আজ, সোমবার পঞ্চায়েত ভোটের গণনার দিন তাঁদের উপরে হামলার আশঙ্কা করছেন মঙ্গলকোটের নির্দল প্রার্থীরা। একই আশঙ্কা কংগ্রেস ও সিপিএমের।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোট ব্লকের পঞ্চায়েত ভোটের গণনা হবে স্থানীয় একেএম হাইস্কুলে। অশান্তির আশঙ্কা থাকায় আলাদা আলাদা জমায়েত করে গণনাকেন্দ্রে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস এবং সিপিএম। পুলিশ জানিয়েছে, কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোটে বিরোধী প্রার্থী ও এজেন্টদের পুলিশি প্রহরায় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।
তবে প্রশাসনের আশ্বাস সত্ত্বেও মঙ্গলকোটে নির্দল প্রার্থীদের (বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল) উপরে হামলার অভিযোগ উঠছেই। শনিবার সন্ধ্যায় মঙ্গলকোটের বটতলা থেকে পূর্ব নওয়াপাড়া যাওয়ার পথে ডিভিসি সেচখালের কাছে তিন বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল সমর্থককে অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামীরা মারধর করে বলে অভিযোগ। |
কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি ভাটপাড়ায় জখমেরা।— নিজস্ব চিত্র।
|
তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বাসাপাড়ায় সূচপুর গণহত্যায় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তৃণমূলের শহিদ স্মরণের অনুষ্ঠান ছিল। উদ্যোক্তা ছিলেন কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজের ভাই কাজল শেখ, যিনি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মঙ্গলকোটে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধী গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত। মঙ্গলকোট থেকে প্রায় দেড়শো জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বাসাপাড়ার ওই সভায় যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ভাটপাড়ার নির্দল প্রার্থী স্বপ্না খাতুনের স্বামী জিল্লার রহমান, তৃণমূলের টিকিটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী পঞ্চায়েত সমিতির রিনা বেগমের ছেলে শেখ আসরফ আলি ওরফে সেন্টু ও মীর মহম্মদ তাজ। তাঁরা যখন মোটরবাইকে করে ফিরছিলেন তখন তাঁদের একদল দুষ্কৃতী পথ আটকায় ও মারধর করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় গুরুতর জখম অবস্থায় এক জনকে মঙ্গলকোট ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নির্দল প্রার্থী স্বপ্না খাতুনের স্বামী জিল্লার রহমানের অভিযোগ, “আমরা যাতে সোমবার গণনাকেন্দ্রে না যেতে পারি সে জন্যই মারধর করা হল। বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি।” নির্দলদের পাশে দাড়িয়েছেন আহত শেখ আসরফ আলির বাবা তথা বর্ধমান জেলা তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক (গ্রামীণ) শেখ লিয়াকত আলিও। তাঁর অভিযোগ, “অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামী বাসেদ আলির লোকজনেরা একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। আমার ছেলেকেও মারধর করা হয়েছে।”
ভোটের দিন পূর্ব নওয়াপাড়া ও ভাটপাড়া এলাকায় নির্দল প্রার্থীদের (বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল) ও তৃণমূলের সরকারি প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় বোমাবাজি হয়। মৃত্যু হয় এক জনের। এর পরে নির্দল প্রার্থীরা কয়েক দিন আগেই কাটোয়ার মহকুমাশাসক, নির্বাচন কমিশন-সহ প্রশাসনের নানা স্তরে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন, অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামী শেখ আব্দুল বাসেদ গণনাকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। শনিবারের ঘটনার পরে সেই ঘটনাই সত্য প্রমাণিত হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, “মঙ্গলকোটে সব ঠিক আছে। কোথাও অশান্তি নেই। নির্দল প্রার্থীদের মারধরের কথা জানা নেই।” অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শেখ আব্দুল বাসেদও। যদিও এই ঘটনার পরে শনিবার গভীর রাতেও ওই এলাকায় বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে বাসেদ আলির অনুগামীদের বিরুদ্ধে। |