সমাজবিরোধীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে চুঁচুড়ার ধান্য গবেষণা কেন্দ্র। রাত নামলেই দুষ্কৃতীরা সেখানে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হাজির হচ্ছে। অবাধে চুরি হচ্ছে কেন্দ্রের আবাসনের দরজা-জানলা, জলের ট্যাঙ্ক, আসবাব। বসছে নেশার আসর। ওই কেন্দ্রের আধিকারিকদের অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হলেও এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য ক্রমশ বাড়ছে।
ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ তথা উপ-অধিকর্তা (প্রশিক্ষণ) অলিখ মণ্ডল বলেন, “রাতের অন্ধকারে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব এবং অবাধ বিচরণ যে ভাবে চলছে তাতে এখানকার কর্মী থেকে রাত-পাহারাদার সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দূর থেকে প্রশিক্ষণ নিতে আসা কেউই এখানে থাকতে চাইছেন না।” হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন, “ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের পাঁচিলের অধিকাংশ জায়গাই ভাঙা। তা মেরামত করতে এবং পাঁচিলের উপরে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। এত বড় জায়গায় দু’তিন জন পুলিশ পাহারা দিলে চলবে না। আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন। এ নিয়ে ওই কেন্দ্রের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটানো হবে।” চুঁচুড়া স্টেশন লাগোয়া ২০৫ একর জমির উপর অবস্থিত সরকারি ধান্য গবেষণা কেন্দ্রটি। |
একপ্রান্ত চুঁচুড়া স্টেশন লাগোয়া, অন্য প্রান্ত হুগলি স্টেশনের কাছাকাছি। চুঁচুড়া-তারকেশ্বর রোডের উপর দু’টি গেট রয়েছে কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য। কেন্দ্রের মূল গবেষণাগার, উদ্যান পালন দফতরের কার্যালয়, গবেষকদের আবাসন এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাশাপাশি। তবে, আবাসনে এখন কেউ থাকেন না। ভয়ে বিকেল ৫টার পরেই কর্মীরা সকলে ফিরে যান। পাহারার জন্য রাতে দু’জন বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মী আছেন। কিন্তু দুষ্কৃতীরা যে ভাবে উপদ্রব চালায়, তাতে তাঁরা বাধা দেওয়ার সাহস না বলে জানান। ওই কেন্দ্রের কর্মীদের অভিযোগ, মাস কয়েক ধরে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব মাত্রা ছাড়িয়েছে। দিনের আলো ডুবতেই তারা ঢুকে অবাধে লুঠপাট চালায়। গবেষকদের আবাসনের জানলা-দরজা যেমন খুলে নিয়ে যাচ্ছে তারা, তেমনই ছাদ থেকে জলের ট্যাঙ্কও চুরি করে নিচ্ছে। আবাসনগুলিও এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দুষ্কৃতীরা লোহার গেট থেকে রাস্তার বিদ্যুৎস্তম্ভ সবই প্রায় কেটে নিয়ে চলে গিয়েছে। চলছে অসামাজিক কাজকর্মও। আগে পুলিশ পাহারা দিলেও এখন তা না থাকায় এই অবস্থা হয়েছে বলে দাবি কর্মীদের। চুঁচুড়া থানা সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ওই এলাকায় রাতে টহলদারি চলে। |