পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের মুখে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে সিপিএমের এক কর্মীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নিহতের নাম সন্ন্যাসী বিশ্বাস (৩৫)। বাড়ি নদিয়ার মুরুটিয়া থানার সীমান্তঘেঁষা গ্রাম কাগজিপাড়ায়।
স্থানীয় তারকগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সদস্য সন্ন্যাসীবাবুকে খুনের অভিযোগে কমল রায় ও উপল রায় নামে কাগজিপাড়ারই দুই তৃণমূল কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। রবিবার ধৃতদের তেহট্ট আদালতে হাজির
|
সন্ন্যাসী বিশ্বাস |
করানো হলে বিচারক তাঁদের ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দেন। তেহট্টের এসডিপিও সুনীল শিকদার বলেন, ‘‘নিহতের স্ত্রীর অভিযোগে খুনের মামলা রুজু হয়েছে। গ্রামে পুলিশ পিকেট বসেছে।’’
কাঁটাতারের বেড়া লাগোয়া গ্রাম কাগজিপাড়ায় এক চিলতে ঘরে থাকতেন এলাকায় সিপিএমের সক্রিয় কর্মী হিসাবে পরিচিত সন্ন্যাসীবাবু। ছেলে বিক্রম ও মেয়ে প্রভাতী তারকগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম ও সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। নিহতের স্ত্রী মিনতি বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘‘শনিবার রাত আটটা নাগাদ বাড়ি থেকে আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে যায় কমল ও উপল। ওরাই স্বামীকে মেরেছে।” শনিবার রাত সাড়ে নটা নাগাদ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে জঙ্গলের ভিতর সন্ন্যাসীবাবুর রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁর দেহে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন ছিল।
সঙ্গে সঙ্গে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। নিহতের কাকা সুব্রত বিশ্বাস ও দাদা বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘‘আমরা সবাই সিপিএম করি। ভোটের আগে থেকেই তৃণমূলের লোকজন আমাদের শাসাচ্ছিল। ভোট মিটতে সব মোটামুটি স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, যেভাবে সন্ন্যাসীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তৃণমূলের লোকজন মেরে ফেলল, তাতে আমরা আতঙ্কিত।’’ তেহট্টের সিপিএম বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘সন্ন্যাসীবাবু আমাদের সক্রিয় কর্মী। ভোটের ফলের আগে আমাদের কর্মীকে খুন করে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের অবশ্য দাবি, “এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। সিপিএম অহেতুক এটা নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে।’’
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ধৃত কমল ও উপল শনিবার সন্ধ্যায় সন্ন্যাসীবাবুকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। কিছু পরে তিন জনই গ্রামে ফেরেন। রাতে ফের উপল ও কমল সন্ন্যাসীবাবুকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। নিছক রাজনৈতিক শত্রুতার কারণে খুন, না কি অন্য কারণ রয়েছে, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। |