একটা পেশ না হওয়া রিপোর্ট। তাতে গুরুনাথ মইয়াপ্পনকে নিয়ে কী আছে না আছে, কেউ জানে না। সম্পূর্ণ বায়বীয় একটা বস্তু। কিন্তু সেটাই যে কলকাতার রবিবাসীয় বৈঠকের চব্বিশ ঘণ্টা আগে বোর্ড কর্তাদের দ্বিধাবিভক্ত করে দেবে, কে ভেবেছিল!
শহরের শ্রাবণের মেঘাছন্ন আকাশের মতোই অনিশ্চয়তার মেঘে ঢাকা পড়েছে বোর্ড নিযুক্ত তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট পেশ। স্পষ্ট করে কেউ জানেই না, রবিবারের বৈঠকে আদৌ রিপোর্ট পেশ করা হবে? না হবে না? শনিবার রাতে রাজীব শুক্ল, রত্নাকর শেট্টির মতো বোর্ডের শীর্ষকর্তারা ঢুকে পড়ার পরেও যা স্পষ্ট নয়।
এক দল বোর্ড কর্তা স্পষ্ট বলছেন, তদন্ত কী ভাবে হয়েছে, কাকে কাকে ডাকা হয়েছে, কেউ জানে না। জানে না, আদৌ গুরুনাথ মইয়াপ্পন বা রাজস্থান রয়্যালস মালিক রাজ কুন্দ্রাকে ডাকা হয়েছে কি না। শোনা যাচ্ছে, রাজ কুন্দ্রা নাকি বোর্ড নিযুক্ত কমিশনের সামনে হাজিরা দিতে অস্বীকার করেছেন। প্রশ্ন উঠছে, কুন্দ্রার ব্যাপারটা তা হলে কী হল? এই গোষ্ঠীর বক্তব্য, তদন্তের খুঁটিনাটি যখন জানা নেই, তখন রবিবার সেই তদন্তের রিপোর্ট পেশ করার কোনও যুক্তিও নেই। বরং পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটিতে সেটা পাঠানো হোক। তখন দেখা যাবে।
যার পাল্টাও সটান পেশ করা হচ্ছে। শ্রীনি-ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, তামিলনাড়ুর বিচারপতিদের তদন্তের খুঁটিনাটি জানাতে হবে, এমন কোথাও বলা ছিল না। তা হলে আজ সেই প্রশ্ন উঠছে কেন? বরং তাঁরা চাইছেন, রিপোর্ট পেশ করা হোক। সেটা হলে বোর্ড মসনদে শ্রীনি-র প্রত্যাবর্তনের রাস্তা আরও মসৃণ হয়। আরও বলা হচ্ছে, রবিবার তা হলে কী হবে? কোনও সিদ্ধান্তই যদি না নেওয়া যায়, তা হলে ব্যাপারটাই তো পুরো নিরামিষ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ ললিত মোদীর শাস্তি হবে কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়। বোর্ডের অন্তবর্তিকালীন প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়ে দিয়েছেন, মোদীর শাস্তির ব্যাপারে তিনি ঢুকতে চান না। বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট অরুণ জেটলি এখনও শহরে আসেননি। রবিবার সকালে ভুবনেশ্বর থেকে তিনি আসছেন। জেটলি কী রিপোর্ট তৈরি করেছেন মোদী নিয়ে, সেটাও পরিষ্কার নয়। তা হলে রবিবার হবেটা কী?
শ্রীসন্তদের শাস্তি দেওয়ার ব্যাপার নিয়ে কথা উঠছে। স্পট ফিক্সিং কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব যাঁকে দেওয়া হয়েছিল, সেই রবি সাওয়ানির রিপোর্ট জমা পড়ে গিয়েছে। যেখানে নাকি সাওয়ানি লিখেছেন যে, আইপিএলের সময় শ্রীসন্তের গতিবিধি যথেষ্ট সন্দেহজনক ছিল। কেউ কেউ প্রস্তাব দিচ্ছেন, শ্রীসন্তদের শাস্তি রবিবারই নিয়ে ফেলা হোক। ঠিক যেমন নেওয়া হয়েছিল টি পি সুধীন্দ্রদের ক্ষেত্রে। নইলে ব্যাপারটা পাঠাতে হয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে। যা আরও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। দ্বিতীয় ব্যাপার যেটা ঘটতে পারে সেটা হল, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের সূচি কাটছাঁট। দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ডের সিইও হারুন লর্গ্যাটকে নিয়ে রীতিমতো অসূয়ায় ভুগছে ভারতীয় বোর্ড। পাশাপাশি ডালমিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও সুমধুর নয়। মনে করা হয়, ২০১১ বিশ্বকাপের সময় ইডেন থেকে বিশ্বকাপের ম্যাচ নিয়ে যাওয়ার পিছনে প্রধান ভূমিকা তৎকালীন আইসিসি সিইও লর্গ্যাটেরই ছিল। জানা গেল, ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা প্রস্তাবিত তিন টেস্ট, সাত ওয়ান ডে ও দু’টো টি টোয়েন্টির প্রস্তাব কোনও ভাবেই মানতে রাজি নয় বোর্ড। পরিবর্তিত সূচিতে নাকি একটা টেস্ট ও দু’টো ওয়ান ডে কমানো হচ্ছে। |