|
|
|
|
|
|
কুবের উবাচ |
অভয় কুমার নন্দী (২৯) • স্ত্রী পরিণীতা (২৩)
কর্তা সরকারি কর্মী • স্ত্রী গৃহবধূ • সন্তান এখনও নেই • থাকেন ভাড়া বাড়িতে • বাবা-মা থাকেন অন্যত্র
• বাড়িতে টাকা পাঠাতে হয় না • অফিস থেকে চিকিৎসার খরচ মেলে • স্বপ্ন নিজের ফ্ল্যাট ও গাড়ি
• চান বছরে এক বার বেড়াতে যেতে • অবসরের পর বিদেশ ভ্রমণের ইচ্ছে • ছোট ব্যবসা করতেও আগ্রহী |
|
|
মাসে নিট আয় |
খরচ (মাসে) |
১৯,০০০ |
৯,৯৪৮ |
|
টাকা রাখেন (মাসে) |
• পিপিএফ |
২,১০০ |
• অফিস এমপ্লয়ি ফান্ড |
৫০০
(সেপ্টেম্বরে পাবেন ৬,৪০০ টাকা) |
• রেকারিং |
১,০০০
(সেপ্টেম্বর ’১৩-য় পাবেন ১২,৫৬৩ টাকা) |
• রেকারিং |
২,০০০
(ফেব্রুয়ারি ’১৪-য় পাবেন ৪৫,৬১৬ টাকা) |
• রেকারিং |
১,০০০ (মার্চ ’১৪-য় পাবেন ১৩,০৮০ টাকা) |
• রেকারিং |
১,০০০ (মার্চ ’১৫-য় পাবেন ২৬,২৯৭ টাকা) |
• এলআইসি জীবন আনন্দ |
১,৭২২ (২৫ বছরের, বিমা মূল্য ৫ লক্ষ) |
• এলআইসি জীবন সরল |
১,০০০ (৩১ বছরের, বিমা মূল্য ৪.৫ লক্ষ) |
সম্পদ |
• এনএসসি |
৮,০০৫ (পাবেন এপ্রিল ’১৭-য়) |
• এনএসসি |
৩,২০২ (পাবেন নভেম্বর ’১৭-য়) |
|
|
|
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
শৈবাল বিশ্বাস |
|
অভয় ও পরিণীতা নতুন দম্পতি। সবে এক বছর বিয়ে হয়েছে। এখনও সন্তান নেই। জীবনে অনেক স্বপ্ন রয়েছে তাঁদের। তার জন্য সামান্য হলেও সঞ্চয় শুরু করেছেন। তবে, এখনও অনেক পথ যাওয়া বাকি। তাই আজ আমরা সে ভাবেই দু’জনকে পরামর্শ দেব। কিছু লক্ষ্যের কথা অভয় নিজেই জানিয়েছেন। পাশাপাশি, আমরা তাঁদের জন্য আরও কিছু লক্ষ্যের কথা মাথায় রাখতে বলব।
এখানে যে-সব সঞ্চয়ের কথা বলব, তার মধ্যে বেশ কিছু কিন্তু অভয়ের রেকারিং-এর মেয়াদ শেষের পর শুরু হবে। কারণ এখন তাঁর হাতে প্রায় ৮০০ টাকা থাকছে মাসের শেষে। রেকারিং শেষ হলে সেই পরিমাণ দাঁড়াবে ৫ হাজারের বেশি। তাই লগ্নি করাও হবে অপেক্ষাকৃত সহজ।
ছোট্ট ছোট্ট পায়ে...
সারা বছর কাজের চাপে যখন নাভিশ্বাস ওঠে। তখন কয়েক দিনের ছুটি পেলে মন্দ হয় না। আর সেই ছুটি উপভোগ করার সেরা উপায় বলতে প্রথমেই মনে আসে বেড়াতে যাওয়ার কথা। কিন্তু সমস্ত খরচই যে-ভাবে বাড়ছে, তাতে বেড়ানোর রেস্ত আসবে কোথা থেকে?
এ বছরই বেড়াতে যেতে হয়তো তাঁর সমস্যা হবে। যদিও ঘাবড়ানোর কিছু নেই। বরং সেপ্টেম্বরে যে-রেকারিং ডিপোজিটের টাকা হাতে আসবে, তা দিয়েই এ বারের প্ল্যান সেরে ফেলুন। হয়তো খুব বেশি দূর যেতে পারবেন না, কাছাকাছি হলেই বা ক্ষতি কী?
