তাঁর সরকারকে না জানিয়ে ঝাড়খণ্ডের জলাধার থেকে জল ছাড়ার অভিযোগে সেখানকার কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়খণ্ড সরকার অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। একইসঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রের কংগ্রেস জোট সরকারকেও তুলোধোনা করেন মমতা। শনিবার বিধানসভায় মমতা অভিযোগ করেন, ঝাড়খণ্ড সরকার শুক্রবার রাত তিনটে থেকে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। জল ছাড়ার তিন ঘণ্টা পর সরকারি ভাবে পশ্চিমবঙ্গকে জানানো হয় বলে তাঁর অভিযোগ। মমতার কথায়, “বারবার বলেছিলাম জল ছাড়ার আগে আমাদের সতর্ক করতে। কোনও সতর্কতা ছাড়াই জল ছাড়া হল। এর নিন্দা করছি।” তাঁদের ক্ষোভ ঝাড়খণ্ড সরকারকে জানানোর জন্য তিনি সভার মধ্যেই রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্দেশ দেন। |

আগাম সতর্কতা। চলছে স্পিড-বোট সারানোর কাজ।
পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল |
তবে ঝাড়খণ্ডের কোনও বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়নি বলে জানান সুবর্ণরেখা মাল্টিপারপাস প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পের প্রশাসক (অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার) অমিতাভ কৌশল জানান, চাণ্ডিল বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়নি। প্রবল বৃষ্টিতে গালুডিহি ‘ব্যারাজ’ থেকে ৩৮৫০ কিউসেক জল স্বাভাবিক ভাবেই বার হয়েছে (নরম্যাল ডিসচার্জ)। তাঁর দাবি, “শুক্রবার রাত ২টোয় সেই তা পশ্চিম মেদিনীপুরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের সুপারিন্টেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারকে জানানো হয়েছিল।”
ঝাড়খণ্ডের ছাড়া জলে পশ্চিম মেদিনীপুরের কিছু অঞ্চল জলভাসি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই জলে এ দিন সুবর্ণরেখার জল বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে বলে জেলা প্রশাসনেরও দাবি। বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে বলে জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত জানান। ভরা বর্ষায় পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইল, গোপীবল্লভপুর, কেশিয়াড়ি, দাঁতন-সহ সুবর্ণরেখা তীরবর্তী এলাকা বানভাসি হলে ঝাড়খণ্ড সরকারকে তিনি ছেড়ে দেবেন না বলেও হুমকি মমতার। কংগ্রেস শাসিত না হওয়ায় তাঁর রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্র চক্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর কথায়, “প্রত্যেক ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সংস্থা হস্তক্ষেপ করছে। বলতে খারাপ লাগছে, অগণতান্ত্রিক চক্রান্ত চলছে এই সরকারের বিরুদ্ধে।” |