এসজেডিএ দুর্নীতিতে ভুবনেশ্বর থেকে ধৃত আরও দুই ঠিকাদার
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) দায়ের করা প্রায় ৭০ কোটি টাকা দুর্নীতির মামলায় আরও দুজন ঠিকাদার সংস্থার কর্তাকে পুলিশ ভুবনেশ্বর থেকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম অজয় মৈত্র ও তাপস বসু। অজয়বাবু একসময়ে এসএফআইয়ের জেলা স্তরের নেতা ও সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য ছিলেন। পুলিশ তাঁদের দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, একাধিক প্রকল্পে কোনও কাজ না করে ভুয়ো নথিপত্র দাখিল করে কয়েক কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ যে মামলা হয়েছে তাতেই ওই দুজনকে ধরা হয়েছে। শুক্রবার তাঁদের শিলিগুড়ি আদালতে সন্তোষ পাঠকের এজলাসে তোলা হয়।
এসজেডিএ-র দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত তাপস বসু (বাঁ দিকে)ও অজয় মৈত্রকে আদালতে তোলা হচ্ছে।
সরকারি আইনজীবী সুদীপ রায় বসুনিয়া জামিনের আর্জির বিরোধিতা করলে বিচারক দুজনকে ৫ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “এসজেডিএর ঘটনায় ভুবনেশ্বর থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে থাকা আর একজনের খোঁজ চলছে।”
ধৃত দুজনের মধ্যে প্রাক্তন সিপিএম নেতা অজয়বাবু আদালত চত্বরে যাতায়াতের সময়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আমরা যদি দোষী হই, তা হলে এসজেডিএ-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান, চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসারও সমান দোষে দোষী। আমরা কাজ করেছি। তবুও আমাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাক্তন চেয়ারম্যান, সিইওকে ডাকা হোক। তাঁদেরও আনা হোক। তা হলেই সব স্পষ্ট হবে।” প্রসঙ্গত, অজয়বাবুর আইনজীবী তপেশ ভট্টাচার্য আদালতে বেশ কিছু ফটো দেখিয়ে দাবি করেন, প্রকল্পের কাজকর্ম তদারকি করার জন্য এসজেডিএ-এর কর্তারা গিয়েছিলেন। সে ছবিতে এসজেডিএ-এর তৎকালীন চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য ও তদানীন্তন সিইও বর্তমানে মালদহের জেলাশাসক গোদালা কিরণকুমারও রয়েছেন।
ধৃত অজয়বাবুর আইনজীবীর তরফে আদালতে পেশ করা ছবি।
তাঁর সঙ্গে মামলায় আগে ধৃত ইউরেকা ট্রেডার্সে কর্তা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ও সহ অন্যান্যরা রয়েছেন।
পঞ্চায়েত ভোটের পরে ফের মালদহের জেলাশাসককে জেরা করা হতে পারে। শিলিগুড়ির বিধায়ককেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে বলে পুলিশের একটি সূত্রে দাবি করেছে। যদিও বিধায়ক সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি তদন্তের কাজে সহায়তা করতে প্রস্তুত। কিন্তু, প্রাক্তন দুই এসজেডিএ কর্তাকে আড়াল করতে একাধিক প্রভাবশালী গোষ্ঠী তৎপর কি না সেই প্রশ্নে ধৃতদের তরফেই অভিযোগ তোলা হয়েছে। সম্প্রতি একটি ঠিকাদার সংস্থাকে ক্লোজড সার্কিট টিভি ক্যামেরা পাল্টে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া নিয়েও ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। ওই ক্যামেরা বসানোয় যুক্ত ঠিকাদার সংস্থার এক কর্তা এক সময়ে প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষর মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানের এসটিপি ১ ও এসটিপি ২ এর কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে ইউরেকা ট্রেডার্সকে সাহায্য করার জন্য অধিক বাজেটের দরপত্র জমা দেন বলে অভিযোগ। নিউ ইন্ডিয়া কন্সট্রাকশন এর নামে দরপত্র জমা করেছিলেন অজয় বাবু ও তাপসবাবু। এদেঁর সঙ্গে সঞ্জীব ঘোষ নামে আরও এক জন রয়েছেন। বেশি মূল্যের দরপত্র জমা দিয়ে ইউরেকা ট্রেডার্সকে কাজ পাইয়ে দেওয়ায় তাঁদের কাছে থেকে টাকা নিয়েছেন অভিযুক্তরা।অ্যাকশন প্ল্যানের কিছুটা কাজও তাঁরা করেছিলেন। অজিত বন্দোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরেই পালিয়ে যান তিন জন। এবং আগাম জামিনের জন্য দার্জিলিং জেলা আদালতে আবেদন করেছিলেন তাঁরা।
অ্যাকশন প্ল্যানের কাজের জন্য তাঁরা ২ কোটি ৬৫ লক্ষ পেয়েছিলেন। সেই টাকার সমস্ত কাজ তাঁরা করেছেন বলে এ দিন আদালতকে জানান তাঁদের আইনজীবী তপেশ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “যা টাকা দেওয়া হয়েছিল তার সবটাই কাজ করেছেন তাঁরা। এর থেকে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা পরিষেবা কর দিয়েছেন তাঁরা।” তিনি বলেন, “কাজের সময়সীমা ছিল ৬ মাস। কিন্তু তাঁর আগেই কাজ বন্ধ করে দিতে বলে এসজেডিএ।” কাজ দেখতে সেখানে যান সংস্থার প্রাক্তন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য ও প্রাক্তন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক গোদালা কিরণ কুমার।

—নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.