বিধানসভায় তাঁর উপরে হামলার ঘটনায় রাজ্যের দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন সিপিএমের বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, গৌরাঙ্গবাবু শনিবার তৃণমূলের যে সাত বিধায়কের নামে হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেছেন, মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ এবং কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না তাঁদের অন্যতম। পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, অভিযোগটিকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করা হবে কি না, সে ব্যাপারে আইনি পরামর্শ নেওয়া হবে।
গৌরাঙ্গবাবুর অভিযোগ, গত বছর ১১ ডিসেম্বর অধিবেশন চলাকালীন বিধানসভা কক্ষে তৃণমূলের কয়েক জন বিধায়কের হাতে তিনি এবং তাঁর দলের আর এক বিধায়ক দেবলীনা হেমব্রম প্রহৃত হন। আহত গৌরাঙ্গবাবুকে বিধানসভার ডিসপেনসরিতে দেখানোর পরে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দিনই এসএসকেএম তাঁকে ছেড়ে দেওয়ায় তিনি ভর্তি হন এক নার্সিংহোমে। পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লির এইমসে।
সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে গৌরাঙ্গবাবু বিধানসভায় মারধরের ঘটনা নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালতে তিনি অভিযোগ জানান এসএসকেএম হাসপাতালের বিরুদ্ধেও। তাঁর দাবি, সেখানে গুরুত্ব দিয়ে তাঁর চিকিৎসা করা হয়নি। গাফিলতি হয়েছে। তাই তাঁকে এইমস-এ যেতে হয়েছিল। গত ৮ জুলাই আদালত রায় দেয়, স্থানীয় থানায় তিনি অভিযোগ জানাতে পারেন। সেই রায়ের ভিত্তিতেই গৌরাঙ্গবাবু এ দিন সুভাষ নস্কর, বিশ্বনাথ কারক, তোয়াব আলি ও দলের বিধায়ক আনিসুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে হেয়ার স্ট্রিট থানায় যান। |
অভিযোগকারী বিধায়ক
গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় |
অভিযুক্ত মন্ত্রী
১
বেচারাম মান্না |
অভিযুক্ত মন্ত্রী
২
চন্দ্রনাথ সিংহ |
|
পুলিশ সূত্রের খবর, গৌরাঙ্গবাবু লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর উপর হামলার ঘটনায় তৃণমূলের বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর, পুলক রায়, তপন চট্টোপাধ্যায়, সমীর পাঁজা, চন্দ্রনাথ সিংহ, বেচারাম মান্না এবং মেহমুদা বেগম জড়িত ছিলেন। আর ওই মারধরের ঘটনা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকদের সামনেই ঘটেছিল।
লিখিত অভিযোগের সঙ্গেই হাইকোর্টের রায়ের প্রতিলিপিও পুলিশকে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গৌরাঙ্গবাবু।
সিপিএমের ওই বিধায়ক বলেন, “মারধরের ঘটনার কথা বিধানসভার অধ্যক্ষ এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবকে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও বিচার পাইনি।” যদিও এ বিষয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কী করেছি, না করেছি এখন জানাব না। উপযুক্ত সময়েই বলব। এখন পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। এটা ওদের ব্যাপার।” বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “পুরো ঘটনাটা সাজানো। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” |