|
|
|
|
|
বয়স্ক শিক্ষায় দেশের ‘লাস্ট বয়’ পশ্চিমবঙ্গ
অনমিত্র সেনগুপ্ত • নয়াদিল্লি |
|
বয়স্ক শিক্ষায় সমস্ত রাজ্যের মধ্যে ‘লাস্ট’ বেঞ্চে বসল পশ্চিমবঙ্গ।
প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও রাজ্যের চিত্রটি আশাব্যঞ্জক ছিল না। বয়স্ক শিক্ষাতেও সেই ধারাই বজায় থাকল। বিহার বা উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যও টেক্কা দিল বাংলাকে।
বয়স্ক শিক্ষার ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির কার কী অবস্থা, খতিয়ে দেখতে চলতি বছরে গোটা দেশে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিল কেন্দ্রীয় মানবম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। মাত্র ৪২ শতাংশ পড়ুয়া পাশ করায় তালিকার একেবারে শেষে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। অথচ গোটা দেশের বয়স্ক শিক্ষার জাতীয় গড় কিন্তু প্রায় সাড়ে ৭৩ শতাংশ। যদিও এই পরীক্ষার প্রামাণ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দাবি, “কারা ওই পরীক্ষা নিয়েছেন, দেখতে হবে। তবে আমি এটুকু জোর দিয়ে বলতে পারি শিক্ষা ও সাক্ষরতার ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের স্থান অনেক ভাল।”
বয়স্ক শিক্ষার পরীক্ষায় পাশের হারে প্রথম স্থানে রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ (৯৬%)। যদিও ওই রাজ্যে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে অনেক কম ছিল বলে জানিয়েছে মন্ত্রক। বড় রাজ্যগুলির মধ্যে মধ্যপ্রদেশ (৯২.৮৩%), বিহার (৮৬.৪৩%) ও উত্তরপ্রদেশ (৮৩.০১%) ভাল ফল করে যথাক্রমে দ্বিতীয়, পঞ্চম ও অষ্টম স্থান দখল করতে সক্ষম হয়েছে।
আশার আলো একটাই। মন্ত্রক জানিয়েছে, বয়স্ক শিক্ষায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে প্রথমে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। গত এক বছরে রাজ্য থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৮৫ হাজার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় এসেছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪৭ শতাংশ সাফল্যের সঙ্গে পরীক্ষা পাশও করেছেন।
২০০৯ সালে বয়স্ক শিক্ষার উপর জোর দিতে সাক্ষর ভারত পরিকল্পনা হাতে নেয় কেন্দ্র। গোটা দেশের ১৫-৩৫ বয়সী নিরক্ষরদের ওই পরিকল্পনার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক ও স্কুল শিক্ষা দফতর। মন্ত্রকের বক্তব্য, ওই পরিকল্পনায় মূলত জোর দেওয়া হয়েছিল মহিলা শিক্ষার উপরে। গত চার বছরে (জুলাই,২০১৩ পর্যন্ত) প্রায় ২.১৩ কোটি নিরক্ষর মানুষ এতে সাক্ষর হয়েছেন বলে মন্ত্রকের দাবি। শুধু সাক্ষর হওয়াই নয়, শিক্ষার্থীরা শেষ পর্যন্ত কতটা শিখেছেন সেটা দেখতেই পরীক্ষাব্যবস্থা চালু করেছে মন্ত্রক। আর সেই পরীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ, অসম, হিমাচলপ্রদেশ, মণিপুরের মতো রাজ্যগুলির ফলাফল যে ভাবে জাতীয় গড়ের থেকে অনেক নীচে।
মন্ত্রকের এক কর্তার বক্তব্য, “নিরক্ষর মানুষদের পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। ওই ব্যক্তিরা যাতে নিয়মিত ভাবে স্কুলে উপস্থিত থাকেন তার জন্য কড়া নজরদারির প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে রাজ্যগুলির সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকে বসবে কেন্দ্র।”
এর আগে নবম দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ১৯৮৮ সালে জাতীয় সাক্ষরতা মিশন পরিকল্পনা হতে নিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু বর্তমান পরিকল্পনায় নিরক্ষরদের সাক্ষর করার পাশাপাশি তারা যত দিন চাইবেন তত দিন পর্যন্ত যাতে পড়াশুনো চালিয়ে যেতে পারেন সেই বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে। কিন্তু চলতি আর্থিক বছরে ওই খাতে যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন খোদ কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী এম এম পল্লম রাজু। তিনি বলেন, “যাতে ওই খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ে সে জন্য যোজনা কমিশনের কাছে আবেদন করা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|