ট্রেন-দুষ্কৃতীকে ধরতে থানায় থানায় ছবি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কার হামলার মুখে তিনি দিল্লি-হাওড়া জনতা এক্সপ্রেস থেকে ঝাঁপ দিতে বাধ্য হন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার চেহারার বিবরণ দিয়েছিলেন তরুণী। সেই বিবরণ অনুযায়ী দুষ্কৃতীর আঁকানো ছবি বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে। হাওড়ার রেল পুলিশ সুপার মিলনকান্ত দাস বলেন, “ছবিটি সব জিআরপি থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দেওয়া হয়েছে সিআইডি-কেও।” ওই ছবির সাহায্যেই দুষ্কৃতীকে ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ।
|
তরুণীর বয়ান শুনে
আঁকা দুষ্কৃতীর ছবি। |
আসানসোলের বাসিন্দা ওই তরুণী তাঁর কর্মক্ষেত্র কলকাতায় আসার জন্য রবিবার দিল্লি-হাওড়া জনতা এক্সপ্রেসের মহিলা কামরায় উঠেছিলেন। তরুণীর অভিযোগ, ব্যান্ডেল স্টেশনে কামরা খালি হয়ে যাওয়ার পরে লুঙ্গি ও জামা পরা এক দুষ্কৃতী তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। আতঙ্কিত ওই তরুণী ট্রেনের গরাদহীন আপৎকালীন জানলা দিয়ে বেলুড় প্ল্যাটফর্মে ঝাঁপ দেন। মাথায় ও হাতে গুরুতর আঘাত লাগে। প্রথমে তাঁকে বেলুড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পরে ওই তরুণীকে ভর্তি করানো হয় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। এখনও তিনি ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন বলে তাঁর দাদা জানান। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তরুণী ক্রমশ সেরে উঠছেন।
ঘটনার পাঁচ দিনেও ওই দুষ্কৃতীকে ধরা গেল না কেন?
হাওড়ার রেল পুলিশ সুপার জানান, দুষ্কৃতী ঠিক কোন স্টেশন থেকে মহিলা কামরায় উঠেছিল, সেটা নিশ্চিত ভাবে জানতে না-পারায় অসুবিধা হচ্ছে। যুবকটি কখন কোথায় কী ভাবে মহিলাদের কামরায় উঠল, তরুণীর সঙ্গে কথা বলা সত্ত্বেও তা স্পষ্ট হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদে ওই তরুণী জানান, শ্রীরামপুরে তিনি দুষ্কৃতীকে তাঁর সামনের আসনে এসে বসতে দেখেন। সে তাঁর নাম জানতে চায়। তরুণী তাঁর প্রশ্নের জবাব না-দিয়ে মোবাইলে বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। দুষ্কৃতী রেগে গিয়ে তাঁর উপরে হামলা চালায়। কেড়ে নেয় তাঁর মোবাইল। কিন্তু কোন স্টেশন থেকে ওই দুষ্কৃতী ট্রেনে উঠেছিল, তরুণী সেটা পুলিশকে জানাতে পারেননি। রেল পুলিশ সুপার বলেন, “ওই তথ্য জানতে পারলে তদন্তে সুবিধা হত।”
পুলিশকর্তা জানান, তরুণীর মোবাইলটিরও সন্ধান মেলেনি। ট্রেন হাওড়ায় পৌঁছনোর পরে মহিলাদের কামরাতেই তরুণীর ব্যাগটি পাওয়া যায়। তা থেকে কিছুই খোয়া যায়নি। এর থেকে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীর চুরির উদ্দেশ্য ছিল না। তবে তরুণীর মোবাইল ফোনটি সে-ই নিয়ে গিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ওই মোবাইলের নম্বরে ফোন করে সাড়া মিলছে না।
এই অবস্থায় দুষ্কৃতীকে ধরার জন্য তরুণীর বর্ণনা শুনে আঁকা ছবিটিই পুলিশের বড় ভরসা। |