শিশু-মৃত্যু, ভাঙচুর হাসপাতালে
চিকিৎসায় গাফিলতিতে এক শিশুমৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাঁধল খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে। ভাঙচুর চলল হাসপাতালের একাংশে। হামলা করা হয় হাসপাতাল সুপারের চেম্বারেও। মৃদু লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।
পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা হলেন খাতড়ার ভারডিহা এলাকার বাসিন্দা দুলাল সাইনি ও বংশী সাইনি। ধৃতদের খাতড়া আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি হাসপাতাল সুপার বার্ণামান টুডু। খাতড়ার এসডিপিও কল্যাণ সিংহরায় বলেন, “এ দিন সকালে মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতিতে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কয়েকজন বাসিন্দা সুপারের ঘরে এবং হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। হাসপাতাল সুপারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” তিনি জানান, মৃত শিশুর পরিবারের তরফে অবশ্য কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ পেলে পুলিশ তদন্ত করবে।
খাতড়ায় ভাঙচুরের পর। —নিজস্ব চিত্র
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে খাতড়ার ভারডিহার বাসিন্দা যুগল সাইনির ১১ দিনের শিশুপুত্রকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘন্টাখানেকের মধ্যে অবস্থা আশঙ্কাজনক বুঝে চিকিৎসক কৌশিক মিশ্র তাকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বলেন। এর কিছু ক্ষণের মধ্যে সকাল ৭টায় ওই শিশুর মৃত্যু হয়। এরপরেই মৃতের পরিজনেরা ও স্থানীয় কিছু বাসিন্দা হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন হাসপাতালের একাংশে এবং সুপারের চেম্বারে ঢুকে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ।
মৃত শিশুর দাদু পেশায় রিকশাচালক নিতাই সাইনির অভিযোগ, “নাতির হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় ওকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু প্রথমে ঘন্টাখানেক ধরে তার কোনও চিকিৎসা করা হয়নি। পরে চিকিৎসক এসে নাতিকে দেখে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু ওর কষ্ট দূর করার জন্য অক্সিজেন দেওয়া হয়নি।” তিনি জানান, গাড়ির বন্দোবস্ত করার আগেই চিকিৎসক তাঁর নাতিকে একটি ইঞ্জেকশন দেন। এর কয়েক মিনিট পরেই শিশুটি মারা যায়। তাঁদের অভিযোগ, চিকিৎসায় গাফিলতির জন্যই ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই শিশু মৃত্যুর পরেই হাসপাতাল চত্বরে মৃতের পরিবারের লোকেরা ও পড়শিরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। চলে ভাঙচুর। খবর পেয়ে খাতড়ার এসডিপিও পুলিশবাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। উত্তেজিত জনতাকে হাসপাতাল চত্বর থেকে সরানোর সময় পুলিশ লাঠি চালায় বলেও অভিযোগ। যদিও এসডিপিও-র দাবি, “পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে বিক্ষোভকারীদের হাসপাতাল চত্বর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাউকে মারধর করা হয়নি।”
চিকিৎসক কৌশিক মিশ্রের সঙ্গে এ দিন বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। হাসপাতাল সুপার বার্ণামান টুডু অবশ্য দাবি করেন, “বাড়ির লোকেরা শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এখানে নিয়ে এসেছিলেন। আমরা সময় মতো ওই শিশুর যথাসাধ্য চিকিৎসার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসকের কোনও গাফিলতি নেই। তা সত্ত্বেও ওরা হাসপাতালের ভিতরে এবং আমার চেম্বারে ঢুকে ভাঙচুর করেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.