হাতি-হানার আতঙ্কের মধ্যেই ভোট রাভাবস্তিতে
ব্দবাজি নিষিদ্ধ। তবু বিস্তর খোঁজখবর করে দু’প্যাকেট শব্দবাজি কিনতে হয়েছে খাস প্রিসাইডিং অফিসারকেই।
বুধবার রাতেও যে জলপাইগুড়ির কুমারগ্রাম রায়ডাক গ্রাম পঞ্চায়েতের ছিপড়া রাভা বস্তিতে দাপিয়ে বেড়িয়েছে বুনো হাতি। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের মধ্যেই এই এলাকায় যখন তখন ওই হাতির হামলার ভয় নিয়েই বাস করেন মানুষ। ভোটের দিনও তার ব্যতিক্রম নয়। বৃহস্পতিবার তাই সারা দিনই ছিপড়া রাভা বস্তি ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সুশান্ত চক্রবর্তী জানলার দিকে নজর রেখেছেন। বারবার নিজেই উঠে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখেছেন। লোক মারফত খবর নিয়েছেন, কোথাও কোনও হাতি নজরে পড়ছে কি না। সুশান্তবাবুর বাড়ি জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি শহরে। জঙ্গলের মধ্যে রাভাবস্তিতে এসে ভয়ে সিঁটিয়ে ছিলেন তিনি। ভোটকর্মীদের মধ্যে এক জন শৈলেন রায় কেবল জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় থাকেন। হাতি হানা যে কী ভয়ঙ্কর, তা তিনি বিলক্ষণ জানেন।
সুশান্তবাবু বলেন, “বারবিশা থেকে আসার সময়ে ছয় কিলোমিটার নাড়ারথলি জঙ্গল পেরিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় রাভাবস্তিতে পৌঁছেছি। আসার আগে খোঁজাখুঁজি করে দু’প্যাকেট শব্দবাজিও কিনে এনেছি। হাতি এলে সামলাতে হবে তো! হাতির ভয়ে বুধবার সারা রাত ঘুমোতে পারিনি।” ওই শব্দবাজি ছাড়া আর তাঁর ভরসা বলতে ছিলেন দু’জন পুলিশকর্মী ও এক জন বনকর্মী। হাতি আসার আঁচ পেলেই যে বনকর্মী মোবাইলে কন্ট্রোলরুমে জানাবেন। তারপরে সেখান থেকে জিপে করে আসবেন আরও বনকর্মী ও কুনকি হাতি। তবে কন্ট্রোলরুমটি ১২ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ রায়ডাকে। তত ক্ষণে অবশ্য বুনো হাতি অনেক গণ্ডগোলই পাকিয়ে দিতে পারে।
তাই সুশান্তবাবু একা নন। রাভা বস্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্রে নিযুক্ত ৮ ভোটকর্মীর কেউই সারা রাত ঘুমোননি। বুধবার পৌঁছনোর পরেই যে তাঁরা খবর পেয়েছিলেন, ওই এলাকায় প্রায় রোজই হাতির হামলা হয়। যে স্কুলভবনে বুথ হয়েছে, সেখানেই মাস খানেক আগে একটি ঘর ভেঙে চাল খেয়ে গিয়েছে হাতির দল। শুধু তাই নয়, কিছু ক্ষণ আগেও বুনো হাতি দাপিয়ে বেড়িয়েছে। আবার যে কোনও সময়ে যে ফিরে আসবে না, তার নিশ্চয়তা নেই। ভোটকর্মী প্রদীপ পোদ্দার বলেন, “এই সব খবর শোনার পরে রাতে আর ঘুম হয় বলুন?”
কুমারগ্রামের বিডিও শিলাদিত্য চক্রবর্তী জানান, হাতির ভয় ছিল বলেই বন দফতরের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের সাউথ রায়ডাক রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার উৎপল দত্ত বলেন, “ভোট গ্রহণে যাতে কোন বিঘ্ন না ঘটে, সে জন্য ভোটকেন্দ্রের আশেপাশে বনকর্মীরা সকাল থেকে টহল দিয়েছেন।” তবু হাতি বলে কথা। তাই ভয় যায়নি। এই কেন্দ্রে তিন প্রার্থী আরএসপি-র দারাসিংহ রাভা, সিপিএমের জয়চরন রাভা ও তৃণমূলের জেং রাভাও হাতির ভয় নিয়ে এক মত। দারাসিংহ রাভা বলেন, “হাতির ভয় স্থানীয় বাসিন্দাদেরও ছিল। আমরা এখানে রোজ ওই ভয় সঙ্গে নিয়েই ঘুমোতে যাই, ঘুম থেকে উঠি।” সে কারণেই দিনের আলো থাকতে থাকতেই বেশিরভাগ ভোট পড়ে গিয়েছে। স্থানীয় মানুষও ঝুঁকি নিতে চাননি। দুপুরের মধ্যেই ভোট চুকে গিয়েছে এখানে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.