দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
দুর্ভোগের রোজনামচা
একটি যানের জন্য
বেহালা চৌরাস্তায় কোচিং ক্লাসে যায় সরশুনার বাসিন্দা একাদশ শ্রেণির ছাত্র সনৎ রায়। ক্লাস শেষ হয় রাত সাড়ে ৮টায়। বাড়ি থেকে বেহালা চৌরাস্তার দূরত্ব সাড়ে চার কিলোমিটার। এটুকু পথ পেরিয়ে সনতের বাড়ি ফিরতে সাড়ে ১১টা বেজে যায়। শুধু সনৎই নয়, এটাই সরশুনা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতের রোজনামচা।
সরশুনা, ঘোষপাড়া, সূর্যসেন নগর, জুবিলি পার্ক, ময়নাগড়, ডাকঘর, অক্সিটাউন, চ্যাটার্জিপাড়া, সোনামুখী, শিবরামপুর, ষষ্ঠীরমোড়, বটতলা, বসুন্ধরা পার্ক এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধ্যা হলেই রাস্তায় যানবাহন কমে যায়। দীর্ঘ ক্ষণ লাইন দিয়েও বাস বা অটো মেলে না। তখন ট্রেকার ভাড়া করে ফিরতে হয়।
অনেক সময়ে তা-ও না মেলায় হেঁটেই ফিরতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা বনশ্রী মিত্রের কথায়: “সবচেয়ে অসুবিধে হয় মহিলা এবং পড়ুয়াদের। অনেক সময় বেশি ভাড়া দিয়েও চৌরাস্তা থেকে বাড়ি ফেরার গাড়ি পাওয়া যায় না।”
এই এলাকার মধ্য দিয়ে ১৮ডি, ১২সি/১, ১৮সি, ১৮এ/১, ১৮বি/১ রুটের বাস চলাচল করে। সরকারি ৭এ রুটের বাস চলে। এ ছাড়াও রয়েছে বজবজ-বিবাদী বাগ রুটের মিনিবাস। বিভিন্ন রুটে অটোও চলে। তার পরেও নিত্যযাত্রীদের এই দুর্ভোগে পড়তে হয় কেন?
বাসিন্দারা জানান, এমনিতেই সারা দিন খুব কম সংখ্যক বাস চলে। সন্ধ্যার পরে ৭এ-র দেখাই পাওয়া যায় না। বিভিন্ন রুটের অটোও উধাও হয়ে যায়। সারা বছর দুর্ভোগ লেগে থাকে। বর্ষা আর শীতে এই দুর্ভোগ চরমে ওঠে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, “কোনও রুটে নতুন গাড়ির অনুমতি দেওয়াই আমাদের কাজ। এই সব রুটে অনেকগুলি বাস ও মিনিবাস চলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”
বাসিন্দারা জানান, রাতে চৌরাস্তা থেকে বাস পাওয়া গেলেও বাদুরঝোলা অবস্থা হয়। এলাকার নানা রুটের অটোচালকেরা জানালেন, সারা দিন গাড়ি চালানোর পরে অনেক চালকই আর সন্ধ্যার পরে গাড়ি চালাতে চান না। তা ছাড়া চৌরাস্তায় যাত্রী থাকলেও ভিতরের দিকে যাত্রী পাওয়া যায় না। অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। তাই স্ট্যান্ডে ফিরতে সময় লাগে। অনেকে যাত্রী না পেয়ে আর ফেরেন না। ফলে গাড়ির সংখ্যা কমে যায়।
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “এই সব এলাকার সমস্যা আমাদের নজরে রয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে আমরা এই সব রুটে ছোট বাস চালানোর কথা ভাবছি।”

ছবি: অরুণ লোধ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.