এক নাবালিকার দেহ উদ্ধারের পরে তাকে খুনের অভিযোগ উঠল তার বাবা ও সৎমা-র বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে মুর্শিদাবাদের ইসলামপুর সীতানগরে নিজেদের বাড়িতেই সুফিয়া খাতুন (১৫) নামে ওই কিশোরীর দেহ পাওয়া যায়। গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে দেহটি ঝুলছিল। গ্রামবাসীদের এবং সুফিয়ার মামার বাড়ির আত্মীয়স্বজনের অভিযোগ, বাবা ও সৎমা-র বেধড়ক মারধরে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। তারপরে তার দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মৃণাল মজুমদার বলেন, “গ্রামবাসীদের অভিযোগে কিশোরীর বাবা ও সৎমাকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন কিশোরীর মামার বাড়ির লোকজনও।”
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত শুক্রবার সুফিয়া পাশের গ্রাম বাবলাবোনায় মামার বাড়ি বেড়াতে যায়। সুফিয়া সে সময়ে বাড়িতে কাউকে কিছু না বলে ১০ টাকা নিয়ে গিয়েছিল বলে তার বাবা ও মা সন্দেহ করেন। সুফিয়ার দিদিমা আদরা বিবি বলেন, “শনিবার রাতে সুফিয়া নিজের বাড়ি ফিরে গেলে ওর বাবা-মা দু’জনেই তাকে প্রচণ্ড মারধর করে। তাতেই ও মারা গিয়েছে বলে আমার সন্দেহ।” গ্রামবাসী লোকমান হকেরও অভিযোগ, “বাবা-মা’র মার সহ্য করতে না পেরে ওই কিশোরী মারা যায় বলে আমাদের সন্দেহ। পরে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে সুফিয়ার বাবা-মা ঘরের মধ্যে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ওই কিশোরীকে ঝুলিয়ে দেয়। আমরা তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কী ভাবে সুফিয়ার মৃত্যু হল। তখন দেখি তাঁদের কথাতে অসঙ্গতি রয়েছে। এর পরেই থানায় খবর দেওয়া হয়।”
সুফিয়া তার বাবার প্রথম পক্ষের সন্তান। তার দুই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তার একটি বৈমাত্রেয় ভাই রয়েছে। সুফিয়া পড়ত স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্রের অষ্টম শ্রেণিতে। তার প্রধানশিক্ষিকা (মুখ্যসম্প্রসারিকা) লতিফা খাতুন বলেন, “সুফিয়া আমাদের জানিয়েছিল যে, বাড়িতে ওর উপরে প্রায়ই নির্যাতন হত। অধিকাংশ দিনই অভুক্ত অবস্থায় স্কুলে আসত। তবে আত্মহত্যার করার মতো মেয়ে সুফিয়া ছিল না। পড়াশোনাতেও ভাল ছিল।” |