অনেক দিনের ‘দুর্জয় ঘাঁটি’ জামুড়িয়াতেও প্যাঁচে সিপিএম
ত বিধানসভা ভোটে একে একে সব আসনে যখন সবুজ নিশান উড়তে শুরু করেছে, সেই ভরাডুবির মধ্যেও জামুড়িয়ায় দুর্গ অক্ষত রেখেছিল বামেরা। আসানসোল মহকুমায় একমাত্র এই আসনেই অটুট ছিল লালদুর্গ। কিন্তু এ বার পঞ্চায়েত ভোটে সেই জামুড়িয়াতেও বামেরা বেশ বেকায়দায়।
গত পঞ্চায়েত ভোটে জামুড়িয়ার দশটি পঞ্চায়েতের সব ক’টিতেই ক্ষমতা দখল করেছিল বামেরা। তার মধ্যে মদনতোড়, পরাশিয়া, দোবরানা, তপসি, কেন্দা এবং চুরুলিয়াএই ছ’টি পঞ্চায়েত দখল করেছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। চিঁচুড়িয়ায় একটি ছাড়া দশটি পঞ্চায়েতের আর কোথাও কোনও আসনে জেতেনি তৃণমূল। ২০১১ সালে যখন ৪৯ বছরের লালদুর্গ রানিগঞ্জও তৃণমূল দখল করছে, জামুড়িয়ায় প্রায় তেরো হাজার ভোটে জিতছেন সিপিএম প্রার্থী। কিন্তু দু’বছরের মধ্যে সেই জামুড়িয়াতেও পাল্টে গিয়েছে পরিস্থিতি।
এ বার পঞ্চায়েত ভোটে জামুড়িয়ার দশটি পঞ্চায়েতের মধ্যে কেন্দা ও শ্যামলা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছে তৃণমূল। চিঁচুড়িয়াতেও প্রার্থী দিতে পারেনি বামেরা। সেখানে তৃণমূলের লড়াই হচ্ছে দলেরই বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থীদের সঙ্গে। দশটি পঞ্চায়েত মিলিয়ে মোট ২২টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। গত বার যেখানে ৪৯টি আসনে সিপিএম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল, সেখানে তারা এ বার ৩০টি আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি। তৃণমূলের সঙ্গে নির্দলের (‘বিক্ষুব্ধ তৃণমূল’) সরাসরি লড়াই হচ্ছে মোট ৪৩টি আসনে।
তৃণমূলের জামুড়িয়া ২ ব্লক সভাপতি তাপস চক্রবর্তীর দাবি, সিপিএমকে মদত দিচ্ছে নির্দলেরা। তাতেও অবশ্য বিরোধীরা সুবিধা করতে পারবে না বলে তাঁর দাবি। তবে সিপিএমের অজয় জোনাল সম্পাদক মনোজ দত্ত বলেন, “পুরোপুরি নেতিবাচক ফলের কথা ভাবছি না। বেশ কিছু জায়গায় আমরা সন্ত্রাসের মোকাবিলা করেছি। এখন গণনার দিকে তাকিয়ে আছি।”
রানিগঞ্জে এ বার পঞ্চায়েত স্তরে ৭৪টির মধ্যে ২০টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। ১৯৮৩ সাল থেকে আমরাসোতা পঞ্চায়েত ছিল সিপিএমের দখলে। এ বার সেই পঞ্চায়েত দখলের লড়াইয়ে নেমেছে তৃণমূল। এগারা পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনের মধ্যে ১২টিতে তৃণমূল ছাড়া কেউ প্রার্থী দিতে পারেনি। এ ছাড়া তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল দখল করছে। রানিগঞ্জ ব্লকে পঞ্চায়েত স্তরের ৩৫টি আসনে তৃণমূলের সঙ্গে কোথাও কংগ্রেস, কোথাও সিপিএম, আবার কোথাও বা বিজেপি-র সরাসরি লড়াই হচ্ছে।
তৃণমূলের রানিগঞ্জ ব্লক সভাপতি সেনাপতি মণ্ডল জানান, ২০০৮ সালে তৃণমূল তিনটি এবং কংগ্রেস মাত্র দু’টি আসনে জিতেছিল। সিপিএমের সন্ত্রাসে কোথাও ভোটই হয়নি বলে তাঁর দাবি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ায় তাঁরাই এ বার পঞ্চায়েতগুলিতে ক্ষমতায় আসবেন বলে তাঁর দাবি। তাঁর আরও বক্তব্য, “আমরা মহাজোটের সঙ্গে লড়াই করছি। তিরাটে চারটি আসনে কংগ্রেস ও বল্লভপুরে দু’টি আসনে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে। সেখানে সিপিএম প্রার্থী দেয়নি। আবার এমন ২৯টি আসন আছে যেখানে সিপিএম প্রার্থী দিলেও অন্য কোনও দল প্রার্থী দেয়নি। এর থেকেই স্পষ্ট, আমাদের বিরুদ্ধে জোট হয়েছে।”
কংগ্রেসের রানিগঞ্জ ব্লক সভাপতি অনল মুখোপাধ্যায় যদিও জানান, কোনও দলের সঙ্গে তাঁদের কোনও আঁতাত হয়নি। সাংগঠনিক দুর্বলতার জন্যই অনেক আসনে প্রার্থী দিতে পারেননি বলে তাঁর দাবি। সিপিএমের রানিগঞ্জ জোনাল সম্পাদক রুনু দত্তের আবার অভিযোগ, “৩৬টি বুথ থেকে আমাদের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। ছাপ্পা, রিগিং ও সন্ত্রাসের পরিবেশে ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে।” সে জন্যই ভাল ফলের আশা বিশেষ করছেন না, দাবি তাঁর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.