সভাধিপতির দৌড়ে ‘অভিজ্ঞ’ মধুরিমা
প্রত্যাশা মতোই এ বার পঞ্চায়েত ভোটে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ নিজেদের দখলে নিয়েছে তৃণমূল। এখন প্রস্তুতি জেলা পরিষদ গঠনের, নতুন সভাধিপতি নিবার্চনের। জেলা পরিষদ পদটি এ বার তফসিলি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। স্বাভাবিক ভাবেই জেলা পরিষদের চার জন জয়ী তফসিলি মহিলার নাম উঠে আসছে সভাধিপতি পদের দাবিদার হিসেবে। এঁরা হলেন কাঁথি-১ ব্লক থেকে নির্বাচিত মধুরিমা মণ্ডল, খেজুরি-২ ব্লকের দুই জেলা পরিষদ আসনে জেতা মেঘমালা দাস, সুতপা মণ্ডল (খাটুয়া) ও ময়না ব্লকের জেলা পরিষদ আসনে জেতা মামনি মনি।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দৌড়ে এগিয়ে মধুরিমাদেবী। কাঁথি থেকে এর আগের বারও জেলা পরিষদে জিতেছিলেন তিনি। এক দশক ধরে জেলা পরিষদের কাজকর্ম দেখেছেন। শুধু তাই নয়, গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির জয়ী প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। বাকি তিন জন এই প্রথম জেলা পরিষদে জিতলেন।
কাঁথি থেকে জিতলেও আদতে খেজুরির মেয়ে মধুরিমাদেবী বড় হয়েছেন রাজনীতির অলিন্দে। তাঁর মা শেফালী মণ্ডল ছিলেন বাম জমানায় খেজুরির সক্রিয় মহিলা নেত্রী। মায়ের কাছে থেকেই ৯৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে খেজুরি-২ ব্লকের মশাড়িয়া পঞ্চায়েত থেকে কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়ে জিতেছিলেন। বিয়ের পর চলে যান কাঁথিতে শ্বশুরবাড়িতে।

মধুরিমা মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র
স্বামী মানবেন্দ্র মণ্ডল ছাড়াও শ্বশুর ও শাশুড়ির উত্‌সাহে সক্রিয় রাজনীতিতে থেকে যান। তবে দল বদলে যায়। দুই সন্তানের জননী মধুরিমাদেবী ২০০৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে নয়াপুট অঞ্চল থেকে জিতে কাঁথি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা হন। ২০০৮ সালে কাঁথি-১ ব্লক থেকে জেলা পরিষদ আসনে জিতেছিলেন স্নাতকোত্তর পাশ মধুরিমাদেবী। এ বারও জিতে তিনি সভাধিপতির হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে। তবে তিনি বলেন, “শেষ কথা বলবে দল এবং অবশ্যই শুভেন্দুদা ও শিশিরকাকু।”
মধুরিমাদেবীর প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন খেজুরি থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য মেঘমালা দাস। পরিবেশ বিজ্ঞানে মাস্টার্স, মুণ্ডমারী শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা মেঘমালা দাসও মধুরিমাদেবীর মতোই খেজুরির মেয়ে। রাজনৈতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন তিনিও। বাবা শান্তিরাম দাস খেজুরির কংগ্রেস নেতা। এক সময় বিধানসভা ভোটে বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। দাদা প্রয়াত কৃষ্ণেন্দু দাস খেজুরির বামজমানা বদলের অন্যতম কারিগর ছিলেন। বেশ কিছু দিন আগে কৃষ্ণেন্দুবাবু এক গাড়ি দুঘর্টনায় অকালে প্রাণ হারান। তারপরেই এ বার মধুরিমাদেবীকে জেলা পরিষদ আসনে দাঁড় করানো হয়।
খেজুরির আর এক জয়ী মহিলা প্রার্থী সুতপা মণ্ডল (খাটুয়া) তুলনায় অনেক ছোট। উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী। এ বারই প্রথম ভোটে দাঁড়িয়ে জিতেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি তালিকায় কিছুটা পিছিয়ে। ময়না ব্লক থেকে জয়ী মামনি মণিও রাজনীতিতে আনকোরা। এতদিন মন দিয়ে ঘরকন্না করেছেন। এ বারই প্রথম ময়না ব্লকে মহিলা সংরক্ষিত আসনে দাঁড়িয়ে জিতলেন।
তা হলে এগিয়ে কী মধুরিমাই?
জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন, “তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলীয় নেতৃত্বই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।” দলের অন্দরের খবর, অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্ঠ মধুরিমাদেবীরই ‘চান্স’ বেশি। তবে, সভাধিপতি যেই হোন না কেন, অলক্ষ্যে থেকে গতবারের মত এ বারও জেলার ভার সামলাবেন সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি শুভেন্দু অধিকারীই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.