গণনাকেন্দ্রে কোনও রকম কারচুপি ঠেকাতে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) বসানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই কমিশনের তরফে জেলা প্রশাসনগুলিকে এই মর্মে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। গণনাকেন্দ্রের ভিতরে যাতে কোনও অবস্থাতেই আলোর অভাব না হয়, সে জন্য শুরু থেকেই জেনারেটরের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে বলে কমিশন সূত্রের খবর।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব মেটার পরে গণনা অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে করার জন্যে ইতিমধ্যেই কমিশনের উপরে চাপ দিতে শুরু করেছে বিরোধীরা। শুক্রবার বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং বিজেপি তিন দলই পৃথক ভাবে কমিশনের কাছে গণনায় স্বচ্ছতা বজায় রাখার দাবি জানায়। কমিশন সূত্রে বিরোধী দলগুলিকে এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়। কমিশন সূত্রের খবর, গণনা চলার সময়ে গণনাকেন্দ্রে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রতিটি গণনা কেন্দ্রে দ্বিস্তর নিরাপত্তা বলয় রাখা হচ্ছে। গণনাকেন্দ্রে ঢোকার মুখে থাকবে রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা। দ্বিতীয় বেষ্টনীতে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সাধারণ ভাবে গণনা কেন্দ্রপিছু এক সেকশন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা হচ্ছে। তবে স্পর্শকাতর হিসেবে
চিহ্নিত ১০২টি গণনাকেন্দ্রে দুই সেকশন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে গণনাকেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে যাতে কোনও জমায়েত না হয়, সে জন্য ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারিরও ভাবনা রয়েছে কমিশনের।
সোমবার, ২৯ জুলাই ৩২৯টি ব্লকে ভোট গণনা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। প্রথমে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ঠিক করেছিল বরাবরের মতো এ বারেও জেলা পরিষদের নির্বাচন দিয়ে গণনা শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের গণনা হবে। কিন্তু কমিশন প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েতের গণনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পর যথাক্রমে পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের গণনা হবে।
কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, গণনার কাজে লোকের অভাব মেটাতে স্কুল শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছে। এ বারে পঞ্চায়েত ভোটের গণনার জন্য প্রায় ১ লক্ষ কর্মীর প্রয়োজন। রাজ্য সরকার তার অর্ধেক কর্মী দিয়েছে। শুক্রবার কমিশনের সচিব তাপস রায় জানান, “স্কুল শিক্ষকদের কাজে লাগিয়ে গণনা কর্মীর সঙ্কট মিটেছে।”
এ দিন কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়ার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে যায়। বিজেপি-র চার জনের এক প্রতিনিধিদলও এ দিন কমিশনের সচিব তাপস রায়ের সঙ্গে দেখা করেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম গণনাকেন্দ্রে দলীয় এজেন্টদের নিরাপত্তার জন্য নির্বাচন কমিশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “গণনাকেন্দ্রের ভিতরে-বাইরে বিরোধী দলের এজেন্টদের মারধরের পরিকল্পনা আছে শাসক দলের। আমরা জেলা পুলিশ-প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনকে সব তথ্য দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি।” |