অস্ত্রোপচার বিভাগে চিকিৎসকের পদ রয়েছে দু’টি। তার একটিতে দীর্ঘ দিন নিয়োগ হয়নি চিকিৎসক। অন্য জন ছুটি নিয়েছেন। ফলে বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ আরামবাগ হাসপাতালের অস্ত্রোপচার বিভাগটি। মহকুমার ৭৩৮টি গ্রামের প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ কার্যত বঞ্চিত হচ্ছেন পরিষেবা থেকে।
দু’বছর ধরেই এলাকার মানুষ অভিযোগ করছিলেন, উপযুক্ত পরিষেবা মিলছে না ওই বিভাগে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন ওই বিভাগে মোটে এক জন চিকিৎসক ছিলেন। তার জেরে একাধিক বার এলাকার সমস্যায় পড়েছে হাসপাতাল। এমনকী, চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনাও ঘটেছে।
হাসপাতালের সুপার নির্মাল্য রায় বলেন, “অস্ত্রোপচার বিভাগে দু’টি চিকিৎসক পদ রয়েছে। তার মধ্যে এক জন দু’বছর আগেই স্বেচ্ছাবসর নিয়েছেন। তার পর থেকে একজন চিকিৎসক দিয়েই কাজ চালানো হচ্ছিল। কিন্তু তিনিও শারীরিক অসুস্থার কথা জানিয়ে ছুটি নিয়েছেন। ফলে বিভাগটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
তাঁর ক্ষোভ, “অসুবিধার কথা জানিয়ে জেলা এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে বারবার চিকিৎসক চাওয়া হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। বিভাগ বন্ধ রাখার বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে।” হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তনিমা মণ্ডল বলেন, “বিভাগটি সচল রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিছু একটা ব্যবস্থা হবে।” তবে ওই বিভাগের শূন্যপদ পূরণের ব্যাপারে তিনি জানান, বিষয়টি রাজ্য সরকার দেখছে।
শুধু আরামবাগ নয়, বর্ধমান, বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর এবং হাওড়ার সীমানা লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দাও এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। ২৬২টি অনুমোদিত শয্যা থাকলেও প্রতিদিন গড়ে চারশোরও বেশি রোগীর চাপ থাকে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। কোনও রকমে জায়গার ব্যবস্থা করতে হয় তাঁদের। অস্ত্রোপচার বিভাগেই প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী ভর্তি হন।
বেশির ভাগই দুর্ঘটনা বা সংঘর্ষে আহত। বুধবার সকালেই ৩ দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীকে ভর্তি করতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খানাকুল, বর্ধমানের মাধবডিহির ভুরকুণ্ডা, গোঘাটের বদনগঞ্জ থেকে এসেছিলেন ওঁরা। হাসপাতাল ফিরিয়ে দেওয়ায় গাড়ি ভাড়া করে ৪৫ কিলোমিটার দূরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। |