|
|
|
|
বিতর্কে টেবল টেনিস |
ক্রীড়ামন্ত্রীর কমিটি ভেঙে দিল সর্বভারতীয় সংস্থা
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বাংলার খেলার ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে গেল বৃহস্পতিবার!
ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রর তৈরি করে দেওয়া ‘অবৈধ’ রাজ্য টেবল টেনিস সংস্থার কমিটি ভেঙে দিল সর্বভারতীয় ফেডারেশন।
কোন কমিটি? যে কমিটির মাথায় প্রেসিডেন্ট হিসাবে ছিলেন লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়! প্রেসিডেন্ট হিসাবে যিনি নিজেও কয়েক দিন আগে একটি কমিটি তৈরি করেছেন বলে খবর।
সোমনাথবাবুর গোষ্ঠী এবং বিপক্ষ সচিব হেমেন ভট্টাচার্য গোষ্ঠীর বক্তব্য শোনার পর সর্বভারতীয় সংস্থার কর্তারা এতটাই ক্ষুব্ধ যে, এ দিন চিঠি দিয়ে তাঁরা নির্দেশ দিয়েছেন, যে ভাবে বাংলার টিটি-র কমিটি তৈরি হয়েছে তা অবৈধ। অবসরপ্রাপ্ত কোনও সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের বিচারপতিকে দিয়ে নতুন করে নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে করতে হবে সেই নির্বাচন। সর্বভারতীয় টিটি সংস্থার সেক্রেটারি জেনারেল ধনরাজ চৌধুরি ওই নির্দেশের চিঠিতে লিখেছেন, পুরনো কমিটিই নির্বাচন পরিচালনা করবে। প্রকৃত বৈধ ভোটাররাই যাতে ভোট দেন তা নিশ্চিত করতে হবে।
সর্বভারতীয় সংস্থার নজিরবিহীন নির্দেশ শুনে কী বলছেন সোমনাথবাবু? “আমি আর ও-সব ঝামেলার মধ্যে নেই। সর্বভারতীয় সংস্থা কী নির্দেশ দিয়েছে জানি না। ইন্টারেস্টেডও নই। যা বলার সচিবকে বলে দিয়েছি,” বিরক্তির সুরে বলে দিলেন প্রাক্তন সাংসদ।
কী বলছেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র? ৯ জুন সংস্থার বার্ষিক সভায় নিয়ম ভেঙে ঢুকে যিনি সোমনাথবাবুকে প্রেসিডেন্ট করে দিয়েছিলেন! “আমাকে বিরিয়ানি খেতে ডেকেছিল বলে সভায় গিয়েছিলাম। আমি কাউকে প্রেসিডেন্ট করিনি। সব ওরাই করেছে। টিটিএফআই কী বলেছে তা নিয়ে মন্তব্য করব না,” বললেন ক্রীড়ামন্ত্রী।
সর্বভারতীয় টিটি সংস্থার নির্দেশের পর হেমেন ভট্টাচার্য গোষ্ঠীর লোকেরা উল্লসিত। নামী কোচ এবং নির্বাচন কমিটির সদস্য তপন চন্দ বললেন, “সত্যের জয় হয়েছে। আমিও দিল্লি গিয়েছিলাম অভিযোগ জানাতে। ড্রইংরুম থেকে সংস্থা চালানোটা বন্ধ করতে চাই।’’ প্রাক্তন ফুটবলার এবং যিনি সোমনাথবাবুর ‘পরিবর্তন’ চেয়ে মাঠে নেমেছিলেন সেই সুব্রত ভট্টাচার্য বললেন, “অবৈধ ভাবে একটা কমিটি তৈরি হয়েছিল। যারা কোনও কাজ করত না। শুধু নিজেদের স্বার্থ দেখত। সেটা বন্ধ করা গেল।”
এমনিতেই রাজ্য টিটি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জীর্ণ। তিনটে ভাগ। সর্বভারতীয় সংস্থা অরূপ বসাক, পৌলমী ঘটক, মৌমা দাসদের খেলার জন্য যে রাজ্য কমিটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে তা নিয়ে ঝামেলা চলছে বহু দিন ধরে। সোমনাথবাবুকে সামনে রেখে তাঁর জামাই দেবপ্রসাদ বসুর কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ জমছিল বেশি। সংস্থার নির্বাচনে তাই প্রেসিডেন্ট পদে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে আনতে চেয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী। সুব্রতবাবুকে সমর্থন করেছিল প্রায় সব জেলা। সে জন্য প্রেসিডেন্ট পদে আর কেউ মনোনয়ন দেননি। কিন্তু নির্বাচনের দিন দেখা যায় অন্য চিত্র। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর অভিযোগ, সুব্রতবাবুর অনুপস্থিতিতে সভায় ঢুকে ক্রীড়ামন্ত্রী জোর করে প্রেসিডেন্ট করে দেন সোমনাথবাবুকে। যিনি নমিনেশনই দেননি। পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয় পুরো নির্বাচন কেন্দ্র। তা নিয়ে দিল্লিতে দরবার করতে শুরু করেন বিক্ষুব্ধরা। শেষ পর্যন্ত তাঁরা সফল। |
|
|
|
|
|