দৌড়ের রহস্যভেদই ‘লাইফলাইন’ দিতে পারে বোল্টকে
ডোপিং নয়, উসেইন বোল্টের গতি অত্যাধুনিক বিজ্ঞানেরই ফসল, দাবি মেক্সিকোর এক দল গবেষকের।
জামাইকার তারকা স্প্রিন্টারের নজিরসৃষ্টিকারী ৯.৫৮ সেকেন্ডের দৌড় নিয়ে যাঁরা গবেষণা করছিলেন, তাঁদের অন্যতম প্রধান ডা. জর্জ হার্নান্ডেজের সাফ কথা, “বোল্টের দৌড়ের ট্যাকটিক্সটাই অসাধারণ। শরীরের গতি বাড়ানোর চেয়ে হাওয়ার বাধা অতিক্রম করার টেকনিকের ওপরই বেশি গুরুত্ব দেন তিনি। এই কাজে বোল্ট সারা দুনিয়ায় সবার চেয়ে আলাদা এবং তাই তিনিই দ্রুততম।” বিশেষজ্ঞদের মতে, ডা. হার্নান্ডেজদের এই তত্ত্বই এখন ডোপিং-কলঙ্কের বাইরে থাকার ক্ষেত্রে বোল্টের ‘লাইফলাইন’ হয়ে উঠতে পারে।
মেক্সিকোর ন্যাশনাল অটোনমাস ইউনিভার্সিটি-র বিজ্ঞানীদের এই গবেষণাতেই উন্মোচিত হয়েছে বিশ্বের দ্রুততম মানবের গতির রহস্য। যে কোনও দেশের স্প্রিন্টার ও কোচেদের কাছে যা হয়ে উঠতে পারে এক ঐতিহাসিক দলিল। গবেষণা অনুযায়ী, বোল্ট যেখানে দৌড়ন, সেখানকার আবহাওয়া যদি ভারী হয়, অর্থাৎ সেখানকার বাতাসের আর্দ্রতা ও ঘনত্ব যদি বেশি হয় এবং হাওয়ার গতি যদি বেশি থাকে, তা হলে বোল্টের পক্ষে কাজটা অনেক কঠিন হয়ে যায়। এর অর্থ পৃথিবীটা যদি আরও দূষণমুক্ত হত, তা হলে এমন ৯.৫৮ সেকেন্ডের দৌড় বলে-বলে দৌড়তেন উসেইন বোল্ট। ২০০৯-এ বার্লিনে সে দিন ওই রকমই আবহাওয়া পান বোল্ট।

‘ইউরোপিয়ান জার্নাল অব ফিজিক্স’-এ প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, বার্লিনে বিশ্বরেকর্ড গড়ার দিনে সেখানকার ট্র্যাকের (সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে) উচ্চতায় ও দৌড়ের সময়ের তাপমাত্রায় বোল্টের ছ’ফুট পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতা ও ৯৪ কিলো ওজনের শরীরের যে হাওয়ার বাধা অতিক্রমের ক্ষমতা তৈরি হয়েছিল, তাতেই এমন অমানবিক গতির সৃষ্টি হয়। গবেষকরা অঙ্ক কষে বের করেছেন, ওই সময়ে তাঁর ‘ড্র্যাগ কোএফিসিয়েন্ট’ (বাতাসে ঘর্ষণের বাধা অতিক্রমের সূচক) ছিল ১.২, বায়ুগতিবিদ্যায় যা একজন সাধারণ মানুষের মাত্রার চেয়ে বেশ কম। বোল্ট সে দিন সর্বোচ্চ গতিতে পৌঁছন দৌড় শুরুর ০.৮৯ সেকেন্ড পর। ঘন্টায় ৪৩.৯২ কিলোমিটার গতিবেগে ৪১টি স্টেপে দৌড় শেষ করতে সে দিন ৮১.৫৮ কিলোজুল (শক্তির একক) শক্তি ব্যয় করেছিলেন বোল্ট। এই শক্তির ৯২.২১ শতাংশ ব্যয় হয়েছিল বাতাসের বাধা দূর করতে ও মাত্র ৭.৭৯ শতাংশ শক্তি তিনি খরচ করেছিলেন গতি বাড়ানোর জন্য।
প্রতি দৌড়ে এটাই করে থাকেন বোল্ট। শুক্রবারই লন্ডন গ্রাঁ প্রি-তে তাঁর দৌড়ও এই গবেষকদের নজরে থাকছে। কারণ, তাঁদের কাজ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। দৌড়ের সময় হাওয়ার গতিবেগে বদল বোল্ট কী ভাবে সামলান, এই রহস্যেরও সমাধান করতে চান তাঁরা। অন্য জনাকয়েক তারকা স্প্রিন্টারের সাম্প্রতিক ডোপিং বিতর্ক নিয়ে দুশ্চিন্তা বোল্টের ফর্মে প্রভাব ফেলে কি না, সেটাও দেখার। লন্ডনে পা রাখতেই অবশ্য ব্রিটিশ মিডিয়া এই নিয়ে প্রশ্নবাণে প্রায় ঝাঁঝরা করে দিয়েছে তাঁকে। বোল্টের জবাব, “(আসাফা) পাওয়েল, (টাইসন) গে-দের কথা বলতে পারব না, তবে আমি জানি, আমি দোষী নই। অনেক কিছু প্রমাণ হওয়ার বাকি আছে। এখন অপেক্ষা ছাড়া কোনও উপায় নেই।”

বোল্টের শরীর: উচ্চতা ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি, ওজন: ৯৪ কেজি দৌড়ের সময় বাতাসে ঘর্ষণের বাধা অতিক্রমের সূচক: ১.২ সর্বোচ্চ গতি: দৌড় শুরুর ০.৮৯ সেকেন্ড পরে, ঘণ্টায় যা দাঁড়ায় ৪৩.৯২ কিমি মোট পদক্ষেপের সংখ্যা: ৪১ দৌড় শেষ করতে শক্তি ব্যয়: ৮১.৫৮ কিলোজুল। যার ৯২.২১ শতাংশ বাতাসের বাধা দূর করতে ও মাত্র ৭.৭৯ শতাংশ গতি বাড়াতে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.