‘আমার শান্ত আগ্রাসনে কাজ হবে না কে বলল’

প্রশ্ন: এই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরটা কি আপনার জীবনের সবচেয়ে কঠিন? কেরিয়ারের প্রেক্ষিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
ঋদ্ধিমান: আমি এক বছর ধরে জাতীয় দলের বাইরে। মাঝে মাঝে এক-আধটা ম্যাচ খেলি। সব সফরই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সবই। তবে এটা ঠিক যে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মর্যাদাটা বেশি। এখানে ভাল খেললে লোকের নজরে পড়ব।

প্র: দক্ষিণ আফ্রিকার পিচে বাউন্স বেশি। তার জন্য ভিজে টেনিস বলে কি আলাদা করে প্র্যাক্টিস করছেন?
ঋদ্ধিমান: ভিজে বলে না, আমি প্লাস্টিক বলে প্র্যাক্টিস করেছি। এর আগে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে দেখেছি ওকানকার পিচে বাউন্স অনেক বেশি। অস্ট্রেলিয়ার বাউন্স কুড়ি হলে দক্ষিণ আফ্রিকা উনিশ। তবে অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় দক্ষিণ আফ্রিকায় বল বেশি মুভ করে। সেটা মাথায় রাখতে হবে।

প্র: ডেল স্টেইনকে খেলার অভিজ্ঞতা তো আপনার আছে। সেই তুলনায় কি দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ টিমের বোলারদের মোকাবিলা করাটা সহজ হবে?
ঋদ্ধিমান: সে রকম কিছু নয়। যারা ‘এ’ টিমে খেলছে, তারা তো সবাই জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার জন্যই এই সিরিজটা খেলবে। স্টেইনকে খেলেছি বলে তাই ওদের হাল্কা ভাবে নেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। তবে হ্যাঁ, ওদের দেশের সেরা পেসারকে খেলেছি বলে আত্মবিশ্বাসটা বেশি থাকবে। আর সাউথ আফ্রিকায় স্কিল বা টেকনিকের চেয়ে আত্মবিশ্বাসটা অনেক বেশি জরুরি।

প্র: বাঙালি ক্রিকেটারদের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের একটা অদ্ভুত যোগসূত্র আছে জানেন? সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কামব্যাক ওখানে। দীপ দাশগুপ্তকে লোকে আজও মনে রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকায় দুর্দান্ত একটা ম্যাচ বাঁচানো ইনিংসের জন্য।
ঋদ্ধিমান: জানি।

প্র: মনে হয় দক্ষিণ আফ্রিকায় কামব্যাকের লাক আপনার ক্ষেত্রেও সাহায্য করবে? আপনিও জাতীয় দলের বাইরে।
ঋদ্ধিমান: লাক তাদের সঙ্গে থাকে যারা সাহসী। কিন্তু লাক নিয়ে বসে থাকলে আমার চলবে না। আমাকে ভাল ব্যাট করে দেখাতে হবে।

প্র: শুধু ব্যাট?
ঋদ্ধিমান: অনেকটাই।

প্র: তা হলে কি আপনি দীনেশ কার্তিকের রাস্তায় হাঁটছেন? টিমে যেহেতু মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নামক উইকেটকিপার আছেন, তাই কিপার নয়, ব্যাটসম্যান হিসেবে চাইছেন জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে?
ঋদ্ধিমান: কিছুটা। জাতীয় দলে ঢুকতে হলে ব্যাটিংই একমাত্র রাস্তা।

প্র: বাংলা ক্রিকেটে ফিরি। আপনি নাকি বাংলার ক্যাপ্টেন হচ্ছেন?
ঋদ্ধিমান: আমার সঙ্গে সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার কথা হয়েছে। উনি আমাকে প্রস্তাব দিয়েছেন। বাংলার ক্রিকেটের উন্নতির জন্য আমিও ওঁকে কিছু পরামর্শ দিয়েছি। বলেছি ক্যাপ্টেন যে-ই হোক, এই জিনিসগুলো যেন করা হয়।

প্র: সম্মতি দিয়েছেন?
ঋদ্ধিমান: হ্যাঁ বা না কিছু বলিনি। আগে দেখি যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছি সেগুলো নিয়ে সিএবি কী করে। তার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।

প্র: কেউ কেউ বলছে আপনার ‘ক্যাপ্টেন্সি সেন্স’ খুব ভাল। দশটার মধ্যে ন’টা সিদ্ধান্তই একদম ঠিক নিতে পারেন। স্টপগ্যাপ ক্যাপ্টেন্সি করেছেন। নিজের ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে আপনার নিজের কী ধারণা?
ঋদ্ধিমান: কেউ অধিনায়কত্ব না করতে চাইলে আমি করেছি এত দিন। কিন্তু নিজে থেকে কাউকে বলিনি যে আমাকে ক্যাপ্টেন করো। আর আমার দর্শনটা হল, ক্যাপ্টেন থাকি না থাকি, নিজের যা মনে হবে সেটা বলা। লক্ষ্মী বা মনোজ যখন অধিনায়ক ছিল তখন ওদেরও বলেছি। তখন আমি স্রেফ কিপার-ব্যাটসম্যান ছিলাম।

প্র: ক্যাপ্টেন হিসেবে নিজেকে দশে কত দেবেন?
ঋদ্ধিমান: পাঁচ।

প্র: কেন?
ঋদ্ধিমান: কারণ এখনও আমার অনেক কিছু শেখার আছে। কী ভাবে বোলার পাল্টালে উইকেট আসবে, বা ব্যাটিং অর্ডার কী রকম হলে বেশি রান উঠবে, এগুলো আরও ভাল করে জানতে হবে।

প্র: লোকে বলে আপনি এত দিন অধিনায়কত্ব নিতেন না আপনার ব্যাটিংয়ে তার প্রভাব পড়বে বলে। আর টিমের মধ্যে ঝামেলা এড়াতে।
ঋদ্ধিমান: কথাটা ভুল। ঝামেলা বা ব্যাটিং নয়, কিপিং নিয়ে সমস্যা হবে বলে এত দিন নেতৃত্ব নিইনি। সেটা অনেক বার সিএবি-কে বলেওছি।

প্র: অসুবিধেটা কী? এমএসডি পারলে আপনি নন কেন?
ঋদ্ধিমান: সবাই কি এমএসডি বা সচিন তেন্ডুলকর হয়? আমি সামান্য ঋদ্ধিমান সাহা। সে রকমই থাকতে চাই।

প্র: বছরদুয়েক হল বিয়ে করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনের এই বাড়তি দায়িত্বটা কি নেতৃত্বের দায়িত্ব নিতে সাহায্য করবে?
ঋদ্ধিমান: দুটো তো আলাদা ব্যাপার। একটা পাঁচটা থেকে আটটার কাজ। অন্যটা তার পরের। দুটোর মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই।

প্র: আপনার নেতৃত্বের দর্শনটা কি সৌরভের মতো আগ্রাসী? না ধোনির মতো শীতল স্পর্ধা?
ঋদ্ধিমান: সৌরভ বা ধোনি নয়, আমি আমারই মতো।

প্র: আপনার ‘ইমেজ’ তো খুব শান্তশিষ্ট, বিনয়ী। ক্যাপ্টেন্সি করার সময় সেটা নেগেটিভ ফ্যাক্টর হতে পারে?
ঋদ্ধিমান: মনে হয় না। আমার শান্ত আগ্রাসনেও কাজ হবে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.