এ বার থেকে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্রতিদিন হাজিরা দেওয়ার সময় দাঁড়াতে হবে বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ড্যান্স রেজিস্টারের সামনে। বর্ধমান রাজ কলেজে এমন ব্যবস্থা শুরু হল বৃহস্পতিবার থেকে। কিন্তু এতে আপত্তি জানিয়ে অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিলেন ৬২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী।
কলেজ সূত্রের খবর, ওই যন্ত্রের সামনে দাঁড়িয়ে একটি সুইচ টিপলে কোনও ব্যক্তির কলেজে ঢোকার সময় ও কলেজ থেকে বেরোনোর সময় রেকর্ড হয়ে যাবে। কলেজের অধ্যক্ষ সুভাষচন্দ্র নন্দী বলেন, “কর্মক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনা, কখন কে আসছেন বা চলে যাচ্ছেন তা একার পক্ষে জানা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক ক্লাস ফাঁকা যাচ্ছে। অথচ হাজিরায় উপস্থিত রয়েছেন সকলেই। এর থেকে বেরিয়ে আসতেই কলেজে ওই যন্ত্র বসানো হয়েছে।” অধ্যক্ষের দাবি, একজন শিক্ষককে কলেজে টানা অন্তত পাঁচ ঘণ্টা ও একজন শিক্ষাকর্মীর প্রতিদিন হাজির থাকতেই হবে। বাস্তবে তা না হওয়ায় কলেজের পরিচালন সমিতি বাধ্য হয়ে, উচ্চশিক্ষা দফতর ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেই এই যন্ত্র বসিয়েছে।
বিক্ষুদ্ধ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের তরফে শিখা আদিত্য, প্রদ্যোৎ মাইতি ও শিক্ষাকর্মীদের তরফে বুদ্ধিদেব মণ্ডল ও রবিশঙ্কর চৌধুরী বলেন, “সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূতভাবে কলেজ কর্ত্তৃপক্ষ ওই যন্ত্র বসিয়েছেন। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ও রাজ্য সরকারের নিয়ম লঙ্ঘন করে বসানো হয়েছে। কলেজে হাজিরা দেওয়ার ব্যাপারে সই ছাড়া অন্য পদ্ধতির সাহায্য নেওয়ার কথা নেই। তাই আমরা ওই পদ্ধতিতে হাজিরা দেওয়ার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
কলেজের তৃণমূলের দখলে থাকা ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৃজন কুণ্ডু ও ক্রীড়া সম্পাদক পিঙ্কু ক্ষেত্রপালের কথায়, “আমাদের কাছে প্রায়ই অভিযোগ আসে শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে ক্লাস হচ্ছে না। এতে সমস্যা হচ্ছে গরীব পরিবার থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের। তাই আমরা ওই যন্ত্র বসানোকে স্বাগত জানিয়েছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায় বলেন, “উপাচার্যের কাছে এই হাজিরার পদ্ধতি নিয়ে কয়েক জন এসে প্রতিবাদ জানিয়ে গিয়েছেন। উপাচার্য আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বিধি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পেশ করতে বলেছেন কর্মসমিতিতে। এই পদ্ধতিতে কলেজে কর্মীদের প্রবেশ ও প্রস্থান নথিভূক্ত করলে তা সচ্ছতা আনবে।” |