প্রেক্ষাপট ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্ট। চরিত্র স্টিভ স্মিথ।
ঘটনা: ২৪ রানের মাথায় স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে পরিষ্কার এলবিডব্লিউ। নিউজিল্যান্ডের আম্পায়ার টনি হিলের রায় নট আউট! এবং ইংরেজ শিবিরের মাথায় হাত। কিছু করার নেই। শেষ দু’টো রিভিউ স্মিথের পিছনে বাজে খরচ হয়ে গিয়েছে। আর রিভিউ পড়ে নেই।
প্রেক্ষাপটওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্ট। চরিত্রউসমান খোয়াজা।
ঘটনা: সোয়ানের বলে কট বিহাইন্ডের পর রিভিউ চাইলেন খোয়াজা। কারণ শুধু টনি হিল তাঁকে আউট ঘোষণা করেছেন। হিলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করার মতো ডিআরএসে কিছু পাওয়া গেল না। টিভি আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা হটস্পট, সাউন্ড রিভিউ, রিপ্লে কোথাও কিছু পেলেন না ঠিকই, কিন্তু হিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে দিলেন।
প্রেক্ষাপটলর্ডস টেস্ট। চরিত্রইয়ান বেল।
ঘটনা: বেলের নিচু ক্যাচ গালিতে ধরলেন স্টিভ স্মিথ। মাঠের আম্পায়াররা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাঠালেন টিভি আম্পায়ার টনি হিলের কাছে। দূরের লেন্সে পরিষ্কার করে কিছু ধরা পড়ল না। বিতর্কিত সিদ্ধান্ত মারফত নট আউট থেকে গেলেন বেল।
একটা, দু’টো বা তিনটে নয়। চলতি অ্যাসেজে ঘটনা অন্তত গোটা ছয়-সাত। যা ডিআরএস নিয়ে গনগনে বিতর্কের আগুনের আঁচ দিন দিন তো বাড়াচ্ছেই, সঙ্গে আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নও তুলে দিচ্ছে ক্রিকেটমহলে।
ডিআরএসের এত ভুলভ্রান্তি কি ক্রিকেটারদের বন্ধুত্বের সম্পর্কেও ভাঙন ধরাচ্ছে? ক্রিকেট-সমর্থকদের বিশ্বাসেও বড়সড় ফাটল ধরাবে?
ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া এই দু’দেশের ক্রিকেটমহলের কেউ কেউ তেমনই মনে করছেন। বক্তব্য খুব পরিষ্কার, মাঠের আম্পায়াররা যদি খোয়াজাকে আউট দিতেন কিছু বলার থাকত না। গত একশো পঁয়ত্রিশ বছর ধরে আম্পায়াররা মাঝে মাঝে যা করে ফেলেছেন, ক্রিকেটাররা মেনেও নিয়েছেন। কিন্তু প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েও ভুল হবে, সেটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। কুইন্সল্যান্ডের উইকেটকিপার ক্রিস হার্টলে যেমন মনে করিয়ে দিচ্ছেন, “প্রযুক্তি মারফত প্রতারিত হলে ক্রিকেটাররা যদি আম্পায়ারকে ঘেরাও করে, কী হবে কেউ ভেবেছে?”
এখানেই শেষ নয়। উসমান খোয়াজার আউট নিয়ে অসন্তোষ এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত ময়দানে নেমে পড়েছেন। ডিআরএর প্রযুক্তিকে তুলোধোনা করে জবাবদিহি চেয়েছেন আইসিসি-র থেকে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সিইও জেমস সাদারল্যান্ডও বলেছেন, “আমরা আইসিসি-র কাছে জানতে চেয়েছি ঠিক কোন যুক্তিতে খোয়াজাকে আউট দেওয়া হয়েছে। মাঠের আম্পায়ার ও টিভি আম্পায়ার, দু’জনেই ভুল ছিলেন।” তবে ডিআরএস নিয়ে ভারতীয় বোর্ডের মতো চরমপন্থী রাস্তায় এখনই হাঁটবে না বলে জানিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
ঘটনা হচ্ছে, ডিআরএস নিয়ে ভুলভ্রান্তি কমাতে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে টিভি রিপ্লে-তে যা দেখতে পাওয়া যায় না, সেগুলোও দেখতে পাচ্ছিলেন টিভি আম্পায়াররা। যাতে নতুন করে কোনও অভিযোগ না ওঠে। কিন্তু তাতেও বিতর্ক বেঁধেছে। বলা হচ্ছে, আইসিসি-র ভাগ্য ভাল যে ক্রিকেটাররা খুল্লমখুল্লা সাংবাদিকদের কাছে ডিআরএস নিয়ে কিছু বলছেন না। টিম ব্রেসনানের “সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। অফিশিয়ালদের সম্মান করতে হবে”-র মতো নিরীহ মন্তব্যের চেয়ে বেশি এগোচ্ছে না। কিন্তু এ রকম নিত্য চলতে থাকলে, কত দিন তাঁরাও আর চুপ থাকবেন, সেটাও প্রশ্ন।
|
বিতর্কে প্রযুক্তি |
তৃতীয় টেস্ট, ওল্ড ট্র্যাফোর্ড, ১ অগস্ট। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম
ইনিংস।
উসমান খোয়াজার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল প্রায়রের
গ্লাভসে। আম্পায়ার
হিল আউট দিলে রিভিউ চান খোয়াজা।
হট স্পটে কিছু পাওয়া
গেল না।
একটা অস্পষ্ট আওয়াজ
পাওয়া
গেল। সেটাই
ধরে
টিভি
আম্পায়ার
আউটের সিদ্ধান্ত বহাল রাখলেন। |
প্রায়রের আবেদন।
ফিরছেন ক্ষুব্ধ খোয়াজা। |
প্রথম টেস্ট, ট্রেন্টব্রিজ, ১৮-২২ জুলাই। দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের লক্ষ্য থেকে ১৫ রান দূরে থাকা
অবস্থায় ব্র্যাড হাডিনের বিরুদ্ধে অ্যান্ডারসনের বলে কট বিহাইন্ডের আবেদন। কিন্তু বল ব্যাট ছুঁয়েছিল
কি না, পরিষ্কার নয়। রিভিউ চান কুক। একটা অস্পষ্ট আওয়াজ শুনে আউট দিলেন টিভি
আম্পায়ার এরাসমাস। ম্যাচ জিতল ইংল্যান্ড। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ চাইছেন কুক। |
প্রথম টেস্ট, ট্রেন্টব্রিজ, ১৮-২২ জুলাই। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে
মিচেল স্টার্কের বল জোনাথন ট্রটের ব্যাটে লেগে প্যাডে লাগে।
আম্পায়ার আউট দেননি। কিন্তু টিভি আম্পায়ার আউট দেন।
পরে জানা যায়, প্রযুক্তিগত কারণে হটস্পট ছবিই তুলতে পারেনি
ঘটনার । ইসিবি-র কাছে ক্ষমা চায় আইসিসি। |
ক্লার্কদের উল্লাস।
ফিরছেন হতাশ ট্রট। |
|