ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো
সহযোগিতা মিলছে না রাজ্যের: অধীর
ত্তাবাদে জমি জটিলতায় আটকে আছে কাজ। অন্য দিকে হাওড়ায় গঙ্গার তলা দিয়ে টানেল বোরিং মেশিন উপরে বেরিয়ে কোথা দিয়ে যাবে, তা ঠিক না হওয়ায় সেখানেও চার মাস কাজ বন্ধ। ইস্ট-ওয়েস্ট মেটোর কাজে এই দুই সমস্যাতেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগের আঙুল তুললেন কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। তাঁর আরও অভিযোগ, রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাবে ব্যারাকপুর, দক্ষিণেশ্বর, বারাসত-সহ বিভিন্ন দিকে মেট্রো সম্প্রসারণের পরিকল্পনা থাকলেও দত্তাবাদের মতোই জমি জটে প্রকল্প আটকে যেতে পারে।
শুক্রবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রেলের কাজ সরেজমিন দেখতে গিয়ে তাই রাজ্য সরকারের কাছে সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন রেল প্রতিমন্ত্রী। এ দিন দুপুর সওয়া তিনটের নাগাদ অধীর চৌধুরী ওই কাজ পরিদর্শনে হাজির হন সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের উইপ্রো মোড় স্টেশনে। আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তিনি মেট্রো স্টেশন ঘুরে দেখেন। আলোচনা করেন মেট্রোর কর্মকর্তাদের সঙ্গেও।
কর্মকর্তারা তাঁকে জানান, দত্তাবাদে জমি জটিলতায় কাজ আটকে রয়েছে। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের স্থায়ী ও অস্থায়ী পুনর্বাসনের জন্য ২৬০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট-সহ সামগ্রিক পরিকল্পনাও তৈরি করেছে মেট্রো। রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতর একটি জমিও দিয়েছে। এমনকী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা কমাতে নকশা বদল করা হয়েছে।
রেলওয়ে টেবল টেনিস টুর্নামেন্টের সূচনায় রেল
প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র
দত্তাবাদে জমির জটিলতা কোথায়? মেট্রোকর্তারা মন্ত্রীকে জানান, জমির মালিকানা, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে বলে জানান তাঁরা। যদিও কিছু মাস আগেই রাজারহাট-নিউ টাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের উপস্থিতিতে বাসিন্দাদের বিক্ষোভে দত্তাবাদে সমীক্ষার কাজ বন্ধ রেখে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন রাজ্য সরকার ও মেট্রোর প্রতিনিধিরা। সে প্রসঙ্গ উঠতেই রেল প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মেট্রো চার দিকে বাড়ছে। আরও ৮৫ কিলোমিটার বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। দক্ষিণেশ্বর, ব্যারাকপুর, বারাসত-সহ বিভিন্ন দিকে মেট্রো যাবে। কিন্তু সেখানেও দত্তাবাদের মতো জমি জটিলতা দেখা দিতে পারে। রাজ্য সরকার সহযোগিতা না করলে মেট্রো সম্প্রসারণ করা সম্ভব হবে না।”
অধীরবাবু বলেন, “দত্তাবাদ গলার কাঁটা হয়ে রয়েছে। আমরা চাইছি অন্তত প্রথম পর্যায়ে শিয়ালদহ পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা চালু হোক। ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ। স্বভূমিতে বিধায়ক তৃণমূলের পরেশ পালের চেষ্টায় মেট্রোর কাজ শেষ করা গিয়েছে। এ ভাবে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা পেলেই দ্রুত কাজ শেষ করা যাবে।” তিনি আরও বলেন, “সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টও এই মেট্রোর কাজে একটি জটিলতার ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার জমি-জট কাটাতে উদ্যোগী হলে প্রকল্পগুলি দ্রুত এগোবে।”
এর পরে সুভাষ সরোবরে মেট্রো রেলের অধিকর্তা এইচ কে শর্মা-সহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে রেল প্রতিমন্ত্রী চলে যান হাওড়া ময়দানে মেট্রোর কাজ দেখতে। প্রায় পঁচিশ মিনিট ধরে সেখানকার কাজ খতিয়ে দেখেন তিনি।
হাওড়ায় চার মাস কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। অধীরবাবু বলেন, “রাজ্য সরকার সহযোগিতা করছে না। তাই কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। কারণ, গঙ্গার নীচে দু’টি টানেল বোরিং মেশিন বসানো হবে, সেই দু’টি ওপারে বেরিয়ে কোথা দিয়ে যাবে, জমির কী হবে, তা নিয়ে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ করছে না। নির্মাণকারী সংস্থা নতুন নকশায় কাজ করতে রাজি হয়েছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও জমি না পাওয়ায় কোনও ভাবেই কাজ এগোতে পারছে না। গঙ্গার নীচ দিয়ে সুড়ঙ্গ কাটার কাজও হচ্ছে না।”
রেল প্রতিমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার চাইছে মহাকরণে একটি স্টেশন হবে। মেট্রো সেখান দিয়ে যাবে। সেখানে পেট্রোল পাম্প ও দোকান রয়েছে। সেগুলি না তুললে, জমি না পেলে কাজ করা যাচ্ছে না। রাজ্য সরকারও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অধীরবাবুর বক্তব্য, “আমরা চাইছিলাম পুরনো নকশাতেই কাজ হোক, তাতে গতি আসবে। কিন্তু তা না হওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে আছে।”
মেট্রোর নতুন প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে অর্থও একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ। অর্থের জোগানের দিকটি নিশ্চিত করতে মেট্রোর কর্মকর্তারাও এ দিন বারবার অধীরবাবুকে অনুরোধ করেন। অধীরবাবু বলেন, “টাকা কোনও সমস্যা নয়। আমরা বাজেটে একশো কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলাম। আরও চারশো কোটি টাকা প্রয়োজন। তার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। সে কারণে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের কাছে প্রস্তাবও পাঠানো হবে। কিন্তু জমি জট কাটাতে আমরা রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চাইছি, কিন্তু সব সময়ে তা পাচ্ছি না।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.