দিনভর ধীর গতিতে চলা ভোটের গতি রাতেও বাড়েনি। ভোট যখন শেষ হল, তখন কাক ডাকতে শুরু করেছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর ব্লকের বাসুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সর্বমঙ্গলা ৫৯ নম্বর বুথে ভোট গ্রহণ পর্ব যখন শেষ হল, তখন রাত ৩টা। ভোট বাক্স, নথিপত্র গুছিয়ে ভোট কর্মীদের ব্লক সদরে পৌঁছাতে ভোর ৪টা হয়ে যায় বলে জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী জানিয়েছেন। বিডিও সঞ্জয় হাওলাদারও বলেন, “ওই বুথের প্রিসাইডিং থেকে পোলিং অফিসারেরা শুরু থেকেই ঢিমেতালে কাজ করেছেন বলে শুনেছি। জেলার এই বুথে সবচেয়ে দেরি হয়েছে। আগাগোড়া শান্তিপূর্ণভাবে বুথটিতে ভোট হয়েছে।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই বুথে ভোটার সংখ্যা ১,১১০ জন। ভোট পড়ে প্রায় ৮৪ শতাংশের বেশি।এতটা সময় জুড়ে ভোট নিয়ে সিপিএমের তরফে অবশ্য অভিযোগ করা হয়নি। গঙ্গারামপুরের সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাস বলেন,“দেরি করে ভোট শুরু হলেও আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। এলাকাটি সংখ্যালঘু এবং আদিবাসীর শ্রেণির লোকেদের বসবাস। রমজান মাসের রোজা ভাঙার পর বিকাল ৫টায় অধিকাংশ লাইন দিয়ে স্লিপ নিয়েছেন। আর ভোট কর্মীরা খুব ধীরে ধীরে কাজ করেছেন।” তৃণমূলের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মিত্রের মুখে অবশ্য অন্য সুর। বিপ্লববাবুর অভিযোগ, “পরিকল্পনা করেই ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া ধীরে করা হয়। তৃণমূলের ফল ভাল হবে আঁচ করে ছক কষেই ঢিমেতালে চলার নীতি নেওয়া হয়।” তিনি অভিযোগ করেন, “কো-অর্ডিনেশন এবং জয়েন্ট কাউন্সিলের প্রতি অনুগত একাংশ প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার ধীরে চলো নীতি নিয়েছিল। গভীর রাত পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে একাংশ ভোটার উৎসাহ হারিয়ে ফেলে আর বুথ মুখো হননি।” এভাবে জেলার ১১৫৭টি বুথের মধ্যে অন্তত ৪০০ বুথে রাত ১২টা পর্যন্ত ভোট হয় বলে তৃণমূলের জেলা সভাপতির অভিযোগ। তবে সর্বমঙ্গলা গ্রামের ভোটার আবদুল মিঁয়া বলেন, “সকালের দিকে বুথে গিয়ে দেখি লম্বা লাইন। যেন কমতে চায় না। ধীর গতিতে ভোট হচ্ছে জেনে ফিরে যাই। রোজা করে ফের বুথের লাইনে ভোট যখন দিলাম তখন রাত ১টা।” তাঁদের মতই বিপুল রায়, বারিক মন্ডল ভোটের অধিকার ছাড়তে চাননি। জেলাশাসক বলেন, “১,১০০ ভোটার মানে ত্রিস্তরের ভোটে সেটা হয় ৩,৩০০। ভোট কর্মীরা দক্ষ ছিলেন না বলেই দেরি হয়েছে। তবে অভিযোগ নেই।”
|