পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই মন্তেশ্বরের দেনুড় পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের দলীয় কোন্দল শুরু হয়েছিল। আর এই দলীয় কোন্দলের জেরেই বুধবার রাতে ওই এলাকায় পুড়ল তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়।
দলীয় কোন্দলের ফলে সমস্যা হয় প্রার্থীদের টিকিট বণ্টন নিয়েও। দলের ব্লক সভাপতির কাছে প্রতীক যাওয়ার আগেই প্রতীক চলে যায় দেনুড়ের একটি পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির আসনে। অন্য ভাবে প্রতীক আনতে সক্রিয় হয় দলেরই একটি গোষ্ঠী। কোন্দল মেটাতে ভোটের আগে দলের নেতারা দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে। তবে নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর দেখা যায়, তৃণমূল ওই পঞ্চায়েতে হেরে গিয়েছে। যদিও গতবার এই পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল। এ বার পঞ্চায়েতের ১০টি আসনের মধ্যে বামেরা পায় ৮টি আসন। একটি আসন পায় তৃণমূল। বাকি আসনটি পায় এআইইউডিএফ।
দলের হারের সম্পর্কে দেনুড় অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বাপ্পাদিত্য রায়ের অভিযোগ, গত বার যারা পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ছিল, তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ কম ছিল। ফলে তাদের পক্ষে রায় দেননি মানুষ। বুধবার সন্ধ্যায় দলীয় দুই কর্মী সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অনুপ সাঁতরাকে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে বসেছিলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, হঠাৎ প্রায় ২০ জন যুবক লাঠি, রড নিয়ে চড়াও হয়। বাপ্পাদিত্যবাবু বলেন, “ওরা পঞ্চায়েতে হারের জন্য আমাদের দায়ী করে মারতে মারতে দলীয় কার্যালয় থেকে বের করে দেয়। তার পর কার্যালয়ের ভিতর থেকে টিভি, ঘড়ি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বের করে খড়ের চালে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনাটি বিস্তারিত ভাবে মন্তেশ্বর থানায় জানানো হয়েছে।” এই ঘটনার পিছনে কারা রয়েছে, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বলতে লজ্জা হলেও ওরা আমাদের দলই করে।” এই ঘটনা সম্পর্কে বৃহস্পতিবার মন্তেশ্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সজল পাঁজা বলেন, “আজ মামুদপুর পঞ্চায়েতের একটি আসনে ভোট চলছে। ভোট মেটার পরেই দেনুড়ের বিষয়টি দেখব।” জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নির্বাচনে বহু জায়গাতেই অন্তর্ঘাত হয়েছে। দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ জানান, জেলার নানা প্রান্ত থেকে অন্তর্ঘাতের খবর এসেছে। এ ব্যাপারে দল একটি তালিকা বানিয়েছে। যারা এ কাজে যুক্ত তাঁদের বিরুদ্ধে দল কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে।
|