বরাহনগর সমবায় ব্যাঙ্ক
বকেয়া ঋণ, লেনদেনে নিয়ন্ত্রণ
নাদায়ী ঋণের জেরে বিপাকে পড়ল আরও একটি সমবায় ব্যাঙ্ক এবং তার কয়েক হাজার গ্রাহক। দীর্ঘ দিন ঋণের বকেয়া আদায় না হওয়ায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বরাহনগর কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেডের লেনদেনে বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। আগামী ছ’মাস কোনও গ্রাহক মোট এক হাজার টাকার বেশি তুলতে পারবেন না। ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে ওই ব্যাঙ্কের মোট অনাদায়ী ঋণ ১২ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা। যার পাওনা সুদই ২৬ কোটি।
শুক্রবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই নির্দেশ গ্রাহকদের জানিয়ে দেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এর পরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। পরিস্থিতি সামলাতে বরাহনগর বি কে মৈত্র রোডে ওই সমবায় ব্যাঙ্কের প্রধান কার্যালয়-সহ পালপাড়া, আলমবাজারে ব্যাঙ্কটির শাখা অফিসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এর আগে এই রকম অনাদায়ী ঋণের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর সমবায় ব্যাঙ্ক, বালি সমবায় ব্যাঙ্ক-সহ রাজ্যের আরও কয়েকটি সমবায় ব্যাঙ্ক।
বরাহনগর কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেড কর্তৃপক্ষ জানান, দুরবস্থার শুরু ২০০৭-এ।
গ্রাহকদের ঋণের বিনিময়ে প্রাপ্য সুদ জমা পড়ছিল না। তার জেরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ব্যাঙ্কটির লেনদেনের উপরে বিধিনিষেধ জারি করে। তখন থেকেই ওই ব্যাঙ্কটি ঋণ দেওয়া, নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা বন্ধ করে দেয়। এর পরেও অনাদায়ী ঋণ ও তার সুদ আদায় করতে পারছিলেন না কর্তৃপক্ষ। ফলে তহবিল তলানিতে গিয়ে ঠেকে। গত ৩০ জুলাই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ওই সমবায় ব্যাঙ্কের যাবতীয় লেনদেনে বিধিনিষেধ জারি করে। জানানো হয়, কোনও গ্রাহক ছ’মাসে মোট এক হাজার টাকার বেশি তুলতে পারবেন না। স্বভাবতই বিপাকে পড়েছেন প্রায় ১৫ হাজার গ্রাহক।
শুক্রবার ব্যাঙ্ক পরিচালনমণ্ডলীর সম্পাদক তপন ঘোষ বলেন, “২০০৮ সালে আমরা দায়িত্বে এসেছি। বিগত পরিচালনমণ্ডলীর দুর্নীতির জন্যই এই অবস্থা। ঋণ দেওয়া এবং তা আদায়ে কোনও নিয়ম মানা হয়নি।” তিনি জানান, প্রায় ৮০ বছরের পুরনো এই সমবায় ব্যাঙ্কে ২০০৮-’০৯ আর্থিক বছর থেকে ঋণ দেওয়া বন্ধ। তার আগে পর্যন্ত দেওয়া ঋণে দুর্নীতি হয়েছে। বরাহনগর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তৃণমূলের রামকৃষ্ণ পাল অবশ্য শুধু বিগত পরিচালনমণ্ডলীর সিপিএম সদস্যদের দায়ী করতে রাজি নন। তিনি বলেন, “সব রাজনৈতিক দলের লোকই দুর্নীতিতে যুক্ত। নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।” তপনবাবু জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি তৈরি হয়েছে। বিগত বোর্ডের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করার কথাও ভাবা হচ্ছে।
শুক্রবার ব্যাঙ্কে গিয়ে সমস্যায় পড়েন অনেক গ্রাহক। এক বাসিন্দা জয় দেবরায় মেয়ের বিয়ের জন্য ১৪ হাজার টাকা তুলতে গিয়ে জানতে পারেন, এক হাজারের বেশি তোলা যাবে না। তিনি বলেন, “ক’দিন পরেই মেয়ের বিয়ে। কী করব, জানি না।” বরাহনগর কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেড কর্মচারী সংগঠনের সম্পাদক রাজীব মিশ্র বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরেই ব্যাঙ্কের অডিট হয় না। বিভিন্ন রকম দুর্নীতির সঙ্গে কিছু কর্মীও জড়িত। বহু বার পরিচালনমণ্ডলীর বৈঠকে এ কথা বলেও লাভ হয়নি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.