মেয়রের দেহরক্ষী-সহ ধৃত ৩ ‘প্রতারক’ পুলিশ
হাতে পরিচয়পত্র। কোমরে গোঁজা রিভলভার। রবীন্দ্র সরণির এক ব্যবসায়ীর অফিসে ঢুকে পাঁচ জন নিজেদের পরিচয় দিয়েছিলেন সিআইডি অফিসার হিসেবে। সন্দেহ হয়নি ওই ব্যবসায়ীর। তল্লাশি শেষে অফিসের ছ’লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করে ওই ‘অফিসারেরা’ ব্যবসায়ীকে ভবানী ভবনে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু ভবানী ভবন পর্যন্ত না গিয়ে তাঁকে মাঝপথেই নামিয়ে দেন তাঁরা। কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইলও। এতেই সন্দেহ হয় বড়বাজারের ওই ব্যবসায়ী সত্যনারায়ণ শর্মার। তিনি পুলিশকে ঘটনাটি বিস্তারিত জানান।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে, বড়বাজারের রবীন্দ্র সরণিতে এই ঘটনাটি ঘটে। তদন্তে নেমে ওই অফিসের বাইরের সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখে রবিবার মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে তিন জন পুলিশকর্মী। বাকি দু’জন ব্যবসায়ী। ধৃতদের নাম জয়নাল আবেদিন, হাফিজুর রহমান, ওয়াসেদ মোমিন, নাজিমুল হক এবং সাত্তার। এদের মধ্যে জয়নাল এবং হাফিজুর কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, জয়নাল কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দেহরক্ষী। তাঁর ধরা পড়ার খবর শুনে মেয়র বলেন, “আইন ওঁর বিরুদ্ধে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।” ওয়াসেদ রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর ষষ্ঠ ব্যাটালিয়নের কর্মী বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতদের থেকে উদ্ধার হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকাও।
গত বছর পুলিশ মানিকতলায় এক ডাকাতির ঘটনায় এক সাব ইনস্পেক্টর-সহ দুই পুলিশ অফিসারকে গ্রেফতার করেছিল। তার পরে ফের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে।
কী ভাবে প্রতারিত হলেন সত্যনারায়ণবাবু? পুলিশের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিকেলে জয়নাল, হাফিজুর এবং ওয়াসেদ সিআইডি অফিসার সেজে নাজিমুল এবং সাত্তারের সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর গদিতে হানা দেন। সত্যনারায়ণবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, তিন জন অফিসে ঢুকে বলেন, তাঁর ব্যবসা বেআইনি। তাঁরা তল্লাশি চালাবেন। সেই মতো ওই তিন জন তল্লাশি চালিয়ে ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ। পরে তাঁকে ভবানী ভবনে নিয়ে যেতে চান। তাঁদের গাড়িতেই সত্যনারায়ণবাবুকে তুলে ভবানী ভবনের বদলে মাঝরাস্তায় নামিয়ে দেন তাঁরা। এর পরেই সত্যনারায়ণবাবু পুলিশকে সব জানান।
কী ভাবে ধরা পড়লেন ভুয়ো সিআইডি অফিসারেরা? এক পুলিশকর্তা জানান, তদন্তে প্রথমে কোন সূত্র ছিল না পুলিশের কাছে। অফিসের ভিতরে থাকা সিসিটিভি-র ছবি দেখেও কাউকে চিহ্নিত করা যাচ্ছিল না। পরে বাইরের সিসিটিভি-র ছবিতে দেখা যায়, এক জনের কোমরে বন্দুক গোঁজা। এবং একই যুবক বারবার যাতায়াত করছেন। এর পরেই স্থানীয় ওই যুবকের পরিচয় জানতে পারেন তদন্তকারীরা। সিসিটিভি-র ছবি দেখেই এক জন পুলিশকর্মীকে চিহ্নিত করা হয় বলে তদন্তকারীদের দাবি। পরে মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন পরীক্ষা করে দেখা যায়, ওই পুলিশকর্মী ঘটনার সময়ে এলাকাতেই ছিলেন। রবিবার দুপুরে নিউ মার্কেট থানা এলাকা থেকে জয়নাল, হাফিজুর এবং ওয়াসেদকে ধরে পুলিশ। পরে ধরা পড়েন নাজিমুল এবং সাত্তার। বাকি টাকা উদ্ধারের জন্য ধৃতদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.