|
|
|
|
পশ্চিমে শুধু জেলা পরিষদে ভাল ফলের আশায় বামেরা
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সব প্রশ্নের হিসেব মিলতে চলেছে। পরিষ্কার হতে চলেছে ভোট-ছবি। আজ, সোমবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগণনায় পশ্চিম মেদিনীপুরে ১০ হাজার ২৫৭ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে। তবে চাপানউতোর সে অর্থে নেই। ভোটের আগেই জেলার ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৫৮টি তৃণমূলের দখলে চলে গিয়েছে। শাসক ও বিরোধী শিবিরের আলোচনাতেও ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের বিপুল জয়ের ইঙ্গিত মিলছে। বাম- শিবির নিশ্চিত, এ বার আর গ্রাম পঞ্চায়েত-পঞ্চায়েত সমিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখা যাবে না। এই দুই স্তরে বেশিরভাগ আসন তৃণমূলের দখলে যাবে। তবে বামেদের আশা, জেলা পরিষদের ফল ততটা খারাপ হবে না। যদিও তৃণমূল-শিবির নিশ্চিত, জেলা পরিষদের ৬৭টি আসনের মধ্যে ৫০টির বেশি আসনে জয় শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন জেলায় বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি হয়েছে। বড় গোলমাল হয়নি। তবে ফলপ্রকাশের পর বড় অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে। গণনার দিন এবং তার পরে জেলা জুড়ে অশান্তির আশঙ্কায় পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে বামেরা। নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “জেলায় শান্তি থাকবে কি না, তার অনেকটা নির্ভর করে শাসক দলের উপর। গত দু’বছর ধরে যারা সন্ত্রাস করল, তারা যদি অশান্তি না করে, তাহলে জেলায় অশান্তি হবে না।” অশান্তির আশঙ্কা অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছে শাসক তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন হয়েছে। ফলপ্রকাশের পরও জেলায় শান্তি বজায় থাকবে।” অশান্তি এড়াতে গণনা কেন্দ্রগুলোর সামনে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনীও। |
নির্বাচনের আগে থেকে জেলায় ধারাবাহিক সন্ত্রাস চলছে। দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রমণ আরও বাড়বে। তবে যে কোনও মূল্যেই আমরা গণতন্ত্র রক্ষা করার চেষ্টা করব।
দীপক সরকার | সিপিএম জেলা সম্পাদক |
শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন হয়েছে। ফলপ্রকাশের পরও জেলায় শান্তি বজায় থাকবে। কর্মীদের বলেছি, জিতলে আনন্দ করবেন। বিজয়োৎসব করবেন। কিন্তু, প্ররোচনায় পা দেবেন না।
দীনেন রায় | জেলা তৃণমূল সভাপতি |
|
পশ্চিম মেদিনীপুরে ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতে সব মিলিয়ে ৪৭১১টি আসন। ভোটগণনায় ভাগ্য নির্ধারণ হবে ১০২৫৭ জন প্রার্থীর। গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৪৬টি আসন এবং পঞ্চায়েত সমিতির ১৩৩টি আসন বাদে বাকি আসনগুলোয় গণনা হবে। এই ১০৭৯টি আসনের মধ্যে ৭টি বাদে বাকি সবই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নিয়েছে তৃণমূল। জেলায় এ বার ভোটার ছিলেন ৩৪ লক্ষ ৭৬ হাজার ৮৪১ জন। ভোট পড়েছে ৮৫.৯০ শতাংশ। বহু বুথে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়। ২৯টি ব্লকের মধ্যে সব থেকে বেশি ভোট পড়েছে জঙ্গলমহলের সাঁকরাইলে, ৯০.৮৬ শতাংশ। সব থেকে কম ভোট পড়েছে দাসপুর ২ ব্লকে, ৭৫.৫৫ শতাংশ। জঙ্গলমহলের জেলায় ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে? রবিবারও চুলচেরা হিসেবনিকেশ চলছে বিভিন্ন মহলে। এ বার প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েতের গণনা হবে। তারপর পঞ্চায়েত সমিতি এবং সব শেষে জেলা পরিষদের গণনা। ভোটগণনা শেষ হতে রাত হবে বলেই অনুমান। এ বারের নির্বাচন দু’পক্ষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সিপিএম চাইছে, হারানো জমি পুনরুদ্ধার করে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে। আর তৃণমূল চাইছে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জেলা পরিষদের ক্ষমতা দখল করে পূর্ব মেদিনীপুরের মতো পশ্চিমেও ‘পরিবর্তন’ সম্পূর্ণ করতে। পাখির চোখ আগামী লোকসভা নির্বাচন। তারই মহড়া পঞ্চায়েত ভোটে কোন পক্ষ এগিয়ে গেল, স্পষ্ট হবে আজ। |
|
|
|
|
|