আমি রাজ্য সরকারের কর্মী। সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের তৃতীয় দফায় হাওড়ার পাঁচলা ব্লকে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছিলাম। বাইশ বছরের কর্মজীবনে এটি ছিল দশম নির্বাচনী দায়িত্ব। বুথে কতর্ব্য পালন করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হল, তা আমার জীবনে প্রথম তো বটেই, তার সঙ্গে দেশের এক জন উন্নতিকামী মানুষ হিসাবে পীড়াদায়কও।
বুথটি যে এলাকায় ছিল সেখানকার প্রায় সব অধিবাসীই দরিদ্র। রাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে মাত্র একটি দলের এজেন্টরাই বুথে উপস্থিত ছিল। সেই দলের কর্মীদের সঙ্গে এলাকার অধিবাসীদের এক অদ্ভুত সমঝোতা চোখে পড়ল। ভোট পর্বের শুরুতে অনিয়ম লক্ষ করে এজেন্টদের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়লাম। কিছু কথা কাটাকাটির পর উগ্র মেজাজে আমাকে হুমকি দেওয়া হল, সেই এলাকায় তাদের কথাই শেষ কথা। তাদের বিরুদ্ধে বেশি কথা বললে, তাদের মাথা গরম হয়ে যেতে পারে। তখন তার ফল খারাপ হতে পারে। পাশেই রাজ্য পুলিশ পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনাটা প্রত্যক্ষ করল। নিরুপায় হয়ে মুখ বন্ধ করলাম। অনিয়ম চলতেই থাকল।
ভোটাররা দলে দলে আসছেন। হইহই করে লাইন দিচ্ছেন। হাসিমুখে বুথে ঢুকে পরিচয়পত্র হাতে পোলিং অফিসারের সামনে দাঁড়াচ্ছেন। টিপছাপ দেওয়ার পর ব্যালট পেপারগুলো ভাঁজ করে তাঁদের দেওয়া হচ্ছে। পর মুহূর্তেই ভাঁজ করা ব্যালট পেপারগুলো হাসিমুখে এজেন্টদের হাতে তুলে দিয়ে তাঁরা বুথ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন।
নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহারের পদ্ধতিটা হাস্যকর মনে হল। আমাদের পাশাপাশি দুটি বুথে কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ছিল না। ভোট পর্ব প্রায় শেষ হওয়ার মুখে তাদের এক অফিসার বুথে এলেন। তিনি ভিতরে ঢুকতেই এক জন এজেন্ট বলে উঠল, “খুব পিসফুল ভোট স্যার’। অফিসার কারও সঙ্গে কোনও কথাবার্তা না-বলে বুথ থেকে বেরিয়ে গেলেন। সারা দিনে ওই মিনিটখানেকের জন্যই তাঁদের উপস্থিতি। কোনও অবজার্ভার বুথে যাননি। সেক্টর অফিসার মাত্র দু’বার হাজিরা দিয়েছেন। কিন্তু কত পোল হল তার খবর নিয়েই তিনি ফিরে গিয়েছেন। বুথের পরিস্থিতি তাঁকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। তিনি জড়সড় ভাবে, সেই এলাকার প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের অক্ষমতার কথা জানিয়ে দায় এড়িয়েছেন।
শুরুর ঘটনা বাদ দিলে পরিপূর্ণ শান্তিতেই ভোট পর্ব শেষ হয়েছিল।
কৃষ্ণেন্দু বসাক। কলকাতা-৭৩
|
সন্তোষ রাণা লিখেছেন, “ভূমি সংস্কারের পর কৃষকরা সমবায় তৈরি করলে...উৎপাদন ক্ষেত্র খুলে যেত।” (‘উন্নতি হয়েছে,...’, ১৭-৭) কথাটা ঠিক। কিন্তু দরিদ্র কৃষকরা নিজে থেকে এই সমবায় গড়তে পারে না। সরকারি আনুকূল্যেই, বিশেষ করে বামফ্রন্ট সরকারের পক্ষেই এটা করা সম্ভব ছিল। ভূমি সংস্কারের ফলে ১৯৮৪ সালে সরকারের অধিগৃহীত জমি ছিল ১২,৬৭,৮১৯ একর, যা ২০১০ সালে এসে দাঁড়িয়েছিল ১৪,০৪,০৯০ একর। সমবায়ের পরিবর্তে জমিগুলি ব্যক্তিগত ভিত্তিতে বণ্টন করা হয়েছিল। ভূমিহীন কৃষক জমি পেয়ে খুশি হয়েছিল। উৎপাদনও বেড়েছিল। কিন্তু সময়ের কালক্ষেপে পারিবারিক ভাবে জমি খণ্ডিত হয়ে যাওয়ায় এবং চাষের খরচ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই জমি হস্তান্তরিত হয়েছিল সম্পন্ন কৃষক বা মজুতদারের কাছে।
দিলীপ মুখোপাধ্যয়। কলকাতা-১
|
আমার চিঠির প্রসঙ্গে প্রতিবেদকের উত্তর ও শোভনলাল বক্সির লেখা (‘মিলাডা গঙ্গোপাধ্যায়’, সম্পাদক সমীপেষু, ২৫-৭) পড়লাম।
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের প্রতিষ্ঠা যে ১৯৫৪ সালে হয়েছে সেটা স্বীকৃত। আর মিলাডা গঙ্গোপাধ্যায় সাউথ পয়েন্টে আসেন (তাঁরই পুত্রের বক্তব্য অনুযায়ী) ১৯৫৫ সালে। দ্বিতীয়ত, সেই সময়ের নথিপত্র থেকে খুব সহজেই জানা যাবে যে, তখন স্কুলটির অধ্যক্ষ ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সতীকান্ত গুহ নিজে।
শোভনলাল বক্সির লেখাটি ভাল লাগল। প্রতিষ্ঠা দিবসে স্কুলের সবাইকে আইসক্রিম খাওয়ানোর রেওয়াজ ছিল ঠিকই, কিন্তু তা আসত ‘কোয়ালিটি’ থেকে।
ইন্দ্রনাথ গুহ। কলকাতা-১০৭ |