ইংরেজ দেশ ছেড়েছে অনেক দিন। কিন্তু ব্রিটিশ রাজের যোগাযোগ আনুষ্ঠানিক হলেও কিছু ক্ষেত্রে থেকে গিয়েছে কলকাতার বুকে। যেমন, সিইএসসি। অবশেষে নাড়ির সেই সূক্ষ্ম টানও এ বার ছেঁড়ার পথে। লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ (এলএসই) থেকে নাম তুলে নিতে চলেছে সিইএসসি।
শুক্রবার সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভায় শোয়ারহোল্ডারদের সম্মতি নিয়ে এলএসই-র সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক চুকিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সিইএসসি। চেয়ারম্যান সঞ্জীব গোয়েন্কা জানান, কবে এই নথিভুক্তি হয়েছিল, তা মনে নেই তাঁরও। তবে লন্ডনের ওই বাজারে সংস্থার শেয়ার কেনা-বেচা এখন খুব কম। তাই খরচ বাঁচাতেই সেখান থেকে সরে আসার এই সিদ্ধান্ত। সংস্থা সূত্রে খবর, বর্তমানে সিইএসসি-র ৪০ হাজার শেয়ারহোল্ডারের মধ্যে মাত্র ২০০ জন রয়েছেন ব্রিটেনে। তাই অহেতুক সেখানে জড়িয়ে থেকে টাকা গোনার কোনও কারণ দেখেননি সংস্থা কর্তৃপক্ষ।
১৮৯৭ সালে যাত্রা শুরু আদ্যোপান্ত ব্রিটিশ সংস্থা ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশনের। ১৮৯৯-এ প্রিন্সেপ ঘাটে প্রথম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। ১৯৩৩-এ ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসে উঠে আসে সংস্থার সদর দফতর। গোড়ার দিকে পরিচালন পর্ষদের সদস্য থেকে শুরু করে পদস্থ কর্তা সকলেই ছিলেন ব্রিটিশ। ভারতীয় উপস্থিতি ভাবাই যেত না। কিন্তু ১৯৮৯ সালে সেই সংস্থা কিনে নেন আরপিজি গোষ্ঠীর প্রয়াত কর্ণধার রমা প্রসাদ গোয়েন্কা। সংস্থার নাম হয় সিইএসসি। তার পর থেকে ব্রিটেনের সঙ্গে নাড়ির টান বলতে ছিল এলএসই-র সঙ্গে যোগসূত্রটুকুই।
এ দিনের সভায় আগামী কয়েক বছরে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাবে বিদ্যুৎ শিল্প। গোয়েন্কার মতে, বিদ্যুতের মতো বড় লগ্নির শিল্পের জন্য নীতির ধারবাহিকতা জরুরি। বাস্তবের জমিতে দাঁড়িয়ে সেই নীতিই প্রয়োজন, যা রোজ বদলাবে না। বরং এই শিল্পকে দাঁড় করিয়ে দেবে শক্ত ভিতের উপর। |