এখন বিয়ে দিও না, আর্তি ইয়েমেনের নাবালিকার
উটিউব মারফত ছড়িয়ে পড়ল ছোট্ট একটি ভিডিও ক্লিপ। সেই ভিডিওটির বিষয়বস্তুই ফিরছে সবার মুখে মুখে।
কিন্তু কী এমন দেখা যাচ্ছে তাতে? ভিডিওটিতে চালু করতেই ভেসে আসছে ইয়েমেনের ছোট্ট মেয়ে নাদা আল-আহদালার ক্ষীণ কণ্ঠ। বছর এগারোর মেয়েটি বলছে, “এত ছোট বয়সে আমি বিয়ে করতে চাই না। এর থেকে আমার মরে যাওয়া ভাল। আমার স্বপ্নগুলো পূরণ করতে দাও। এটা আমার বিয়ে করার সময় নয়। আমি স্কুলে যেতে চাই। ওরা জোর করে আমার বিয়ে দিয়ে দিতে চায়। তাই বাড়ি থেকে পালিয়েছিলাম।” মা-বাবার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে আর নিজের বাড়িতে ঠাঁই হয়নি নাদার। মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ায় সমাজের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছেন যে তাঁরা। তাই এখন নাদার নতুন ঠিকানা ইয়েমেনের রাজধানী শহর সানা-র একটি শিশু আবাসন।
মাত্র দু’সপ্তাহ হয়েছে ইউটিউব মারফত প্রকাশ্যে এসেছে নাদার ওই ভিডিওটি। ইতিমধ্যেই ৮০ লক্ষেরও বেশি লোক দেখে ফেলেছে সেটি।
নাদা আহদাল
তবে এই কঠিন সময়ে নাদা পাশে পেয়েছে কাকা আবদেল সালামকে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “যখনই শুনেছিলাম নাদার বিয়ে, তখনই তার হবু বরকে ডাকি আমার বাড়িতে। বলেছিলাম নাদা এখনই বিয়ের জন্য তৈরি নয়। বিয়ে করলে নাদার ভবিষ্যতের ক্ষতি হবে। ও এখনও অনেক ছোট।”
ইয়েমেনের সরকারি তথ্য ও রাষ্ট্রপুঞ্জের নথি বলছে, ইয়েমেনের ১৪% মেয়েরই বিয়ে হয়ে যায় ১৫ বছর বয়সে। অন্য দিকে, ৫২% মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় ১৮ পেরোনোর আগেই। এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন, নারী আন্দোলনের কর্মী লাইজেল গার্নথলৎজও। টেলিফোনে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ইয়েমেনে মেয়েদের অবস্থা খুবই খারাপ। মেয়ে হলেই বাবা-মায়ের চিন্তা শুরু হয়ে যায় তার বিয়ে নিয়ে।
তাকে পাত্রস্থ করার তাড়ায় কৈশোর কাটতে না কাটতেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় তাদের।
গার্নথলৎজও আরও বলেন, “ছোট বয়সে বিয়ে দিলে যে মেয়েকে মৃত্যুর দিকে এক ধাপ এগিয়ে দেওয়া হয় সেটা অনেকেই বোঝেন না। এত ছোট বয়সে সন্তান হলে মেয়েটি মারা যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। আবার বেঁচে থাকলে মারাত্মক কোনও রোগও বাসা বাঁধতে পারে মেয়েটির শরীরে। ইয়েমেনের আসল সমস্যাটা হল শিক্ষার অভাব। ভাবলে অবাক হতে হয়, এ দেশে এখনও বিয়ে নথিভুক্তকরণের কোনও নিয়মই নেই। তাই কার কখন বিয়ে হচ্ছে তা জানার উপায়ও থাকে না। দেশের হাসপাতালের অবস্থাও খারাপ। এখনও বাড়িতেই সন্তান প্রসব করানো হয়।”
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও ২০০৮ সালে ইয়েমেনেরই নুজুদ আলি নামে বছর ন’য়ের একটি মেয়ে দু’মাসের বিয়ে অস্বীকার করে খবরের শিরোনামে এসেছিল।
ভিডিওটি দেখার পর ইয়েমেনের শিশু অধিকার সংস্থা ‘সেয়াজ’ অবশ্য নাদার সব কথা মেনে নিতে রাজি নয়। সংস্থার মুখপাত্রের বক্তব্য, নাদার সব কথা সত্যি নাও হতে পারে।
আপাতত নাদার সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছেন ইয়েমেনের একটি মহিলা সমিতির প্রেসিডেন্ট রামজিয়া আল-ইরানি। তিনি জানিয়েছেন, সরকারকে এই বিষয়টিকে খতিয়ে দেখার জন্য আবেদন জানানো হবে তাদের তরফে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.