নদী ভরেছে কচুরিপানায়। নৌকা আটকে যাওয়ায় মাছ ধরতে সমস্যায় পড়ছেন মৎস্যজীবীরা। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নাদনঘাট থেকে কালনা ১ ব্লকের হাতিপোতা গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে খড়ি নদীর দশা এমনই। শুক্রবার সকালে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এলাকায় এলে তাঁকে সমস্যার কথা জানান মৎসজীবীরা। স্বপনবাবু জেলাশাসককে বিষয়টি জানান। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
বহু বছর ধরে কালনা মহকুমার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে খড়ি নদী। নদীর পাড়ে রয়েছে রামেশ্বরপুর, দুপসা, খাঁপুর, আসাননগর, আশ্রমপাড়া, ধোবা, মানিকহার, হাতিপোতা, মির্জাপুরের মত বেশ কয়েকটি গ্রাম। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নদী লাগোয়া গ্রামগুলিতে আটশোরও বেশি পরিবার মৎস্যজীবী। তাঁরা গভীর রাত থেকে মাছ ধরা শুরু করে সকালে কাছাকাছি আড়তে বিক্রি করেন। মৎস্যজীবীরা জানান, মাস খানেক আগে থেকে সমস্যা শুরু হয়। নদী কচুরিপানায় ভরে যায়। আটকে যেতে থাকে নৌকা। সপ্তাহ দু’য়েক আগে একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় মাছ ধরা। আশ্রমপাড়ার মৎসজীবী সুধীর হালদার হলেন, “নদীতে ক্রমশ কচুরিপানা বাড়ছে। এই মুহূর্তে বেশির ভাগ মৎসজীবীই কাজ হারিয়ে বাড়িতে বসে। জানি না কবে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।” আসাননগর গ্রামের মৎসজীবী বিকাশ হালদারের কথায়, “এ বার এখনও পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় নদীর জলে তেমন স্রোত নেই। ফলে কচুরিপানা একই জায়গায় বাড়ছে।” শুধুমাত্র মাছ ধরার কাজই নয়, নদীর এক পাড় থেকে অন্য পাড়ে যাতায়াতেও হচ্ছে অসুবিধা। নৌকায় করে স্কুলে যাওয়া বা বাজার করার মতো দৈনন্দিন কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। |
শুক্রবার সকালে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের হেমায়েতপুর মোড় থেকে কালনা শহরে ফিরছিলেন স্বপনবাবু। পথে আসাননগর গ্রামের বাসিন্দারা খড়ি নদীর কচুরিপানার সমস্যার কথা জানান তাঁকে। নান্দাই ব্রিজ-সহ নানা জায়গা ঘুরে দেখেন তিনি। এর পর নান্দাই পঞ্চায়েতের প্রধান ঈদের আলি মোল্লা-সহ বেশ কিছু লোকজনকে ফোন করে ডাকেন। আসাননগর গ্রামে বেশ কিছুটা এলাকার কচুরিপানা বাঁশ দিয়ে সরিয়ে একটি ঘাট তৈরি করা হয়। পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “খড়ি নদী মিলেছে ভাগীরথীতে। একমাত্র অতিরিক্ত জল ছেড়ে কচুরিপানা ভাসিয়ে ভাগীরথীতে ফেলতে পারলে সমস্যার সমাধান হবে। বিষয়টি স্বপনবাবুকে জানিয়েছি।” স্বপনবাবু জানান, কচুরিপানা যাতে দ্রুত সরানো যায়, সে ব্যাপারে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। ডিভিসি ক্যানালে জল ছেড়ে নদীর কচুরিপানা দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জেলাশাসক দ্রুত বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। |