|
|
|
|
মোদী নিয়ে আশ্বস্ত হয়ে উজ্জীবিত আডবাণী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
কোন্দলে আপাতত বিরতির আশা। আর যা-ই হোক নরেন্দ্র মোদীকে আপাতত প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী ঘোষণা করা হচ্ছে না। এই ব্যাপার আশ্বস্ত হওয়ার পরে লালকৃষ্ণ আডবাণী এখন অভিমান সরিয়ে রেখে গোটা দলকে উজ্জীবিত করার চেষ্টায় নেমে পড়েছেন। সঙ্ঘের হস্তক্ষেপে আডবাণীও মেনে নিয়েছেন, মোদীই এখন দলের জনপ্রিয়তম নেতা। ফলে তাঁকে সামনে রেখেই নির্বাচন হবে।
এই ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের। দীর্ঘদিনের কোন্দল সরিয়ে রেখে বিজেপি-র শীর্ষ নেতারা যাতে একজোট হয়ে লোকসভা ভোটের প্রচার ও প্রস্তুতির কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন সে ব্যাপারে বিশেষ তৎপর রয়েছেন তিনি। বিজেপি সূত্রের ইঙ্গিত, অগস্টের পয়লাতেই দিল্লিতে বিজেপি-র প্রচার কমিটির সব সদস্যের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন আরএসএসের শীর্ষ নেতারা। ভাগবত নিজেও তাতে যোগ দিতে পারেন। এছাড়াও থাকবেন ভাইয়াজি জোশী, সুরেশ সোনি, দত্তাত্রেয় হোসাবোলে, কৃষ্ণগোপালের মতো সঙ্ঘ-নেতারা।
অমরাবতীতে আরএসএস-এর সাম্প্রতিক বৈঠকেই স্থির হয়েছিল, দেশের কোথায় কোন প্রসঙ্গ নিয়ে লোকসভার প্রচার করা হবে। বিজেপি তত দিনে মোদীর নেতৃত্বে প্রচার কমিটি গঠনের কাজ সেরে ফেলেছে। আডবাণীর সঙ্গেও মোদীর একপ্রস্ত বোঝাপড়াও হয়ে গিয়েছে। আডবাণীর উষ্মা মেনে যেমন সঙ্ঘে সুরেশ সোনির ডানা ছেঁটে বকলমে স্বয়ং ভাগবত গোটা বিষয়টির উপর নজরদারি করছেন, তেমন আডবাণীর কথামতো এখনই মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করা হচ্ছে না এখন। |
|
|
|
লালকৃষ্ণ আডবাণী |
নরেন্দ্র মোদী |
মোহন ভাগবত |
|
আশ্বস্ত আডবাণী কাল দলের সদর দফতরে এক অনুষ্ঠানে মোদীর নাম না করেও যে ভাবে দলকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা চালিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট আগের অবস্থান থেকে অনেকটাই সরে এসেছেন তিনি। গোয়াতে মোদীর নাম প্রচার কমিটির প্রধান হিসাবে ঘোষণার পর তিনি যে ভাবে দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন, সেই অবস্থান থেকে সরে এসে তিনিই এখন দলকে পথ দেখাচ্ছেন। কার্যত ভোটপ্রচারে মোদীর নেতৃত্বকে মেনে নিয়েই কাল তিনি বলেছেন লোকসভায় দল রেকর্ড ভাঙ্গা ফল করবে।
যদিও দলের অনেকে কিন্তু এটাকে ব্যাখ্যা করছেন ভিন্ন ভাবে। দলের নিচু তলা থেকে শুরু করে সিংহভাগ শীর্ষ নেতার মতো আডবাণীও বুঝছেন, মোদীই দলে সব চেয়ে জনপ্রিয় মুখ। কিন্তু সম্প্রতি যে সব সমীক্ষা প্রকাশ হচ্ছে, সেখানে কোথাওই বিজেপি-কে ১৭০টির বেশি আসন দেওয়া হচ্ছে না। এতেই আডবাণী অনেক বেশি উৎসাহিত। কারণ, মোদীকে প্রচারের মুখ করা সত্ত্বেও দল দু’শোর গণ্ডি পেরোতে না পারলে আডবাণীরই নৈতিক জয় হবে। কারণ, সে ক্ষেত্রে সরকার গড়ার জন্য শরিকদের উপর নির্ভরশীলতা বাড়বে দলের। এবং তাতে মোদীর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ আরও কণ্টকময় হবে।
দল অবশ্য তার সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখে আস্থা রেখেই বিহার ও উত্তরপ্রদেশে প্রচারের ছক তৈরি করে ফেলেছে। গোবলয়ের সব থেকে বড় দু’টি রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে মোদীর প্রচারের নকশাও ছকে ফেলেছে দল। সংসদের বর্ষা অধিবেশনে সরকারের মতিগতি আঁচ করে দেশ জুড়ে মোদীর প্রচারের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হবে। যদিও তার মধ্যে সব থেকে বেশি জোর দেওয়া হবে গোবলয়ের ওই দুই রাজ্যেই। বিজেপি সূত্রের মতে, আডবাণীরা আগে যাত্রায় বেরোতেন। কিন্তু তার প্রাসঙ্গিকতা অনেক ফিকে হয়ে গিয়েছে। তাই মোদীর ‘রোড-শো’-এর আয়োজন করা হবে। দিনে ১৫০-২০০ কিলোমিটার যাত্রার ব্যবস্থা করা হবে। ব্যবহার করা হবে থ্রি-ডি প্রযুক্তিও, যার মাধ্যমে প্রচার করে মোদী বাজিমাত করেছেন গুজরাতে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে একই সঙ্গে মোদীর প্রচার হবে অনেক জায়গায়।
রোড-শোর মধ্যে যাতে অন্তত দু’টি বড় জনসভা করা হয়, সে দিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। রাতে যাতে মোদী কোনও গ্রামে থাকতে পারেন, সেখানে মানুষজনের সঙ্গে বসে নৈশভোজ সারতে পারেন, সেই ভাবনাও রয়েছে। রাতে খুব বেশি জনসমাগম হলে মোদী তাঁদের উদ্দেশে বক্তৃতাও করতে পারেন। খুব শীঘ্রই প্রচারে সারা দেশে নজরদারির জন্য দিল্লিতে একটি ওয়ার রুমও খোলা হবে। |
|
|
|
|
|