ঝুলন্ত এক গৃহবধূর দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাবরা থানার রাজবল্লভপুর ঘোষপাড়ার ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃত ওই গৃহবধূর নাম দীপিকা দাস (২১)। তার বাপের বাড়ি বসিরহাটের স্বরূপনগর থানার বালতি এলাকায়। মৃতের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই গৃহবধূর স্বামী বিশ্বজিৎ দাসের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বারাসত জেলা হাসপাতালে। ঘটনার পর থেকেই স্বামী পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সাতেক আগে বিশ্বজিতের সঙ্গে বিয়ে হয় দীপিকার। তাঁদের ২ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। বধূর বাবা কেরলে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করেন। তবে বিয়েতে শ্বশুরবাড়ি থেকে কোনও পণ নেওয়া হয়নি বলে জানান মৃতের মা সুলেখাদেবী। তিনি বলেন, “আমাদের আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় নাবালিকা অবস্থাতেই মেয়েকে বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। জামাই সম্পর্কে ঠিকমত খোঁজ নেওয়া হয়নি। নিলে মেয়ের এমন পরিণতি হত না।”
বধূর পরিবারের লোকজনদের দাবি, বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যে স্বামীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পারেন দীপিকা। বাপের বাড়ির লোকজনদের সে কথা জানালেও শ্বশুরবাড়িতে তার প্রতিবাদ করতে পারেননি তিনি। সম্প্রতি ওই সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি জানালে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। কারণে-অকারণে তাঁকে মারধর করা হত বলে অভিযোগ। বুধবার দীপিকার এক দেওরের বিয়ের জন্য আশীর্বাদ ছিল। তার মধ্যেই দীপিকা ওই সম্পর্ক নিয়ে পুনরায় প্রশ্ন তোলেন। তারপরই ঘটে এই ঘটনা।
সুলেখাদেবী জানান, মেয়ের মৃত্যুসংবাদ শ্বশুরবাড়ির কেউ দেয়নি। প্রতিবেশী কেউ স্বামীকে কেরলে ফোন করে খবর দেয়। স্বামীই ফোন করে তাঁদের বিষয়টি জানান। বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটে নাগাদ মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে তাঁরা দেখেন, ঘরে ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি লাগানো অবস্থায় ঝুলছে মেয়ে। মছলন্দপুর ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, বধূর মা সুলেখা দাস যে অভিযোগ করেছেন, তাতে বধূ নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে। পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, ময়না তদন্তের রিপোর্টে যদি খুনের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে স্বাভাবিক নিয়মেই খুনের মামলা রুজু করা হবে। তদন্তে যদি অন্য কারও যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে তাহলে বাকিদেরও অভিযুক্তদের তালিকায় যুক্ত করা হবে। |