অটোর মধ্যে ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার পর তা রুখতে অটোচালকদের সচিত্র পরিচয়পত্র চালু করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট। শুক্রবার এ খবর জানান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ও শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার। আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই এ বিষয়ে পরিবহণ দফতর, অটো মালিক ও চালকদের নিয়ে পুলিশ বৈঠক করবেন বলে স্থির হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীও। এদিন সকালে ওই ছাত্রীটির বাড়িতে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি ছাত্রীটির পরিবারের সঙ্গে কথা বললেও মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেননি তিনি। তিনি জানান মেয়েটি সর্বসমক্ষে কথা বলার মত পরিস্থিতিতে এখনও আসেনি। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি অটো চালকদের সচিত্র পরিচয়পত্র চালু করার ব্যপারে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান। গৌতমবাবু বলেন, “এটি একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা। তবু এ ধরণের ঘটনা কাম্য নয়। শিলিগুড়ি শান্তিপূর্ণ শহর। তবে এরপর থেকে যাতে এ ধরণের ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য আমরা অটোচালকদের সচিত্র পরিচয়পত্র চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” |
ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার প্রতিবাদ। শুক্রবার শিলিগুড়িতে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামনও অটোচালকদের উপরে নজরদারি বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এতদিন অটোচালকদের উপরে আলাদা করে কোনও নজরদারি ছিলনা। এবার থেকে তাঁদেরও কড়া নজরে রাখা হবে। কোনও চালককে মদ্যপ অবস্থায় পাওয়া গেলে তাঁকে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। আমরা এখন থেকে শহরের অটোচালকদের সম্পূর্ণ তথ্য রাখার ব্যবস্থা করব।” পরিবহণ দফতরের সঙ্গে কথা বলে অটো চালকদের এই পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা হবে জানা গিয়েছে। পরিচয়পত্র না থাকলে এরপর থেকে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে বলেও পুলিশ সূত্রের খবর। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিলিগুড়ি সিটি অটো মালিক সংগঠনের সম্পাদক নির্মল সরকার। তিনি বলেন,“নজরদারি থাকাটা ভালই। এতে সবারই ভাল হবে। অপরাধ কমবে। লোকে অটোতে উঠতে ভয় পাবে না।” অটো মালিক চালকদের পক্ষ থেকেও এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, “এতে সবাই নিশ্চিন্ত হতে পারবে। কোনও চালক কোনও অপরাধ করতে সাহস পাবে না।” এদিকে পুরো বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রশাসন যেভাবে উদ্যোগী হয়েছে তাতে খুশি ছাত্রীটির পরিবারে লোকজন। নিগৃহীতা ছাত্রীর বাবা বলেন, “গৌতমবাবু আমাদের বাড়িতে এসেছেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সহানুভূতি দেখিয়েছেন তাতে আমরা খুশি। উনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।” এদিন সন্ধ্যায় ‘জনচেতনা সমিতি’-র ডাকে মোমবাতি জ্বালিয়ে মিছিল করে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় পানিট্যাঙ্কি মোড় থেকে মিছিল বেরিয়ে বিধান রোড, হিলকার্ট রোড হয়ে পানিট্যাঙ্কি মোড়ে শেষ হয়। |