জয়ী নির্দলদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে চিন্তায় তৃণমূল
লের বিক্ষুব্ধেরা নির্দল হিসাবে ভোটে লড়লে তাঁদের বাড়িঘর ভেঙে জ্বালিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই বিস্তর জলঘোলা করেছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু সেই নির্দলরাই যদি জয়ী হন, তা হলে তাঁদের সঙ্গে দলের সম্পর্ক কেমন দাঁড়াবে, সেটা বাতলাননি তিনি। যা নিয়ে সংশয়ে আছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও। জোট ভাঙার পরে কংগ্রেস-তৃণমূলের সম্পর্ক যতই তিক্ত হোক, ভোটের ফল বেরোনোর পরে কী সমীকরণ দাঁড়ায়, তা নিয়েও হিসেব-নিকেশ চলছে।
বস্তুত, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে এ বার বহু বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা-কর্মী টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়েছেন। কোথাও আবার শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বামেরা সরাসরি দলের প্রতীকে প্রার্থী দাঁড় করাননি। নির্দিষ্ট কোনও নির্দল প্রার্থীর পাশে থেকেছেন। দক্ষিণবঙ্গের দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা ও বীরভূমে শাসক দলের বহু নির্দল প্রার্থী দাঁড়িয়ে গিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের কোনও কোনও জেলাতেও নির্দলদের ভূমিকা বড় হয়ে উঠতে পারে। কৌশলগত কারণে নেতারা তা প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও একান্ত আলাপচারিতায় মেনে নিচ্ছেন। তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ হিসাবে যাঁরা ভোটে দাঁড়িয়েছেন, ভোটে জিতে তাঁরা যে তৃণমূলের বোর্ড গঠনে সহায়তা করতে পারেন, সেই সম্ভাবনা খুবই প্রবল।
নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুরের মতো জমি আন্দোলনের সূতিকাগৃহে ক্ষমতা ধরে রাখার বিষয়ে প্রত্যয়ী তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বা মন্ত্রী বেচারাম মান্নারা। তবে এই সব এলাকাতেও ‘নির্দল-কাঁটা’ কিছু ক্ষেত্রে থেকেই গিয়েছে। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক গুড়িয়া আবার বলেন, “নন্দীগ্রামে নির্দলেরা বড় ভূমিকা নিতে চলেছে।” এই নির্দলদের অনেকেই তৃণমূলের বিক্ষুদ্ধ অংশ বলেই তাঁর দাবি। নন্দীগ্রামে নির্দলরা বেগ দিতে পারবে না বলে অবশ্য পাল্টা দাবি শুভেন্দুর।
তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার কথায়, “জেলাপরিষদ বা পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে অতটা নয়। তবে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে কিছু জেলায় নির্দলদের ভূমিকা বড় হয়ে দেখা দিতে পারে।” পঞ্চায়েত গঠনে জয়ী নির্দল প্রার্থীদের সাহায্য নেওয়ায় দলের নীতিগত আপত্তি থাকার কথা নয় বলেই মনে করেন ওই নেতা। কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব তৃণমূলের বিরুদ্ধে যতই তোপ দাগুন, ফল বেরোনোর পরে স্থানীয় স্তরে দু’পক্ষের কাছাকাছি আসার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তিনি। এ বিষয়ে কংগ্রেসের এক রাজ্য নেতা বলেন, “এ বার তৃণমূলের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা হয়নি। তা সত্ত্বেও সিপিএমকে হারাতে নিচুতলায় দেখেছি কংগ্রেস-তৃণমূলের অলিখিত জোট হয়েছে। আবার কোথাও সিপিএম-তৃণমূলও এককাট্টা হয়েছে কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে।” দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যা-ই নির্দেশ দিন, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে এই প্রবণতা ঠেকানো প্রায় অসম্ভব বলেই মনে করেন ওই কংগ্রেস নেতা।
কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান অবশ্য বলেন, “আমরা সব সময়েই সুবিধাবাদী জোট করার বিপক্ষে। কিন্তু পঞ্চায়েত স্তরে সেই আদর্শ কতটা রক্ষা করা যাবে সেই সংশয় থেকেই যায়।” এ বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দুবাবুর সাবধানী জবাব, “এই ধরনের সিদ্ধান্ত ফল বেরোনোর পরের পরিস্থিতির উপরে অনেকটাই নির্ভর করবে। এখনই জোর দিয়ে কিছু বলা যায় না। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্নে আমাদের ব্লক-স্তর এবং স্থানীয় নেতাদের মতামত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.