হকি স্টিক হাতে জনা পঁচিশেক যুবক নির্বিচারে ভাঙচুর করল একের পর এক গাড়ি। অভিযোগ, ঘটনাস্থলের অদূরে পুলিশ থাকলেও তারা তখন ছিল কার্যত নীরব দর্শক। পরে অবশ্য বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত দুই যুবককে। ঘটনাস্থল, খিদিরপুরের ডক ইস্ট বাউন্ডারি রোডের ফুলবাগান এলাকা। অভিযোগ, বুধবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই ঘটনায় একটি ট্যাক্সি-সহ মোট ১৮টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। মারধরও করা হয় চার-পাঁচ জনকে। উত্তেজনা থাকায় বৃহস্পতিবার সারা দিন এলাকায় টহল দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে ১১টা নাগাদ খিদিরপুরের বাবুবাজার থেকে তিন যুবক একটি ট্যাক্সিতে উঠে বেহালা যাওয়ার কথা বলে। কিন্তু চালক রাজেশ প্রজাপতি যেতে অস্বীকার করেন। তা সত্ত্বেও ওই তিন যুবক ট্যাক্সি থেকে নামেনি। অভিযোগ, তারা সকলেই মত্ত অবস্থায় ছিল এবং ট্যাক্সিতে বসেও তারা মদ্যপান করছিল। রাজেশবাবু ওই তিন সওয়ারিকে নিয়ে সোজা চলে আসেন তাঁর পাড়া ফুলবাগানে। অভিযোগ, তখন ওই তিন যুবক তাঁকে মারধর করতে শুরু করে। ঘটনাটি দেখে এলাকার কয়েক জন এসে ওই তিন যুবকের উপরে চড়াও হন। তার মধ্যেই ওই যুবকদের এক জন ফোনে খবর পাঠায় বাবুবাজারে। |
পুলিশ জানিয়েছে, খবর পেয়ে বাবুবাজার থেকে জনা পঁচিশ যুবক ফুলবাগানে এসে পাল্টা মারধর করতে শুরু করে। গোলমাল থামাতে গেলে উত্তেজিত ওই যুবকদের হাতে আক্রান্ত হন গুড্ডু প্রজাপতি নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা। তাঁর মাথায় ও ডান হাতে চোট লাগে। এ ছাড়াও জখম হন এলাকার মুন্না রায়, তারকেশ্বর সাউ, দীনেশ রায় নামে কয়েক জন। দীনেশবাবুর গাড়িও ভাঙচুর হয়। গুড্ডুর অভিযোগ, “পুলিশের সামনেই আমরা মার খাই। এর পরে রাস্তার ধারে থাকা গাড়িগুলি হকি স্টিক দিয়ে ভাঙচুর করে ওরা। পরে আরও পুলিশ আসার পরে বাবুবাজারের ছেলেরা পালিয়ে যায়।”
বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ট্যাক্সি এবং অন্যান্য গাড়ির কোনওটার সামনের কাচ, কোনওটার পিছনের কাচ ভাঙা। এলাকায় চাপা উত্তেজনা। দীনেশবাবু বলেন, “এই রকম গোলমাল এলাকায় আগে কোনওদিন হয়নি। রাতে আমাদের গাড়ি রাস্তার ধারেই দাঁড় করানো থাকে। কোনও দিন গাড়িতে একটি আঁচড়ও পড়েনি।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোলমাল চলার সময়ে কাছেই ছিলেন সাত-আট জন পুলিশকর্মী। কিন্তু তাঁরা গোলমাল থামাতে এগিয়ে আসেননি। দক্ষিণ বন্দর থানা সূত্রে অবশ্য বলা হয়েছে, সাত-আট জন পুলিশকর্মীর পক্ষে ওই মারমুখী জনতাকে সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল না। তবে তাঁরাই তাড়াতাড়ি থানায় খবর পাঠানোয় বিশাল বাহিনী গিয়ে ওই যুবকদের ছত্রভঙ্গ করে এবং দু’জনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতারও করে। |