজির রয়েছে দুর্গাচক থেকে সুতাহাটা বা চৈতন্যপুর রুটেও। স্থানীয় চিরঞ্জীবপুরের বাসিন্দা প্রণয় প্রধানের কথায়, বাস, ট্রেকারের সংখ্যা কম থাকাতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় বিপদের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই ট্রেকার চলছে। যে কোনও মুহূর্তেই বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অথচ প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।” মঞ্জুশ্রী থেকে বালুঘাটা রুটে ট্রেকার সংগঠনের সভাপতি বুদ্ধদেব রায় প্রামাণিক ও সহ সভাপতি শেখ আব্দুল সুকুরদের দাবি, “আমরা ট্রেকারগুলির সময় বেঁধে দিয়েছি। চালকদেরও অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। কিন্তু রুট পারমিট না পাওয়ায় বেশি সংখ্যায় ট্রেকার রাস্তায় নামতে পারছে না। তাই মানুষও ব্যস্ত সময়ে একটা ট্রেকারেই ঠাসাঠাসি করে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন।”
প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?
পূর্ব মেদিনীপুরের আরটিও অভিজিকুমার হাইত বলেন, “অনুমতি ছাড়া ট্রেকার চলার অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছিল। আমরা মাস চারেক আগে স্থানীয় থানাগুলিকে তা জানিয়েছিলাম। তবে থানাগুলি এই নিয়ে আমাদের আর কিছু জানায়নি। রুট পারমিটের বিষয়টি আরটিএ বোর্ডের মিটিংয়ে আলোচনা হবে।”
প্রশ্ন উঠছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। যদিও হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে রাজ্যের সব জায়গাতেই গাড়ি চলছে। এগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে আইন শৃঙ্খলার সমস্যা হয়। তবে অনুমতিবিহীন ট্রেকার নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ভাবা যেতে পারে।” |
|
|
|
|
|