তবে আগামী বছরের জন্য এখন থেকেই কোমর বেঁধে লেগে পড়ুন টাকা জমাতে। আমার মতে, সমস্ত রেকারিং-এর মেয়াদ ফুরানোর পর একটি মাত্র রেকারিং ডিপোজিট শুরু করুন। প্রতি মাসে ২,০০০ টাকা রাখুন। দেখবেন বেড়াতে যাওয়া স্থির করার ১৫ দিন আগে যেন সেই টাকা হাতে আসে। তবে এই রেকারিং যেন ২,০০০ টাকা না-ছাড়ায়।
এই পথ যদি না শেষ হয়
অন্য অনেকেরই মতো অভয়ের ইচ্ছে একটি গাড়ির। ৬ লক্ষ টাকার গাড়ি কিনতে তাঁকে কিছু টাকা তো ডাউনপেমেন্ট করতেই হবে। ২০১৪-র ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে রেকারিং থেকে তাঁর হাতে আসবে ৫৮,৬৯৬ টাকা। তা দিয়ে ডাউনপেমেন্ট করলে, তাঁকে আরও প্রায় ৫.৪০ লক্ষ টাকা ঋণ নিতে হবে। ৭ বছরের জন্য যার মাসিক কিস্তি পড়বে প্রায় ৯,০০০ টাকা (১০% সুদ ধরে)। এই টাকা দেওয়া এখন অভয়ের পক্ষে সম্ভব নয়। |
|
কিন্তু, যদি এখন থেকে প্রস্তুত হওয়া যায়, তা হলে পাঁচ বছর পরে এই অঙ্কটাই ততটা বড় মনে হবে না। তবে তার জন্য আগামী ২ বছরে যে-রেকারিং-এর টাকা হাতে আসবে, তা ২০১৯ পর্যন্ত স্থায়ী আমানতে রাখতে হবে। হিসাবটা এক বার দেখে নিই— |
লগ্নি
(টাকায়) |
মেয়াদ
(বছর) |
আনুমানিক
রিটার্ন |
৪৫,৬১৬ |
৫ |
৭১,১৮৪ |
১৩,০৮০ |
৫ |
২০,৪১১ |
২৬,২৯৭ |
৪ |
৩৭,৫৪২ |
মোট (৯% সুদ ধরে): ১,২৯,১৩৭ |
|
ফলে তখন যদি অভয় ৪.৭০ লক্ষ টাকার ঋণ নেন, তা হলে মাসিক কিস্তি পড়বে প্রায় ৭,৭৩৮ টাকা (১০% সুদ ধরে)। আগামী দিনে বেতন বাড়লে এই কিস্তি দেওয়া তাঁর পক্ষে অসম্ভব হবে না।
সন্তানের শিক্ষা
অভয় ও পরিণীতার সবেমাত্র এক বছর বিয়ে হয়েছে। এখনও কোনও সন্তান নেই। কিন্তু ছেলে-মেয়ের জন্য সঞ্চয় পরিকল্পনা করতে তো আপত্তি নেই। তাই আমার মতে, সন্তানের কথা মাথায় রেখে ১,০০০ টাকা সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (এসআইপি)-এ লগ্নি করুন। ১২% রিটার্ন ধরলে ২০ বছর পর যার অঙ্ক দাঁড়াবে ৯,৯৯,১৪৭ টাকা। সেই টাকা আপনি সন্তানেরর উচ্চশিক্ষার কাজে লাগাতে পারবেন।
স্বপ্নের বাড়ি
নিজের একটা বাড়ির স্বপ্ন তো সবারই থাকে। অভয়ও ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু এই টাকায় সংসার চালিয়ে ফ্ল্যাট বা বাড়ি কেনা এখনই তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তবে হতাশ হয়ে পড়ারও কোনও কারণ নেই। এখনই বাড়ি কিনতে না- পারলেও, প্রস্তুতি শুরু করতে অসুবিধা কোথায়? তাই রেকারিং শেষ হলে পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলুন। মাসে ন্যূনতম ১,০০০ টাকা করে সেখানে রাখুন। বেতন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পিপিএফে সঞ্চয়ের পরিমাণ আরও বাড়ান। এ ভাবে বাড়ির মূল্যের অন্তত ৫০% টাকা জমা হলে তা দিয়ে বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার কাজে হাত দিন। বাকি টাকার জন্য গৃহঋণ নিন।
অবসরের পরিকল্পনা
১) পিএফের টাকা এই খাতে কাজে লাগবে।
২) এলআইসি-র মেয়াদ শেষে হাতে পাওয়া টাকা অবসরের জন্যই ব্যবহার করুন।
৩) হাতে থাকা আরও ১,০০০ টাকা এসআইপি-তে লগ্নি করুন।
আরও দূরে...
বিদেশে বেড়াতে যাওয়ার জন্য তহবিল গড়ে তোলার কাজে হাত দিন। সেখানে এনএসসি এবং অফিস এমপ্লয়ি ফান্ড থেকে পাওয়া টাকা রাখুন। আগামী দিনেও একই ভাবে হাতে টাকা এলেই এখানে জমিয়ে রাখুন। যেহেতু অবসরের পরে বিদেশ যাওয়ার ইচ্ছে, তাই এখন হাতে অনেকটাই সময় পাচ্ছেন টাকা জমানোর। যে-কারণে দীর্ঘ দিন ধরে সরাসরি শেয়ার বাজারে টাকাও লগ্নি করতে পারেন আপনি।
স্বাস্থ্যবিমা
অফিস থেকে চিকিৎসার সুবিধা পেলেও, হাতে থাকা বাকি ৮০০ টাকা দিয়ে একটি ভাল ফ্যামিলি ফ্লোটার বিমা কিনে ফেলুন।
ব্যবসায় নামার পথে
বাড়িতে বসে কম্পিউটার মারফত রোজগারের উপায় জানতে চেয়েছেন অভয়। আমার মতে, বিভিন্ন সংস্থাই রিপোর্ট, ডেটা বা গ্রাহক প্রোফাইল তৈরি ইত্যাদি কাজ আউটসোর্স করে। যোগাযোগ করতে পারেন তাদের সঙ্গে। পাশাপাশি, ওয়েব পেজ ডিজাইন করার কাজও করতে পারেন।
|
(অনুরোধ মেনে নাম পরিবর্তিত) |
|
|
|
|
|