ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক সংঘর্ষ অব্যাহত উত্তরবঙ্গের তিন জেলায়। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার মালদহ, কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুরে ঘটনাগুলি ঘটেছে। শাসক ও বিরোধীদের ওই গোলমালের জেরে উত্তেজন ছড়ায়। ইসলামপুর, করণদিঘি, বক্সিরহাট, কোচবিহার, বৈষ্ণবনগর, মানিকচক থেকে সংঘর্ষ, হামলা, বোমাবাজির খবর এসেছে। মঙ্গলবার রাতে বৈষ্ণবনগর থানার বাখরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতে ঠাকুরদাস মণ্ডল পাড়ায় বোমার আঘাতে চার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী জখম হয়েছেন। |
তাঁদের দুইজনকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি দুইজনকে বেদরাবাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ মানিকচক থানার চৌকি মিরদাদাপুর পঞ্চায়েতের খানপুরে এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর গর্ভবতী স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের দাবি, মারের চোটে ওই মহিলার একটি কান বেশ কিছুটা অংশ কেটে গিয়েছে। রেনু ঘোষ নামে মহিলাকে মানিকচক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুই মামলার অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।” রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “নিবার্চন শেষের পর জেলার নানা এলাকায় কংগ্রেস ও সিপিএম আমাদের কর্মী সমর্থকদের মারধোর করছে। পুলিশ সুপারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” ওই রাতে চার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী বাড়ি ফিরছিলেন। মন্ডলপাড়ার কাছে তাঁদের দিকে বোমা মারে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘কোনও ঘটনার সঙ্গে দলের কর্মীরা যুক্ত নন।”
এ অবস্থা কোচবিহারেও। সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকদের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১০ জন জখম হয়েছেন। ৪ জন কোচবিহার জেলা হাসপাতালে এবং ৩ জন রামপুর হাসপাতালে ভর্তি। তাঁরা সকলকেই দলীয় সমর্থক বলে দাবি করেছে তৃণমূল। মঙ্গলবার রাতে বক্সিরহাট থানার রামপুরে ঘটনাট ঘটেছে। পুলিশ জানায়, রাতে রামপুর বাজার এলাকায় সিপিএম ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তৃণমূলের বক্সিরহাট ব্লকের কার্যকরী সভাপতি স্বপন সাহা বলেন,“পরিকল্পিত ভাবে সিপিএমের লোকজন হামলা চালায়।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শিখা আদিত্য বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের সমর্থকদের উপর বাড়িতে হামলা চালায়।” পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ওই রাতে কোচবিহারের ফরওয়ার্ড ব্লকের ঘুঘুমারি অঞ্চল সম্পাদক সুবল করের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তবে তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সংঘর্ষ অব্যাহত উত্তর দিনাজপুরে। মঙ্গলবার রাতে করণদিঘি এবং ইসলামপুর এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। করণদিঘিতে কংগ্রেসের সমর্থকদের উপর তৃণমূল হামলা চালায় বলে অভিযোগ। কংগ্রেসের দাবি, তাঁদের ৮জন সমর্থক আহত হয়েছেন। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আগডিমঠি এলাকাতে সিপিএম সমর্থকদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বুধবার রাতে দিনহাটার নিগমনগরের ঘাটপাড়ে দলের যুব নেতা শিবশঙ্কর চক্রবর্তীর বাড়িতে তৃণমূল হামলা চালায় বলে অভিযোগ তুলেছে ফরওয়ার্ড ব্লক। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, ওই নেতার নেতৃত্বে তাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। কোচবিহারের কামাখ্যাগুড়িতেও সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ হয়। তৃণমূলের দাবি, তাদের এক সমর্থক আহত হয়। বারোকাটা এলাকায় দলীয় কার্যালয় পোড়ানো হয় বলে অভিযোগ সিপিএমের। |