রোজার মাসে মহিলারা যাতে ভোর ৫টা-সাড়ে ৫টার মধ্যে পৌঁছে যান বুথে, তা নিশ্চিত করতে কাকভোরে বেরিয়ে পড়েছিলেন দীপা দাশমুন্সি। হলও তা-ই। ভোট শুরুর আগেই ইসলামপুরের বুথে বুথে লম্বা লাইন মেয়েদের। নিশ্চিন্ত দীপা ভোট দেওয়ার পর্ব সেরে মাখন-পাউরুটি-আধসেদ্ধ ডিম দিয়ে প্রাতরাশ করলেন ইসলামপুর পৌর আবাসে। তারপর খোঁজ নিলেন জেলার নানা প্রান্তের।
গত পঞ্চায়েত ভোটেও ইসলামপুর চষে বেড়িয়েছিলেন দীপা। বললেন, “গত বার কিষাণগঞ্জের গেস্ট হাউসে বসে প্রিয়দা ভোটটা সামলেছিলেন। এ বার যেটা আমি করছি।” কাজটা সহজ নয়। তৃণমূল আর বাম কৌশল ধূলিসাৎ করে উত্তর দিনাজপুরের জেলা পরিষদ দখলে রাখা। স্থানীয় প্রশাসন দখলে থাকলে তার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রূপায়ণ করে লোকসভার ভোটে সমর্থন পাওয়ার পথ পরিষ্কার হবে। |
ভোটের লাইনে দীপা দাশমুন্সি। ইসলামপুরে। ছবি: তরুণ দেবনাথ। |
স্ট্র্যাটেজিও তৈরি ছিল। কাল রাতে ইসলামপুরে ছিলেন। ভোরেই স্নান সেরে লাল-হলুদ পাড়ের সাদা খোলের ইক্কত তাঁত শাড়িতে তাঁর চেনা সাজে দীপা বেরিয়ে পড়েন। ভোট শুরুর আগেই চক্কর দেন চোপড়ায়। সেখান থেকে কানকীতে, নিজের ভাড়া বাড়িতে। সঙ্গী শুধু চালক দীপক পাসোয়ান। ফোনে খবর এল, পাশেই সুঁইয়া-র বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই। চকিতে কানকী থানার আইসি-কে দীপার অনুরোধ, “ভোটটা শেষ হওয়ার আগে ফোর্স পাঠাবেন তো!” কর্মীদের নাগাড়ে আশ্বাস দিলেন, মাথা ঠান্ডা রাখতেও বললেন। ফোন কানে নিয়েই ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লেন, ১০৩৫ ক্রমিক নম্বরের ভোটার স্লিপ হাতে। ভোট দিয়ে ৪২ কিলোমিটার পেরিয়ে ইসলামপুরের পৌর আবাসে থিতু হলেন রায়গঞ্জের সাংসদ। এই তাঁর কন্ট্রোল রুম। সেখানে বসেই সামলালেন সব কিছু। বললেন, “রোজার মাসে ভোর সাড়ে ৫টার মধ্যে মহিলা ভোটারদের বুথের লাইনে যেতে বলেছি। এ বার ৫০% আসনে মহিলা থাকায় মহিলাদের মধ্যে ভোট দেওয়ার উৎসাহও বেশি। সেটাকেই কাজে লাগিয়েছি।” বিকেল ৫টার পরে দীপা বেরিয়ে পড়েন ইসলামপুরের নানা অঞ্চলে। কেমন ভোট হল, সরেজমিনে দেখতে। |