|
|
|
|
আজ দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচ: কমপ্লিট ব্যাটসম্যান, বলছেন কোচ রবিন |
‘রায়ডুর এই সাফল্যে সচিনই আসল লোক’
রাজীব ঘোষ • কলকাতা |
হারারে স্পোর্টস ক্লাবের মাঠে বিরাট কোহলির সঙ্গে ১৫৯ রানের যুগলবন্দিতে ভারতকে ম্যাচ জিতিয়ে উঠে যখন সাংবাদিকদের সামনে এসে রায়ডু বললেন, “থ্যাঙ্কস টু সচিন অ্যান্ড রবিন সিংহ”, তখন সুদূর নিউ ইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রে টিমকে তালিম দিতে ব্যস্ত তিনি, রবিন সিংহ, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলে রায়ডুর কোচ।
তাই দেখা হয়নি তাঁর অন্যতম প্রিয় ছাত্রের ৬৩-র অপরাজিত ইনিংস। তবে সাংবাদিক বৈঠকে যে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভোলেননি রায়ডু, সে খবর পেতে দেরি হয়নি তাঁর। বৃহস্পতিবার ফোনে যখন আনন্দবাজারকে বলছিলেন, “ওর মতো জেন্টলম্যান ক্রিকেটারের কাছ থেকে এটাই আশা করেছিলাম”, তখন তাঁর কন্ঠে তৃপ্তির সুর।
![](26khela4-2.jpg) |
রবিন |
কোহলির অনবদ্য সেঞ্চুরি নিয়ে তো হইচই। কিন্তু এই যে বিরাট-সেঞ্চুরিতে প্রায় ঢাকা পড়ছে রায়ডুর দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস, তা মনঃপুত নয় রবিনের। তাঁর পূর্বাভাস, “এই ছেলেটা ধারাবাহিক ভাবে সুযোগ পেলে ভারত কিন্তু ধবন, রোহিত, পুজারা, রাহানেদের মতো আরও এক বড় ব্যাটসম্যান পাবে। মিলিয়ে নেবেন আমার কথা।” শুক্রবার যখন হারারে স্পোর্টস ক্লাবে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে নামবে ভারতীয় দল, তখন ২৭ বছর বয়সি এই হায়দরাবাদিকেই নজরে রাখার পরামর্শ দিলেন রবিন। “দেখুন হয়তো ফের একটা ধমাকা করে দিতে পারে ও।”
কিন্তু রবিনের আফসোস, রায়ডুর ইনিংসটা দেখতে পেলেন না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বললেন, “পরে ভিডিওটা জোগাড় করে বা ইউটিউবে ঠিক দেখে নেব। তবে রায়ডুর আগেই ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়া উচিত ছিল। এমন এক কমপ্লিট ব্যাটসম্যান ভারতীয় দলে খুব দরকার। দেখলেন তো, সুযোগ পেয়েই কেমন বাজিমাত করল।” কী সেই ফর্মুলা, যা নিয়ে এমন বাজিমাত করলেন রায়ডু? তাঁর আইপিএল কোচের মতে, “প্রায় এক যুগ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা এবং সব রকম বলের বিরুদ্ধে ভাল খেলতে পারার গুণ, দুইয়ের ব্লেন্ড। শট বাছাইয়েও ওস্তাদ।”
তাঁর এই প্রতিভার জন্যই মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলে সচিন তেন্ডুলকরের খুব প্রিয় ছিলেন রায়ডু, জানালেন রবিনই। বললেন, “আইপিএলের সময় সচিন ওকে বলত, ‘তুই নিজের ব্যাটিং আর আত্মবিশ্বাসটাকে ঠিক জায়গায় রাখ। ভারতীয় দলে ডাক পাওয়ার জন্য এই ব্যাটিংই যথেষ্ট।’ আমিও একই কথা বলতাম ওকে। সচিনের মতো কিংবদন্তি এমন উৎসাহ দিলে তো চাঙ্গা হবেই। তা ছাড়া এত ভাল ছাত্র ও যে, সিনিয়র ও কোচেদের পরামর্শ দ্রুত মাথায় ঢুকিয়ে নিতে পারে। তা ছাড়া খুব ভদ্রও। একেবারে ‘কোচেস চয়েস’।” |
![](26khela4-1.jpg)
রায়ডু |
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পা রাখা ২০০২-এ। এগারো বছর পর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন। ২০০৪-এ বাংলাদেশে জুনিয়র বিশ্বকাপে যে দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি, সেই দলের সদস্য রবিন উত্থাপা, শিখর ধবন, সুরেশ রায়না, দীনেশ কার্তিকরা তাঁকে পিছনে ফেলে বেশ এগিয়ে গেলেও রায়ডু কেন পারলেন না? রবিনের ব্যাখ্যা, “ও প্রতিভাবান। ক্রিকেটের ভাল ছাত্র ঠিকই, তবে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার দিক থেকে বাকিদের চেয়ে দুর্বল। এটাই ওর সমস্যা। পিক আপের জন্য সময়টা বেশি নেয় বলতে পারেন। তা ছাড়া যে সময় ও টপ ফর্মে ছিল, তখন ভারতীয় দলে ‘এক সে বড়কর এক’ দুর্ধর্ষ ক্রিকেটার। তাদের দলের বাইরে রেখে তো আর রায়ডুর মতো অভিজ্ঞতাহীন ক্রিকেটারকে দলে আনা যায় না। দু’বছর আইসিএলে খেলতে গিয়েও নিজের বারোটা বাজাতে বসেছিল। এখন ও ইন্ডিয়া টিমে সুযোগ পেতেই পারে।”
তবে এখনও দেরি হয়ে যায়নি বলে মনে করেন রবিন। আজহার, লক্ষ্মণের শহরের ব্যাটসম্যানের ভবিষ্যত সম্পর্কে বললেন, “সব ঠিকঠাক চললে রায়ডু অনেক বছর ভারতীয় দলের হয়ে খেলতে পারে। পরের বিশ্বকাপে তো বটেই, তার পরেও অনেক দিন ওকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেখার আশায় আছি। ও যে রকম ব্যাটসম্যান, তাতে ওয়ান ডে ফর্ম্যাটেই বেশি মানানসই হবে।” |
|
|
![](http://archives.anandabazar.com/newimages/blank.gif) |
|
|