|
|
|
|
মিড-ডে মিলের নির্দেশিকায় বিতর্ক-ক্ষোভ শিক্ষক মহলে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাঁথি |
মিড-ডে মিলের মান উন্নয়নে রাজ্য সরকার নতুন যে নির্দেশিকা জারি করেছে, তা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে শিক্ষক মহলে। খাবার পরিবেশনের আগে প্রধান শিক্ষকদের পরীক্ষা করে দেখা নিয়েই শুধু নয়, বাসনপত্র ধোওয়া, ফিনাইল-ব্লিচিং রাখার যে নির্দেশ এসেছে, তা নিয়েও। কারণ এর জন্য আলাদা করে কোনও বরাদ্দ হয়নি। এমনিতেই নামমাত্র বরাদ্দে সব্জি, জ্বালানি, তেল-মশলা কিনতে হিমশিম খান স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলো নেওয়ার আগে মিড-ডে মিলে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি তুলেছেন শিক্ষকরা।
বিহারের ছপরা-য় মিড-ডে মিল খেয়ে ২৩ পড়ুয়ার মৃত্যুর পরে নড়েচড়ে বসেছে এ রাজ্যের প্রশাসনও। মিড-ডে মিলের মান নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করতে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে তারা। গত ১৭ জুলাই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার স্কুলগুলিতে সেই নির্দেশ এসে পৌঁছেছে। নির্দেশিকায় এমনও বলা হয়েছে, মিড-ডে মিল পরিবেশনের আগে তা খেয়ে দেখতে হবে প্রধান শিক্ষক বা তাঁর নিয়োজিত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও রাঁধুনীকে। এরপর খাবারের মান নথিভুক্ত করতে হবে। এর জন্য স্কুলগুলিকে ‘ফুড কোয়ালিটি রেজিস্টার’ তৈরি করতে হবে। সঠিক গুণমানের খাবার দেওয়া হচ্ছে কি না দেখার জন্য পরিদশর্কদল স্কুল গিয়ে ওই রেজিস্টার নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখবেন। স্বাস্থ্যকর ভাবে মিড-ডে মিল বানানোর জন্য আরও কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন রান্নাঘরের চালা কেমন হবে, বাসনপত্র কী ভাবে ধুতে হবে ইত্যাদি। যাকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে শিক্ষকমহলে। কাঁথি শহরের কন্টাই টাউন রাখালচন্দ্র বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক নিমর্ল আদক বলেন, ‘‘স্কুলে মিড ডে মিল খাওয়ানোর জন্য ছাত্রছাত্রীদের মাথা পিছু ১০০ গ্রাম করে চাল আর ৩ টাকা ৫৪ পয়সা দেওয়া হয়। ওই টাকাতে সব্জি, ডাল, সর্ষে তেল, নুন-চিনি-হলুদ-লঙ্কা-আদা-পেঁয়াজ সর্বোপরি জ্বালানি কাঠ কিনতে হয়। নতুন নিদের্শিকায় ফর্দে যোগ হবে বাসন ধোওয়ার সাবান, ফিনাইল-ব্লিচিং। সামান্য টাকায় এত কিছু করতে হলে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ দরকার।” নির্মলবাবুর মতে, “সত্যিই যদি খাবার মান ভাল করতে হয়, তা হলে সবার আগে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। শুধু নির্দেশিকা জারি করে বিপদ এড়ানো যাবে না।”
নয়া নির্দেশিকার প্রতিবাদে আন্দোলন করছে শিক্ষক সংগঠনগুলিও। ইতিমধ্যেই বাম প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (প্রাথমিক) কাছে এক ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে বলে সংগঠনের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বেরা জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপকুমার ভৌমিক বলেন, “ছপরা-র ঘটনাটি দুর্ঘটনা মাত্র। তার জন্য প্রধান শিক্ষকদের গিনিপিগ বানানো দুভার্গ্যজনক।” |
|
|
|
|
|