রাজ্যে ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির (এনবিএফসি) তরফে লগ্নিকারীদের টাকা ফেরতের নির্ধারিত সময়সীমা গতকাল শেষ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমানতকারীর স্বার্থ সুরক্ষিত করতে অভিযুক্ত ‘এনবিএফসি’গুলির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সময় নষ্ট করতে চাইছে না ত্রিপুরা।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের আইন অনুযায়ী ওই সব অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে প্রস্তুত হচ্ছে প্রশাসন।
পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা শাসক কিরণ গিত্যে আজ বলেন, ‘‘লগ্নির টাকা আমানতকারীদের ফিরিয়ে দিতে ৪৭টি সংস্থাকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও রোজ ভ্যালি, আই কোর-সহ অধিকাংশ সংস্থাই বহু আমানতকারীর টাকা ফেরত দেয়নি।’’
রাজ্যের অর্থমন্ত্রী বাদল চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা করাই রাজ্য সরকারের মূল লক্ষ্য। এ বিষয়ে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
অর্থ দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, আমানতকারীদের কত টাকা সংস্থাগুলির কাছে রয়েছে, তা জানার পর এ নিয়ে উদ্যোগী হতে পারে রাজ্য সরকার। সে ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, অভিযুক্ত সংস্থাগুলির কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের ‘ত্রিপুরা প্রোটেকশন অফ ইন্টারেস্ট অফ ডিপোজিটার্স (ইন ফিনান্সিয়াল এস্টাবলিসমেন্ট)’ আইন অনুসারেই চলবে সরকার।
জেলাশাসক গিত্যে বলেন, ‘‘সংস্থাগুলিতে আমানতকারীদের লগ্নির হিসেব, তাঁদের বকেয়ার হিসেব এবং অভিযুক্ত সংস্থাগুলির সম্পত্তির পরিমাণ-সহ সমস্ত তথ্য পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা প্রশাসনের তরফে আদালতে জমা দেওয়া হবে।’’ তিনি আরও জানান, এখনও পর্যন্ত রোজ ভ্যালী-সহ ৩৪টি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে লগ্নির টাকা ফেরত না-দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ওই টাকা আমানতকারীদের ফিরিয়ে দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হবে।
সারদা-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে সিবিআই-কে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছিল ত্রিপুরা সরকার। গিত্যে জানিয়েছেন, রাজ্যের আইন অনুযায়ী লগ্নিকারীদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হওয়ার পর আদালতের নির্দেশ মেনেই অভিযুক্ত সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে প্রশাসন। |