বছর তেরোর এক স্কুল পড়ুয়াকে অপহরণের ঘণ্টা দশেকের মধ্যেই পুলিশ তাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করল। তবে অপহরণকারী কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। বুধবার সকাল দশটা নাগাদ লালগোলার পণ্ডিতপুরের ওই স্কুল ছাত্র বাড়ির বাইরে রাস্তায় মায়ের সঙ্গে বসেছিল। রোজকারের মত চেনা এক ফেরিওয়ালা তাদের কাছে আসে। স্থানীয় একটি হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র অপহৃত খাদিমুল ইসলাম বলে, “ওই ফেরিওয়ালা বাড়ি থেকে প্রায় দুশো মিটার দূরের এক দোকানে লাইটার দিয়ে আসতে বলেন। মা বাড়ির ভিতরে ঢুকে যাওয়ার পর আমি দোকানের পথ ধরি। মাঝপথে মোটরবাইকে করে দু’জন আসে। তারা দোকানে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে। আমি বিশ্বাস করে বাইকে উঠি। তারা আমার মুখে কাপড় চাপা দিয়ে সজোরে বাইক চালিয়ে দূরের এক গ্রামে নিয়ে যায়।” তারপর ওই কিশোরের কাছ থেকে তার বাবা রবিউল ইসলামের নম্বর নিয়ে অপহরণকারীরা ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করে। টাকা না দিলে বা পুলিশকে জানালে ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অপহৃতের পরিবারের দাবি। অপহরণকারীরা সাগরদিঘির গোপালপুরের মজিবর আলি নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার কথা বলে। |
ওই কিশোরের কাকা লালগোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। লালগোলার পুলিশ সাগরদিঘি থানাকে জানায় বিষয়টি। সন্ধ্যা নাগাদ সাগরদিঘির পুলিশ অপহৃতের কাকা ওসিকুল আলম ও তার আরেক আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে হানা দেয় গোপালপুরে। সেখানে প্রথমে মজিবর বা অপহৃত শিশুটির কোনও হদিস পায়নি পুলিশ। বাড়ির মহিলাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। আটক করা হয় মজিবরের বৃদ্ধ বাবাকে। পুলিশ সটান জানায়, অপহৃত ছাত্রকে মুক্তি না দিলে ছাড়া পাবে না প্রৌঢ়। তারপর ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই সাগরদিঘিরই পাটকেলডাঙা গ্রাম থেকে এক ব্যক্তি বাইকে চাপিয়ে ওই কিশোরকে এনে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরের বাবার সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত গণ্ডগোলের জেরেই এই অপহরণ। ওই ঘটনায় জিয়াউর রহমান, খাদেমুল শেখ, মজিবুর আলি ও কাজেম আলি নামে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।” অপহৃতের পরিবার অবশ্য ব্যবসায়ীক লেনদেনের কথা উড়িয়ে দিয়েছে। অপহৃত ওই ছাত্রের জ্যেঠা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “অভিযুক্তরা কেউই পরিবারের পরিচিত নয়। তাদের সঙ্গে টাকা পয়সা সংক্রান্ত লেনদেনের প্রশ্নই ওঠে না।” |